দীর্ঘ ২ বছর পর বগুড়া সোনাতলায় বন্ধুর হাতে বন্ধু খুনের আসামী গ্রেফতার করলো পিবিআই

Uncategorized আইন ও আদালত

নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ দীর্ঘ ২ (দুই) বছর পর বগুড়া জেলার সোনাতলা থানার ঠাকুর পাড়া এলাকার বহুল আলোচিত মোবাইল সীম এজেন্ট সুমন হত্যাকান্ডের মামলার রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত আসামীকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই, বগুড়া।

মামলার ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামী দীর্ঘ ২ (দুই) বছর পলাতক থাকা অবস্থায় মোঃ মারুফুল ইসলাম@ শাহ্ (২৮), পিতা- মৃত নজিবুর রহমান, সাং ঠাকুরপাড়া, থানা-সোনাতলা, জেলা-বগুড়াকে ৮ মে ১১টা ৪০ মিনিটের সময় গাজিপুর মেট্রোপলিটন এর সদর থানাধীন পশ্চিম চতর গ্রাম হইতে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলার বাদি মেঃ জাহাঙ্গীর আলম বাদশা (৬২), পিতা-ডাক্তার মৃত আব্দুস সামান, গ্রাম- ঠাকুর পাড়া থানা- সোনাতলা, জেলা বগুড়া গত ১২ এপ্রিল ২০২০ সালে বগুড়া সোনাতলা থানায় হাজির হয়ে মাসুদ রানা (২২), পিতা- আলহাজ্ব মোঃ মোজাহার আলী প্রামানিক, সাং ঠাকুরপাড়া, থানা-সোনাতলা, জেলা-বগুড়া সহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন আসামীদের বিরুদ্ধে এই মর্মে এজাহার দায়ের করেন যে, বাদীর ছেলে পারভেজ ইসলাম সুমন এয়ারটেল কোম্পানীর মোবাইল সিমের এজেন্ট হিসাবে ব্যবসা করত। সেই সূত্রে আসামী মোঃ মাসুদ রানা সেলম্যান হিসাবে বাদীর ছেলের সাথে থেকে এয়ারটেল কোম্পানীর মোবাইল সিম বিভিন্ন বাজারে বিক্রয় করত। ডিনিস্ট পারভেজ ইসলাম সুমন এর সাথে সিম বিক্রয়ের টাকার জের হিসাবে আসামী মাসুদ রানা সহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন বাদীর ছেলেকে হত্যা করে।

বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোনাতলা থানার মামলা নং-৩৯, তারিখ-১২/০৪/২০২০ ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড বৃহু হয়। মামলাটি প্রথমে সোনাতলা থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং তদন্ত চলাকালীন সময়ে বিজ্ঞ আদালত স্ব-প্রনোদিত হয়ে পিবিআই, বগুড়াকে তদন্ত করার নির্দেশ প্রদান করলে আদালতের নির্দেশে উক্ত মামলাটি পিবিআই, বগুড়া জেলা প্রাপ্ত হয়ে তদন্ত শুরু করে।

অতিরিক্ত আইজিপি, পিবিআই বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই, বগুড়া জেলার পুলিশ সুপার মোঃ আকরামুল হোসেন এর সার্বিক সহযোগীতায় মামলাটি তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ জাহিদ হোসেন মন্ডল মামলাটি তদন্ত শুরু করেন।
তদন্তকালে মামলার ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত মেঃ মারুফুল ইসলাম পাপ্পু (২৮), পিতা- মৃত নজিবুর রহমান, সাং-ঠাকুরপাড়া, থানা-সোনাতলা, জেলা বগুড়াকে গত ৮ মে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে গাজিপুর মেট্রোপলিটন এর সদর থানাধীন পশ্চিম চতর গ্রাম হইতে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি উক্ত ঘটনা সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করেন।

পরবর্তীতে ৯ মে আদালতে আসামীকে সোপর্দ করে পুলিশ হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করা হলে বিজ্ঞ আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ড শেষে গ্রেফতারকৃত আসামীকে গত ১১ মে, আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামী নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে আদালতে ফৌঃ কাঃ কি ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে এবং অন্যান্য সহযোগী আসামীদের নাম প্রকাশ করেছে।

এ প্রসঙ্গে পিবিআই বগুড়া জেলার পুলিশ সুপার মোঃ আকরামুল হোসেন জানান, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড।

তিনি আরো জানান যে, ডিসিস্ট সুমন এর সহিত আসামিদের মধ্যে পাওনা টাকার বিরোধের কারণে গত ৯ এপ্রিল -২০২০ সালে সকল আসামিগন করমজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে ডিসিস্ট সুমনকে হত্যা করার জন্য ষড়যন্ত্র করে এবং আসামি মারুফুল ইসলাম পামুকে সকল আসামিরা গত ১১ এপ্রিল -২০২০ সালে ডিসিস্ট সুমন কে ঘটনাস্থলে ডেকে আনার জন্য বলে। কারন আসামি মারুফুল ইসলামও পাস্তুর সাথে ডিসিস্ট সুমনের সম্পর্ক ভাল ছিল।

সেই মোতাবেক আসামি মারুফুল ইসলাম পাপ্পু ডিসিস্ট সুমনকে গত ১১ এপ্রিল ২০২০ নুপুর অনুমান ১টার সময় তার বাসা থেকে ডেকে মটর সাইকেল যোগে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায়।

উল্লেখিত স্থানে পূর্ব থেকে আসামি মাসুদ, রিপন, আলিফ, তারাহুল,রাজিব এবং মুহূরল অবস্থান করিতেছিল। সকল আসামি ডিসিস্ট সুমন এর সহিত পাওনা টাকা নিয়ে তর্ক বিতর্কের একপর্যায়ে আসামিগন ডিসিস্ট সুমন কে পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যা করার জন্য আসামি রাজিবের কাছে থাকা বার্মিজ চাকু বের করে মাসুদকে দিলে মাসুদ উক্ত চাকু দিয়ে ভিসিট সুমন কে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করে।
মামলাটি তদন্তাধীন। পলাতক অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।


বিজ্ঞাপন