“বৈশাখী পূর্ণিমা তথা বুদ্ধপূর্ণিমা”

Uncategorized অন্যান্য

বিশেষ প্রতিবেদক ঃ গতকাল রবিবার ১৫ মে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব গৌতম বুদ্ধের জন্মোৎসব শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা। গৌতম বুদ্ধের শুভজন্ম, বোধিজ্ঞান ও মহাপরিনির্বাণ লাভ এই ত্রি-স্মৃতিবিজড়িত বৈশাখী পূর্ণিমা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছে এটি বুদ্ধ পূর্ণিমা নামে পরিচিত। বুদ্ধ পূর্ণিমা বিশ্বে বৌদ্ধদের বৃহত্তম ধর্মীয় ও জাতীয় উৎসব। আড়াই হাজার বছর আগে এই দিনে মহামতি গৌতম বুদ্ধ আবির্ভূত হয়েছিলেন। বুদ্ধের জন্ম, বোধিলাভ ও মহাপ্রয়াণ বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে হয়েছিল বলে বৈশাখী পূর্ণিমার অপর নাম দেয়া হয় ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’। যথাযথ ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে বৌদ্ধ সম্প্রদায় আজ এ প্রধান ধর্মীয় উৎসব উদ্যাপনের লক্ষ্যে নানা কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। বিশ্ব শান্তি কামনায় প্রদীপ প্রজ্জলন ও সমবেত প্রার্থনা শেষে বর্ণাঢ্য বৌদ্ধ ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

বুদ্ধ মহাকারুনিক মৈত্রী প্রেম ও অহিংসার মূর্ত প্রতীক।বিশ্বের তাবৎ প্রাণী প্রজাতির মুক্তিই হলো বুদ্ধের ধর্ম দর্শনের মর্মবানী।
স্যার এডউইন আর্ণল্ড ১৮৭৯ সালে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থে বুদ্ধকে লাইট অব এশিয়া বা এশিয়ার আলো বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।

১৯৯৯ সালে বিশ্বের তাবৎ রাষ্ট্রের মিলনসভা জাতিসংঘ বুদ্ধের জন্ম জয়ন্তীকে “ভেসাক ডে” আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে। এই “ভেসাক ডে” এখন বাংলাদেশের অনেক জায়গায় মহাসমারোহে পালিত হচ্ছে।

স্যার এডউইন আর্ণল্ড লাইট অব এশিয়া বইয়ের প্রকাশিত গ্রন্থ থেকে মিলিয়ন মিলিয়ন লোক বুদ্ধ সম্পর্কে অবহিত হন। ঐ শতকে আর্ণল্ডের দেশ যুক্তরাজ্য হয়ে উঠে
বুদ্ধের ভাষা পালি নিয়ে গবেষণা,অনুশীলন,প্রচার ও প্রকাশনার আন্তর্জাতিক এজেন্ট।
থমাস উইলিয়াম রিস ডেবিটস ও তার সহধর্মিণীর উদ্যোগে লন্ডনে স্থাপিত হয় পালি টেক্স সোসাইটি। সেই সংস্থা থেকে প্রকাশিত হতে থাকে বুদ্ধের নীতি শিক্ষা ও দর্শনের উপর পালি থেকে ইংরেজি ভাষায় অনুদিত গ্রন্থাবলী। এক পর্যায়ে পূর্ব এশিয়া ছাড়িয়ে আমেরিকা অষ্ট্রেলিয়া ও কানাডায় পৌঁছে যায় বুদ্ধের ধর্ম ও দর্শন।

জাতিসংঘ সদর দপ্তর নিউইয়র্কে বুদ্ধের ত্রি-স্মৃতিবিজরিত দিবস ”ভেসাক ডে” পালিত হয়ে আসছে। জাতিসংঘ সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের নিজস্ব পতাকা ও বৌদ্ধ ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। বাংলাদেশে ও ধর্মীয় পরিবেশে “ভেসাক ডে” পালিত হচ্ছে।

পরিশেষে আজকের বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে একটি কথাই বলতে চাই, আসুন জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে এক কাতারে সামিল হয়ে অশান্ত এই বিশ্বে মানব কল্যানের শপথ নিই। বৈশ্বিক মহামারী সহ যাবতীয় দুর্যোগ থেকে পৃথিবী রক্ষা পাওয়ার প্রার্থনা করি। জগতের সকল প্রাণীর সুখ সমৃদ্ধি ও শান্তি কামনায় প্রার্থনা করি।সকলকে শুভ বৈশাখী পূর্ণিমা তথা বুদ্ধ পূর্ণিমার মৈত্রীময় শুভেচ্ছা জানাই। জগতের সকল প্রাণী সুখী হউক।


বিজ্ঞাপন