বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন, স্কুলের আয়া পদে ৭ লাখ টাকা দিয়েও রেশমার হয়নি চাকুরী!

Uncategorized অপরাধ

সুমন হোসেন, ( যশোর ) ঃ
যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আয়া পদে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে ৭ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ একই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির বিরুদ্ধে। ৯ শতক জমি বিক্রি, ধান ও গাছ বিক্রি করে টাকা জোগাড় করেন বনগ্রামের রেশমা বেগম। রেশমা বেগমের অভিযোগ, ৭ লাখ টাকা নিয়েও তাকে আয়া পদের চাকুরি টি দেওয়া হয়নি।

জানা গেছে, উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক ৪ টি পদে নিয়োগ বিঙ্গপ্তি প্রকাশ করা হয়। পদ গুলো হলো, অফিস সহকারী, নিরাপত্তা কর্মী, আয়া পদে ও পরিছন্ন কর্মী পদে মোট ৪ জন কে নিয়োগ দেওয়া হবে।
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আয়া পদে আবেদন করেন বনগ্রামের দিনমজুর মাহাবুর রহমানের স্ত্রী রেশমা খাতুন।

বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির অবৈধভাবে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে অর্থ আত্মসাৎ’র অভিযোগে গ্রামবাসীর পক্ষে সোমবার বিকালে স্কুলের মাঠের সামনের রাস্তায় মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী।

এ সময় মানববন্ধনে বক্তারা প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন।

এই ব্যাপারে রেশমা খাতুন বলেন, বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আয়া পদে আমাকে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল কাশেম মোড়ল ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম সাথে ৮ লাখ টাকার মৌখিক চুক্তি হয়। তার মধ্যে ৭ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। প্রথম দিন ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে সন্ধ্যায় নেন। তার ১০ দিন পর ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং শেষ দিন স্থানীয় কাটাখালী মসজিদের মধ্যে তিন লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।
টাকা গ্রহনের সময় স্কুলের সভাপতি ও কমিটির লোকজন ছিলেন। শেষ দিন টাকা দেওয়ার সময় প্রধান শিক্ষক মুঠোফোনে সম্মতি দেন।

পরে জানতে পারলাম সাড়ে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে আয়া পদে লিমা নামের একজন নারীর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের সবটুকু জমি, গরু, গাছ ও স্বর্ণালংকার বিক্রি করে টাকা দিয়েছি। এখন তারা বলছে আমার চাকুরী হবে না। আমি প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম বলেন, আমি কারোর নিকট থেকে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে কোনো টাকা নেই নি। তবে, সভাপতি নিয়েছে কি না বলতে পারবো না।

সরেজমিনে বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও প্রেমবাগ ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম মোড়লের সাথে মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। এরপর তার বাড়িতে গেলেও, তাকে পাওয়া যাই নি। তার স্ত্রী নুর জাহান বেগম বলেন, আমার স্বামী কাউকে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে কোনো টাকা-পয়সা নেয় নি। তিনি ব্যাক্তিগত কাজে মাঠে গিয়েছেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, এই ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। তবে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে, অবশ্যই বিধি মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম শামিম হাসান জানান, এই বিষয়ে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেন নি। অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *