নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ ‘ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ক রক্ত দিয়ে লেখা। এই সম্পর্ক ভাইয়ে ভাইয়ের। সীমান্ত দিয়ে দুই বাংলার যে সম্পর্ক, তা বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। এটা বারবার প্রমাণিত হয়েছে।’ বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শতবর্ষ এবং ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে গতকাল রবিবার ২৪ জুলাই, কলকাতার বেঙ্গল ক্লাবে আয়োজিত ‘গোল টেবিল’ বৈঠকে শেষে এই মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার অক্লান্ত প্রচেষ্টা এবং সাহসী পদক্ষেপের কারণেই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে মৈত্রী, বন্ধুত্বের সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে।
ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী সংঘ আয়োজিত এই গোল টেবিল বৈঠকে তিনি বলেন, ‘সৌরভ গাঙ্গুলীর ডাকে সমস্ত প্রোটোকল ভেঙে প্রধানমন্ত্রী কয়েক বছর আগে ইডেনে ভারত-বাংলাদেশ টেস্টে খেলা দেখতে এসেছিলেন।’
এ সময় একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধের সময় ভারত যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে সেই অবদানের কথাও উত্থাপন করেন তিনি। ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, ‘কারও সঙ্গে আমাদের বৈরীতা নেই, শত্রুতাও নেই। আমরা চাই সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, আমরা গভীর বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে চাই। সেক্ষেত্রে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের গভীরতা কতটা সেটা বোধহয় মেপে শেষ করা যাবে না। আমরা বিশ্বাস করি, সেই সম্পর্ক দিনে দিনে আরও সুদৃঢ় হবে শক্ত হবে, অসীম উচ্চতায় পৌঁছবে।’
বাংলাদেশে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগে অভিযুক্ত পিকে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সরকার বা দলের তরফ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে কি না সে ব্যাপারে নাছিম বলেন, ‘যা হয়েছে, যা হচ্ছে, ক্ষমতাসীন দল সঠিকভাবে তার দায়িত্ব পালন করছে। অপেক্ষা করুন কী হয়! ধরা পড়েছে, আগামী দিনে আরও অনেক কিছু হবে।’
এদিকে গত মাসেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হয়। সেক্ষেত্রে আশা করা হয়েছিল এই সেতু হয়ে কলকাতা তথা ভারতে প্রবেশের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি পর্যটকদের সময় কমবে, হয়রানির মাত্রাও কমবে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে উল্টো। মাত্র ৬ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যেই পদ্মা সেতু পার হলেও বাংলাদেশি পর্যটকদের কলকাতায় আসার ক্ষেত্রে ভারতীয় দিকের হরিদাসপুর স্থল সীমান্তে প্রায় ছয় ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। ফলে পদ্মা সেতুর সুফল মিলছে না বলেই অভিমত যাত্রীদের। তাদের অভিযোগ- কাস্টমস এবং ইমিগ্রেশন এর অব্যবস্থাপনার জন্যই এই বিলম্বতা।
দুদেশের সমাজের বিশিষ্টজনরা যেখানে বার বার বলছেন মানুষে মানুষে যোগাযোগ বৃদ্ধি, কানেক্টিভিটি বৃদ্ধির কথা। সেখানে সীমান্তে এই দীর্ঘ সময় প্রতীক্ষার কারণে সেই যোগাযোগ বৃদ্ধি কি কোথাও ব্যাহত হচ্ছে? এদিন সেই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বক্তাদের।
আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ছাড়াও এদিন আলোচকদের মধ্যে ছিলেন সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি শিশির বাজোরিয়া, কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস প্রমুখ।