বঙ্গবন্ধু আমাদের প্রেরণার উৎস-বাহাউদ্দিন নাছিম

Uncategorized অন্যান্য

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের প্রেরণার উৎস। কলকাতায় বেকার হোস্টেলে সাধারণ জীবন যাপন করে মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে তিনি নিজেকে যেভাবে প্রস্তুত করেছেন, কঠোর পরিশ্রম করেছেন, বাংলার মানুষের আত্ম অধিকারের স্বপ্ন দেখেছেন তা আমাদের অনুপ্রেরণা যোগায়।

মঙ্গলবার ২৬ জুলাই, সকালে কলকাতায় ৮নং স্মিথ লেন-এ অবস্থিত বেকার হোস্টেলের তিন তলায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ মূর্তিতে তিনি শ্রদ্ধার্ঘ জানান এবং বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত বেকার হোস্টেলের ২৪ নম্বর কক্ষ “বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কক্ষ” ঘুরে দেখেন। বেকার হোস্টেল পরিদর্শন শেষে অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি এ কথা বলেন।

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন বঙ্গবন্ধু ছিলেন মহান নেতা, বিশাল ব্যক্তিত্বের অধিকারী। সাধারণ পরিবেশে রাজনীতি করে তিনি বাঙালির ভাগ্য বিধাতায় পরিণত হয়েছেন। বাঙালি জাতির স্বাধীনতার স্বপ্নের বীজ এখানেই বপন হয়েছিলো, যার যৌক্তিক পরিণতিতে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমাদের সবার আরো অনেক জানার আছে, গবেষণার আছে। বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শন আমাদের অনুপ্রাণিত করে।

প্রসঙ্গত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪২ থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত তৎকালীন ইসলামিয়া কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন, যার বর্তমান নাম মৌলানা আজাদ কলেজ। তিনি ১৯৪৪ সালে কলকাতার ইসলামিয়া কলেজ থেকে আইএ ও ১৯৪৭ সালে বিএ পাস করেন। সেসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেকার হোস্টেলের তৃতীয় তলায় উত্তর-পশ্চিম কর্নারের ২৪ নম্বর কক্ষে অবস্থান করছিলেন। পাশের ইসলামিয়া কলেজে পড়ার সূত্রে কক্ষটিতে থাকতেন শেখ মুজিবুর রহমান। ব্রিটিশ শাসনামলের শেষ দিকে বেকার হোস্টেলের ২৪ নম্বর কক্ষটি ছিল কলকাতায় মুসলিম ছাত্র আন্দোলনের সূতিকাগার। তাঁর নেতৃত্বে, পরামর্শে তৈরি হতো আন্দোলনের রূপরেখা।

১৯৯৮ সালে ২৩ ও ২৪ নাম্বার কক্ষকে একত্রিত করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানে ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতিকক্ষ’ তৈরি করে। ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি এ কক্ষের সম্মুখে তার আবক্ষ ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ৩ আগস্ট ভাস্কর্য নতুন করে প্রতিস্থাপন হয়।

এই কক্ষের দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর গৌরবময় অধ্যায়ের ছবি, টেবিলে রাখা পেইন্টিং আর বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় মুদ্রিত গ্রন্থে দর্শনার্থীরা জানতে পারছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির কীর্তি।

সেখানে প্রবেশের আগে বাঁ দিকের দেয়ালে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান/জীবন ও কারাজীবন’ শিরোনামে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি। কক্ষের ভেতরে প্রবেশ করতেই সামনে দেখা যাবে বঙ্গবন্ধুর একটি ভাস্কর্য। বাঁ পাশে ২৩ নম্বর কক্ষ। সেটি ভেতর থেকে যুক্ত করা হয়েছে ২৪ নম্বরের সঙ্গে। কক্ষের পূর্ব দিকের দেয়াল বরাবর বঙ্গবন্ধুর শোবার খাট, পাশে পড়ার টেবিল ও চেয়ার। টেবিলের ওপর বঙ্গবন্ধুর তরুণ বয়সের একটি প্রতিকৃতি রাখা হয়েছে। পূর্ব পাশের দেয়াল ঘেঁষে বড় খোলা জানালার পাশে ছাত্রাবস্থার একটি ছবি, দরজার দিকের দেয়ালে ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে একটি ছবি টাঙিয়ে রাখা হয়েছে। টেবিলে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা সহ তাঁর জীবন ও কর্ম সম্পর্কিত একাধিক বাংলা ও ইংরেজি গ্রন্থ। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনকেন্দ্রিক বিভিন্ন সময়ের বেশ কিছু দুর্লভ ছবি এই স্মৃতিকক্ষের দেয়ালে স্থান পেয়েছে। হোস্টেলে প্রায় ২০০ রুম রয়েছে। হোস্টেলটি ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯১০ সালে এডওয়ার্ড নরম্যান বেকার প্রতিষ্ঠা করেন। এটি সরকারি ছাত্রাবাস।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেকার হোস্টেলে অবস্থানকালে হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সঙ্গে অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে রাজনীতির পাঠ নিয়েছেন। তিনি ১৯৪৬ সালে ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *