“যশোরের দুঃখ ভবদহ প্রকল্প” জলাবদ্ধতা নিরসনে আমডাঙা খাল সংস্কার ও টিআরএম করার দাবিতে পানি নিষ্কাষন সংগ্রাম কমিটির পদযাত্রা

Uncategorized জাতীয়

সুমন হোসেন, (যশোর) ঃ
যশোরের দুঃখ কবলিত ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা স্থায়ী নিরসনে অবিলম্বে আমডাঙ্গা খাল সংস্কার ও বিল কপালিয়ায় টিআরএম (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট) বাস্তবায়নের দাবিতে সমস্যার সমাধানের জন্য ছয় দফা দাবি জানিয়েছে ভবদহ পানিনিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি।

শনিবার সকালে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া বাজার থেকে আমডাঙ্গা খাল পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার রাস্তা পদযাত্রা করেছে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দ সহ ভুক্তভোগী জলাবদ্ধ এলাকার বিভিন্ন পেশার মানুষ। এসময়ে পদযাত্রা উদ্বোধন করেন নওয়াপাড়া ইনস্টিটিউটের সাধারন সম্পাদক ফারুক হোসেন।

তাদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকার সেচ প্রকল্প এবং প্রস্তাবিত প্রায় ৪৫ কোটি টাকার ‘ভবদহ ও তৎসংলগ্ন বিল এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ’ প্রকল্প বাতিল। বিল কপালিয়ায় টিআরএম (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট) চালু। আমডাঙা খাল সংস্কারকাজ দ্রুত করা।
প্রি—ওয়ার্ক ও পোস্ট ওয়ার্ক জনসমক্ষে টাঙিয়ে দেওয়া। কাজের স্বচ্ছতা নিরূপণে আন্দোলনকারী সংগঠন, জনপ্রতিনিধি ও সেনাবাহিনীকে সংশ্লিষ্ট করে তদারকি কমিটি গঠন।

খালের স্লুইসগেট ওঠানো—নামানোর কাজ বন্ধ করার সঙ্গে জড়িত পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ।

জনপদের ফসল, বাড়িঘরসহ অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা, কৃষি ঋণ মওকুফ ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
এবং সরকারকে মিথ্যা তথ্য প্রদান, নদী হত্যা, বসতবাড়ি ও জানমালের ক্ষয়ক্ষতির সঙ্গে জড়িত পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ।

শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া ইনস্টিটিউটের মাঠে জলাবদ্ধ ভবদহ অঞ্চলের পাঁচ শতাধিক নারী—পুরষ সববেত হন।

এরপর সকাল পৌনে ১২টার দিকে সেখান থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। যশোর—খুলনা মহাসড়ক দিয়ে পদযাত্রাটি উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের আলীপুর এলাকায় আমডাঙ্গা খালের দিকে যেতে থাকে।

পদযাত্রা অংশগ্রহণকারীদের হাতে ‘অবিলম্বে আমডাঙ্গা খাল সংস্কার চাই’, ‘বিল কপালিয়ায় টিআরএম চালু করো’, ‘৪৫ কোটি টাকার সেচ প্রকল্প বাতিল কর ’,‘নদী বাঁচাও, দেশ বাঁচাও’ প্রভৃতি শ্লোগান লেখা ব্যানার ও প্লাকার্ড ছিল। প্রায় ছয় কিলোমিটার অতিক্রম করে দুপুর একটার দিকে পদযাত্রাটি আমডাঙ্গা খালের পাড়ে গিয়ে পৌঁছায়।

এ সময় সেখানে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রনজিত বাওয়ালী।

এ সভায় বক্তব্য রাখেন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী আব্দুল হামিদ, সদস্য সচিব চৈতন্য কুমার পাল, সদস্য অনিল বিশ্বাস, কানু বিশ্বাস, রাজু আহমেদ, পারভীন আক্তার, শেখর বিশ্বাস, সাধন বিশ্বাস, মিজানুর রহমান প্রমুখ।

তারা এসময় বলেন এটি অধিকার আদায়,পানি বন্ধি মানুষের সাভাবীক জীবন যাপনের সংগ্রাম। ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, ‘ভবদহে সেচ প্রকল্পের নামে কোটি কোটি টাকার বিদ্যুৎ অপচয় করা হচ্ছে। সমস্যার কোনো সমাধান হচ্ছে না। নতুন করে আরও তিনটি সেচপাম্প বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সারাদেশে বিদ্যুৎ সংকটের মধ্যে এই সেচপাম্প বসিয়ে বিদ্যুৎ অপচয়ের নীলকক্সা তৈরি করা হচ্ছে। বিল কপালিয়ায় টিআরএম বাস্তবায়ন এবং আমডাঙ্গা খাল সংস্কার ছাড়া ভবদহ জলাবদ্ধতা সমস্যার কোনো সমাধান হবে না।’

রনজিত বাওয়ালি বলেন, ‘ভবদহ জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানের জন্য অবিলম্বে বিল কপালিয়ায় টিআরএম চালু এবং আমডাঙ্গা খাল সংস্কার করতে হবে। তা না হলে খুব শীঘ্রই অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন কর্মসূচি শুরু করা হবে।

শ্রীধরপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, ভবদহ জলাবদ্ধ এলাকার মানুষের জীবন বাঁচতে সরকারকে অবশ্যই টিআরএম চালু করতে হবে। এই এলাকার ভুক্তভোগী মানুষের জীবন-মান উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *