ভুয়া ডিজিএফআই পরিচয়ে প্রতারণা! অবশেষে ডিবি পুলিশের হাতে ৭ জন গ্রেফতার

Uncategorized আইন ও আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ কখনো ডিজিএফআই কখনো সেনা বাহিনীর কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদান করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগে ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা রমনা বিভাগ।

গ্রেফতারকৃতরা যথাক্রমে, মোঃ মাসুদ রানা, মোঃ মাহফুজ হাসান, মোঃ আশরাফুল ইসলাম, মোঃ মনিরুল ইসলাম, মোঃ রেজাউল করিম, মোঃ রুস্তম আলী ও মোঃ মনিরুল ইসলাম।
এ সময় তাদের হেফাজত থেকে সেনা বাহিনীর ক্যামোফ্লজ ব্যাগ, টি-শার্ট, সেনাবাহিনী ও ডিজিএফআই এর ভুয়া আইডি কার্ড, সেনা বাহিনীর নকল সিল ও স্বাক্ষরযুক্ত ভুয়া নিয়োগপত্র উদ্ধার করা হয়।

গতকাল সোমবার (১ আগস্ট ২০২২) দিবাগত রাতে ভাষানটেকের একটি বাসা ও মিরপুর-১ এর সনি সিনেমা হলের পিছন থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট ২০২২) দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এ সংক্রান্তে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।

তিনি বলেন, ভুয়া ডিজিএফআই বা সেনা বাহিনীর কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদান করে ৩৩ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগে গতকাল সোমবার ১ আগস্ট ডিএমপির রমনা মডেল থানায় একটি প্রতারণার মামলা হয়। মামলাটি ছায়া তদন্ত করে গোয়েন্দা রমনা বিভাগ তাদেরকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃতদের প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে গোয়েন্দা প্রধান বলেন, গ্রেফতারকৃতরা পরস্পর যোগসাজসে ভুয়া ডিজিএফআই বা সেনা বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তা সেজে চাকুরি প্রার্থী বা গ্রামাঞ্চলের সহজ সরল মানুষকে মিষ্টি ভাষায় বুঝিয়ে সেনা বাহিনীর বিভিন্ন পদে চাকুরির কথা বলে। বিনিময়ে প্রতি পদের জন্য ১০ লক্ষ টাকা দাবি করে। চাকরি প্রত্যাশীরা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়ে যোগাযোগ করলে ভুয়া নিয়োগ পত্র পোস্ট অফিসের মাধ্যমে তাদের ঠিকানায় পাঠায়। এ চক্রের সদস্যরা নিজেরা সিভিলে ওয়ারলেস সেট নিয়ে নিয়োগ প্রত্যাশীদের বাড়ি গিয়ে পুলিশ ভেরিফিকেশন করে বিশ্বাস যোগ্যতা বাড়ায়।

আরও বিশ্বাস যোগ্যতা অর্জনের জন্য ক্যান্টনমেন্টের রজনীগন্ধা মার্কেটের ঠিকানা ব্যবহার করে। সেইসব ভুয়া নিয়োগ পত্র নিয়ে চাকরিতে যোগদান করতে গেলে তারা বলে যোগদানপত্রে একটু ভুল আছে, পরবর্তী সময়ে আবার নিয়োগ পত্র পাঠানো হবে। এভাবে কয়েকবার করার পর মোবাইলে কথা বললে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করে। তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃতদের কেউ কেউ এ চক্রের মাধ্যমে প্রতারিত হয়ে নিজেরাই এ প্রতারণার চক্রে যোগ দিয়েছে। কেউ ডিবি বা অন্য কোন সংস্থার পরিচয় দিয়ে যদি কারও কাছে যায়, তাহলে প্রথমে যাচাই-বাছাই করে তারা প্রকৃত ডিবি বা ডিজিএফআই বা এনএসআই কি না তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন। এছাড়াও যেকোন বাহিনীর নামে আর্থিক লেনদেন হতে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, চাকুরির কথা বলে প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ এর ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরকেও আইনের আত্ততায় আনা হবে। রমনা মডেল থানায় রুজুকৃত মামলায় রিমান্ডের আবেদনসহ গ্রেফতারকৃতদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

ডিএমপির গোয়েন্দা রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এইচ. এম আজিমুল হক, পিপিএম এর নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জুয়েল রানা, পিপিএম এর তত্ত্বাবধানে সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার জাবেদ ইকবাল এর নেতৃত্বে সঙ্গীয় ফোর্সসহ অভিযানটি পরিচালিত হয়।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *