নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ রবিবার ২০ নভেম্বর, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ নতুন ৫০টি শিল্প ও অবকাঠামো উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেছেন। এটা একটা ভাল খবর।
আলোচকদের কথা অনুযায়ি অর্থনীতির দুরবস্থা, বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যর্থতা, এনবিআর এর জটিলতার মধ্যেও ৫০টি নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান কিভাবে বাংলাদেশে হচ্ছে? কথার সাথে বাস্তবতার অনেক ফারাক দেখতে পাচ্ছি এবং এটার মূল কারণটা হচ্ছে রাজনীতি।
আমাদের দুর্ভাগ্য হচ্ছে চলমান বাস্তবতার মধ্যেও আমরা বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে রাজনৈতিক খেলায় অবতীর্ণ হয়েছি। এটা আমাদের জন্য চরম দুর্ভাগ্য। এসব বিষয়ে বর্তমান সরকার সতর্ক আছেন। গতকাল প্রধানমন্ত্রী অর্থনীতি সম্পর্কে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশের মানুষ এখনও তিন বেলা খেয়েধেয়ে ভাল আছেন।
বাংলাদেশের সবকিছু এখনও স্বাভাবিক আছে। গ্রামীণ অর্থনীতি এখনো ভালো আছে, চাঙ্গা আছে। তিন বছর আগে বিশে^র ন্যায় বাংলাদেশ কোভিড আক্রান্ত হয়েছে। তখন কি সময়টা ছিল! তখন কিন্তু সকলেই বসে গিয়েছিল।
শুধু সচল ছিল সরকার এবং সরকারের সেই পদক্ষেপের কারণেই কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতি বেঁচে গেছে শুধু নয়; বাংলাদেশের মানুষও বেঁচে গেছে। আমাদের ভুলক্রটি থাকতে পারে; বিভিন্ন কর্মকান্ড নিয়ে সমালোচনা হতে পারে।
সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে ঘাটতি নাই। সরকার চেষ্টা করছে। কোভিডকালীন অর্থনীতিকে সরকার যেভাবে আগলে রেখেছিল- সেজন্য সরকার অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। দুর্ভাগ্য এটাই- দেশকে তলানিতে ঠেলে দেয়ার জন্য কিছু মানুষ রাজনীতি করছে।
‘গত শনিবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, দেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করা হয়েছে’- এ বিষয়টি উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যদি তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হয়, তাহলে কি আমরা আলোচনায় বসতাম। সুযোগই ছিলনা। এই যে, অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে দেশের মানুষকে আতংকিত করার রাইট নাই। আমাদের রিজার্ভ আছে। কোভিডের সময় রিজার্ভ বেড়ে গিয়েছিল।
এখন সচল হয়েছে। কেনা কাটা হচ্ছে। রিজার্ভ কিছুটা কমছে। এর মানে এই নয়; দেশের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে গেছে। দেশের অর্থনীতি সচল আছে বলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ৫০টি শিল্প ও অবকাঠামো উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করতে পেরেছেন।
প্রতিমন্ত্রী রবিবার ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে দৈনিক ইত্তেফাক আয়োজিত ‘বাংলাদেশের শিপিং খাত বাস্তবতা ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশেনের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ ইকবাল আলী শিমুল।
দৈনিক ইত্তেফাকের সাব-এডিটর মো. মইনুল ইসলামের উপস্থাপনায় এবং বিশেষ প্রতিনিধি সাইদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ শাহজাহান (ভার্চুয়ালি), বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো এসোসিয়েশেনের সভাপতি নূরুল কাইয়ুম খান, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. আইনুল ইসলাম, বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডস এসোসিয়েশেনের সভাপতি কবির আহমেদ, গ্লোবাল টিভির সিইও এবং এডিটর ইন চীফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, অল্প কিছু দিন আগে প্রধানমন্ত্রী পায়রা বন্দরের ক্যাপিটাল ড্রেজিং কাজ ও আটটি জাহাজের উদ্বোধন এবং প্রথম টার্মিনাল, ৬-লেন সংযোগ সড়ক এবং সেতু নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে ব্যবসায়িরা পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল দিয়ে আমদানি করতে পারবেন।
অর্থনীতি খারাপ হলে সরকার কেন এগুলো করবে! চট্টগ্রাম বন্দরের কনজেশন কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত হচ্ছে। বিদেশিরা বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে। বিদেশিরা বিনিয়োগ করলে বাংলাদেশ নিয়ে যাবে এ ধারণাটা ঠিক নয়।
ভয়ের কিছু নাই। এত সহজ নয়। দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়া হবে। আমাদের দেশের ব্যবসায়িরা বিদেশে বিনিয়োগ করছে। চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দরের পণ্য নৌপথে পরিবহনের লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে।
যাতে সড়কের ওপর চাপ কম পড়ে। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর, পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল এবং বে-টার্মিনালের অনেক কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সমস্যা আছে।
বর্তমান সরকার আমলাতান্ত্রিক জটিলতার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে। কমিউনিকেশন গ্যাপ ফিল আপ করেছে। আপনারা এখন যে কোন সচিবের সাথে কথা বলতে পারেন। সংকটগুলো নিরসন করাই সরকারের কাজ।
সরকারের মূল কাজটাই হচ্ছে পথ দেখানো। আলোচনার মধ্য দিয়ে অবশ্যই ভাল পথ তৈরি করব। যে পথ দিয়ে আপনাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সার্বিক অর্থনীতি নিরাপদ থাকবে।