নিষ্পত্তি,স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে — প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

Uncategorized জাতীয়

ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে মামলার দ্রুত


নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ সবার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির পাশাপাশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেন, সংসদ-সদস্য জনগণের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিতের লক্ষ্যে আইন প্রণয়নের পাশাপাশি আইন সংশোধন করেন এবং বিচারকরা ওই আইন প্রয়োগের মাধ্যমে সবার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেন। গতকাল সোমবার ২৬ ডিসেম্বর, রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএসএ) ৫৯তম বার্ষিক কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমি ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে দেশের বিচারব্যবস্থার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সবকিছুই করেছি, যাতে আইনের শাসন ও জনগণের ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়। আমি চাই, দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির পাশাপাশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার মাধ্যমে সবাই যেন ন্যায়বিচার পায়। তিনি জানান, সন্ত্রাসবাদবিরোধী আইনের আওতায় যেসব মামলা রয়েছে, তা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে তার সরকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছে। তিনি বলেন, মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হলে যারা সন্ত্রাসবাদে জড়িয়ে গেছেন, তারা আর এ অপরাধে নিজেদের জড়াবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের সঙ্গে সঙ্গে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের ধরনও বদলে গেছে, এখন প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধ করা হয়। তিনি বলেন, সাইবার অপরাধ ঠেকাতে আমরা আইন করেছি। আইনটি নিয়ে নানা লোকে নানা কথা বলেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, যেভাবে সাইবার অপরাধ বেড়ে যাচ্ছে, তাতে এটাকে ঠেকাতে আইনটি জরুরি। সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ ঠেকাতে দেশব্যাপী সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী প্রচারণা চালাতে তিনি অভিভাবক, শিক্ষক, আলেমসহ সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কোনো সন্তান যাতে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়তে না পারে, সেজন্য আমাদের বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। ঝালকাঠি ও গাজীপুর আদালতে জঙ্গি হামলার উদাহরণ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, রায় দিয়ে বিচারকরা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন, সেজন্য সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার দ্রুত বিচারের লক্ষ্যে সারা দেশে ১০১টি ট্রাইব্যুনাল কাজ করছে এবং সাতটি ট্রাইব্যুনাল মানব পাচারসংশ্লিষ্ট মামলাগুলো পরিচালনা করছে। তিনি আশা করেন, নারী ও শিশু নির্যাতন মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি হলে এ ধরনের অপরাধ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে। তিনি আরও বলেন, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত নিু আদালতে মোট ১২২৭ জন বিচারককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং আরও ২০০ বিচারক নিয়োগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের আগে তারা কী পেয়েছিলেন এবং আওয়ামী লীগের ক্ষমতা গ্রহণের পর কী পেয়েছেন, তা ভেবে দেখতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা বিচারব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন দেখতে পাবেন।’ দেশের মানুষকে সুন্দর জীবন দেওয়ার উদ্দেশ্যে ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য তিনি ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এবং আইন ও বিচার বিভাগের সচিব গোলাম সারোয়ার বক্তব্য দেন। বিজেএসএ সভাপতি এবং জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ এএইচএম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া স্বাগত বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে বিজেএসএ-এর ৫৯তম বার্ষিক কাউন্সিলের ওপর ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *