কে হবেন রাষ্ট্রপতি?

Uncategorized অন্যান্য


নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ ফুরিয়ে আসছে। সংবিধান অনুযায়ী, তৃতীয় মেয়াদে তাঁর আর রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ নেই। ফলে ২৩ এপ্রিলের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হবে। কে হচ্ছেন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি–এ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছে। রাষ্ট্রের শীর্ষ পদটির জন্য অনেকের নামও শোনা যাচ্ছে।

সংবিধানের ৫০(২) অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘একাদিক্রমে হউক না হউক–দুই মেয়াদের অধিক রাষ্ট্রপতি পদে কোনো ব্যক্তি অধিষ্ঠিত থাকিবেন না।’ বর্তমান রাষ্ট্রপতি পরপর দুই মেয়াদে এ দায়িত্ব পালন করে ফেলেছেন।
এ কারণে জাতীয় সংসদের মাধ্যমে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হবে। আগামী ২৪ এপ্রিলের মধ্যেই পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নতুন কারও শপথ নেওয়ার কথা।

রাষ্ট্রপতির মেয়াদ এবং পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচন বিষয়ে সাংবিধানিক বিধানের কথা স্মরণ করে দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্ধারিত সময়েই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে।

রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এক কর্মশালার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু তিনি (বর্তমান রাষ্ট্রপতি) দুই টার্ম থেকেছেন, সংবিধান অনুযায়ী আর থাকতে পারেন না। সেহেতু আমরা নতুন রাষ্ট্রপতি দেখব।’

আবদুল হামিদকে তৃতীয় মেয়াদের জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করতে হলে সংবিধান পাল্টাতে হবে—এ কথা জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত সংবিধান পাল্টানোর কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।

রাষ্ট্রপতি পদে কে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে পারেন, এ নিয়ে জোর আলোচনা চলছে দলে। গত ২৪ ডিসেম্বর দলের সভাপতিমণ্ডলীর সর্বশেষ বৈঠকে বিষয়টি আলোচনা না হলেও এ ফোরামের একাধিক সদস্য আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, রাষ্ট্রপতি পদে কে আসতে পারেন, এ নিয়ে তাঁরা বিভিন্ন নাম শুনছেন।

দলীয় সভাপতি বিষয়টি নিয়ে এখনো আলাপ আলোচনা করেননি, এমনটি জানিয়ে তাঁরা বলেন, এখনো সময় আছে। সবকিছু বিবেচনা করে একজন যোগ্য ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দেওয়া হবে, যিনি কোনো রকম প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হলে দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারেন।

রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের মধ্যে জোর আলোচনা আছে দলটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে। এ ছাড়া আলোচনায় আছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সাবেক তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ ও প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।

বৃহস্পতিবার ৫ জানুয়ারী চলতি জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশন বসেছে। সেখানে সংসদ উপনেতা নির্বাচন করার সম্ভাবনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরীর নাম আলোচনায় রয়েছে।

তিনি উপনেতা না হলে রাষ্ট্রপতি পদে তাঁকেও দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য মোশাররফ হোসেনের নামও আলোচনায় আছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানার নামও রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নের আলোচনায় আছে বলে জানান আওয়ামী লীগের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘বাংলাদেশের সবকিছু সংবিধান অনুযায়ী চলছে। তাই যথাসময়ে, যথা নিয়মে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে। এজন্য সংবিধান সংশোধনের কোনো সম্ভাবনা নেই। আগামী রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন এটা নিয়ে এখনো দলীয় ফোরামে কোনো আলোচনা হয়নি।’

সংবিধানমতে, ‘৩৫ বৎসরের কম বয়সের কোনো ব্যক্তি, সংসদ সদস্য নির্বাচনে অযোগ্য এবং অভিশংসন দ্বারা রাষ্ট্রপতির পদ হইতে অপসারিত কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হতে পারবেন না।’

একাধিক প্রার্থীর সুযোগ থাকলেও বর্তমান সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় দল মনোনীত ব্যক্তিই রাষ্ট্রপতি হবেন বলে দলের কয়েক নেতা জানান।

আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল প্রথম মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য দায়িত্ব নেন।

সংবিধান অনুযায়ী, পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে শপথ না নেওয়া পর্যন্ত বর্তমান রাষ্ট্রপতি নিজ পদে বহাল থাকবেন।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *