অনুসন্ধানী প্রতিবেদন : দুর্নীতির মাধ্যমে কাস্টমস কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম গড়ে তুলেছে সম্পদের পাহাড় রহস্যজনক কারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃপক্ষ নীরব। কাস্টমস কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম সরকারী পদের প্রভাব ও প্রতিপত্তি ব্যবহার করে শতশত কোটি টাকার আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ মতে, কাস্টমস সুপারিনটেনডেন্ট মো: শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। কাস্টমস সুপারিনটেনডেন্ট মো: শহিদুল ইসলাম দুর্নীতির মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। তার নামে ও বেনামে রয়েছে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পত্তি। কয়েকটি ব্যাংক একাউন্টে রয়েছে শত কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স। দুরন্ত এই দুর্নীতিবাজ তার স্ত্রীর নামে ও বেনামে কিনে রেখেছেন কয়েক কোটি টাকার স্বর্ণলংকার।
শহিদুল ইসলাম বিভিন্ন জায়গায় কোটিকোটি টাকার জমি ও ফ্লাট বাড়ি করে রেখেছেন। যার যতসামান্য কিছু তথ্য তদন্তের সার্থে অত্র প্রতিবেদনে উল্লেখ্য করা হলো।
কাস্টমস সুপারিনটেনডেন্ট মো: শহিদুল ইসলাম গত ৩০ মে ২০১২ সালে নিজ ও তাঁর স্ত্রীর নামে যৌথ মালিকানাধীন জমির উপর একটি ৯ তলা বিল্ডিং তৈরির জন্য একটি ডেভেলপার কোম্পানীর মাধ্যমে যথারীতি বাড়ির কাজ শেষ করেন। কাজ শেষ হবার পর ডেভেলপার থেকে ভবনের অন্যান্য বাকি ফ্ল্যাটও ক্রেতাদের নিকট থেকে নিজ ও স্ত্রীর নামে ১,৩৯,৩৫,০০০ টাকা করে ৪টি ফ্ল্যাট বায়নানামা করেন যার মধ্যে ৫,৯৫,০০০ টাকা পরিশোধ করেন নাই। এমনকি ৪টি ফ্ল্যাটের মূল্য পরিশোধ এবং রেজিষ্ট্রেশন না করেই কাস্টমস সুপারিনটেনডেন্ট শহীদুল ইসলাম ১০ বছর যাবত প্রভাব দেখিয়ে উক্ত ফ্ল্যাট অবৈধভাবে জোরপূর্বক দখল এবং অবৈধভাবে ভাড়াসহ সর্বমোট ২ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এবিষয়ে রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলা নং-৫২ তারিখ: ২৩-০২-২০২০, মামলাটি বর্তমানে চলমান। শহীদুল ক্ষমতা দেখিয়ে ডেভেলপার কোম্পানীর লোকজনদেরকে মামলা উঠিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছে, এমনকি মামলা তুলে না নিলে জানে মেরে ফেলার হুমকিও দিচ্ছেন এই দুর্নীতিবাজ শহীদুল ইসলাম।
বর্তমানে মামলাটি সিআইডিতে রয়েছে এবং সিআইডি’র সাব-ইন্সপেক্টর শহিদুল ইসলাম এই মামলাটির তদন্ত করছে বলে জানা গেছে। সিআইডি’র সাব-ইন্সপেক্টর শহিদুল ইসলাম আসামীর বিরুদ্বে ব্যবস্থা না নিয়ে বাদীপক্ষকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। সিআইডি’র সাব-ইন্সপেক্টর শহিদুল ইসলাম আসামী কাস্টমস সুপারিনটেনডেন্ট শহীদুল ইসলাম এর পক্ষে কাজ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এই মামলার ১৮১ পৃষ্ঠার প্রমানাদি মামলা তদন্তকারী কর্মরতার কাছে দাখিল করেছেন।
ব্যাপক তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, কাস্টমস সুপারিনটেনডেন্ট মো: শহিদুল ইসলামের দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত সামান্য কিছু অবৈধ ধন সম্পত্তির বিবরণ তুলে ধরা হলো: শহিদুল ইসলামের মৌচাক মার্কেটে ৬টি দোকান রয়েছে যার আনুমানিক মুল্য ১০ কোটি টাকা, খিলগাও বি-ব্লকে, হোল্ডিং নং-৪২২/২৩ এই ভবনে ২টি ফ্ল্যাট রয়েছে যার আনুমানিক মুল্য ২ কোটি টাকা, শান্তিবাগে ১টি ৬ তলা বাড়ীতে ১২টি ফ্ল্যাট রয়েছে যার আনুমানিক মুল্য ১০ কোটি টাকা, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ব্লক-ডি, রোড নং-৮ হাউজ নং-১৫০, ৭তলা ভবনের বাড়িতে ১টি ফ্ল্যাট রয়েছে যার আনুমানিক মুল্য ৪ কোটি টাকা, গাজীপুর মাওনা এলাকায় ৩৭ বিঘা জমি রয়েছে যার আনুমানিক মুল্য প্রায় শত কোটি টাকা, দক্ষিন বাড়িধারা আবাসিক এলাকায় রোড নং-১৭, প্লট নং ১৩ বাড়িতে ৭টি ফ্ল্যাট ও প্লট নং ১৫ বাড়িতে ৪টি ফ্ল্যাট মোট ১১টি ফ্ল্যাট রয়েছে যার আনুমানিক মুল্য ১২ কোটি টাকা, ৩টি লাক্সারিয়াস কার রয়েছে যার আনুমানিক মুল্য ২ কোটি টাকা, রাজশাহীতে ২ বিঘার উপরে একটি বাগান বাড়ী রয়েছে যার আনুমানিক মুল্য ২ কোটি টাকা, যশোরে ৩ বিঘার বাড়ী রয়েছে যাহার আনুমানিক মুল্য ৩ কোটি টাকা, শহিদুল ইসলাম একটি রিয়েলএষ্ট্রেট কোম্পানীর মালিক, বনানীতে অবস্থিত বন্ড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামের একটি কোম্পানীতে শহিদুল ইসলামের একটা বড় অংশ শেয়ার রয়েছে শেয়ারের আনুমানিক মুল্য ১০ কোটি টাকা, শান্তিনগর মোড়ের হক বেকারীর পাশে শহীদ স্টোর নামে একটি দোকান রয়েছে যাহার আনুমানিক মুল্য ২ কোটি টাকা এছাড়া শহিদুল ইসলাম এর ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক মহাখালী শাখায় ৩ কোটি টাকার এফ.ডি.আর রয়েছে এবং ভিবিন্ন ব্যাংকে তার স্ত্রী ও নামে বেনামে কয়েক কোটি টাকার এফ.ডি.আর রয়েছে।
সচেতন মহল দাবি করেন কাস্টমস কর্মকর্তা সুপারিনটেনডেন্ট শহীদুল ইসলাম এর দুর্নীতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও দুর্নীতি দমন কমিশন সঠিক ভাবে তদান্ত করে শহীদুল ইসলামের দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে নিবেন এবং এই দুর্নীতিবাজ কাস্টমস কর্মকর্তার চাকরিচ্যুত করে দেশের প্রচলিত আইনে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করবেন প্রশাসন।