নিজস্ব প্রতিবেদক : চলমান আন্দোলনের মুখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার মধ্যে আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, দুপুর আড়াইটার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনার পরপরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
জানা যায, মঙ্গলবার বেলা ১১টায় আন্দোলনকারীরা যখন উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন তখন উপাচার্যপন্থী শিক্ষকেরা সেখানে যান। তারা আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তুলে দিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে ঢোকার চেষ্টা করেন। তবে আন্দোলনকারীদের বাধার মুখে তারা বাসভবনে ঢুকতে পারেননি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর সোয়া ১২টার দিকে জাবি শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি জুয়েল রানার নেতৃত্বে অন্তত শতাধিক ছাত্রলীগ সদস্য মিছিল সহযোগে এসে এই হামলা চালায়।
মিছিলকারীরা উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের সেখান থেকে সরিয়ে দেন। তারপর তারা ওই জায়গায় অবস্থান নেন। এসময় তাদের উপাচার্যের পক্ষে ও শিবিরবিরোধী স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
জানা যায়, হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে ১২ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। অন্তত ২০ জনকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে জাবি শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে যারা আন্দোলন করছে, ওরা শিবিরের কর্মী। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ওদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য খুঁজে বের করার আহ্বান জানাই।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে তার বাসভবন অবরুদ্ধ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। অপরদিকে আন্দোলনকারীদের ঘিরে চার স্তর বিশিষ্ট বহর তৈরি করে মুখোমুখি অবস্থান নেন উপাচার্যপন্থী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।