সারাদেশে নিত্যপণ্যের অগ্নিমূল্যে দিশেহা’রা সাধারণ মানুষ,লাগামহীন বাজার,নড়াইলেও একই অবস্থা,দেখার কেই নেই

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত

মো:রফিকুল ইসলাম,নড়াইলঃ
সারাদেশে নিত্যপণ্যের অগ্নিমূল্যে দিশেহা’রা সাধারণ মানুষ। আর্ন্তজাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির অজুহাত এবং অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের বাজার। সারাদেশের মতো একই চিত্র নড়াইলে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অগ্নিমূল্যে পিষ্ট হচ্ছে এ নড়াইল জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ। শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, চাল কেজি প্রতি ৫০-৮০ টাকা,প্যাকেটজাত আটা ৬৫ টাকা,মুসুরির ডাল ১০০ টাকা,ছোলার ডাল ৬৮ টাকা, মুগের ডাল ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেটজাত তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ টাকা লিটার এবং খোলা তেল ১৪৫-১৮০ টাকা। ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা হালি।এদিকে,কাঁচা মরিচ ১৮০-২০০ টাকা,পেঁয়াজ ৩০ টাকা, রসুন ১০০-১২০ টাকা,আদা ১৩০ টাকা,আলু ২০ থেকে ৩০ টাকা,টমেটো ২৫ টাকা,মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, উচ্ছের কেজি ২০০ টাকা,হলুদ ২০০ টাকা,ফুলকপি ২৫-৩০ টাকা,বাঁধাকপি প্রতি পিচ ২০-২৫ টাকা,লাউ প্রতি পিচ ২৫-৩০ টাকা। অন্যদিকে,ব্রয়লার মুরগী প্রতি কেজি ২৪০ টাকা,সোনালী ৩০০ টাকা,লেয়ার কক ২৯০ টাকা এবং প্যারেস ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজার করতে আসা পৌর-সভার ভওয়াখালী এলাকার রিপন সিকদার বলেন,উচ্ছের কেজি ২০০ টাকা। মরিচের কেজি প্রায় ২০০ টাকা। সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম উর্ধ্বমুখি। এভাবে সকল পণ্যের দাম বাড়তে থাকলে আমরা যারা মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক তাদের বাজার করে খেয়ে বেঁচে থাকার মত অবস্থা নেই।আমারা বাজার করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। যে বেতন পান তা মাসের পনেরো দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাচ্ছে। গরু ও খাশির মাংসের কাছে তো অনেক আগে থেকেই ঘেষা যাচ্ছে না। মধ্যবিত্তের খাবার ব্রয়লার মুরগী তারও দাম বেড়ে গেছে। ফলে মাসের মধ্যে মুরগীর মাংসও কিনতে পারছি না। সবকিছু আমাদেও ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। বাজার করতে আসে ফুলজান বেগমসহ আরো কয়েকজন বলেন,আমাদের দুর্দশার শেষ নেই। আয় বাড়েনি অথচ সবকিছু ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। মাছ, মাংস,ডিম থেকে শুরু করে সবজির বাজারেও আগুন। দ্রব্যমূল্যের এতো দাম যে,যা কিনতে বাজারে আসছি তার কিছু কিনেছি আর বাকিগুলো না কিনেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। এদিকে রপগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী বাকি বিল্লাহ্ জানান,আমরা আড়ত থেকে যেভাবে কিনবো,সেই ভাবেই বিক্রি করবো ৫-১০ টাকা লাভে কিন্তু সিন্টকেটের মাধ্যমে যদি দ্রব্যমূল্য বেশি দামে বিক্রি করে তাহলে আমরা কি করতে পারি,এটা দেখার দায়িত্ব বাজার মনিটরিং অফিসারদের। ব্যবসায়ী ছিকু খান বলেন,দারচিনির দাম বেড়ে আবার কমেছে। চালের দাম কেজি প্রতি ১-২ টাকা বেড়েছে। জিরার দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। সবজি বিক্রেতা মুনসুর মোড়ল বলেন,গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে সবজির দাম একটু বেশি। মৌসুম শেষের সময় সবকিছুর দাম বেশি হয়। দাম বেশি হলেও মানুষের কিনতে হচ্ছে। এতে কৃষক লাভবান হলেও আমাদের বিক্রি করতে সমস্যা হচ্ছে। মানুষ আগের তুলনায় কম কিনছে। কিছু দিন পর আবার সবজির দাম কমবে। রাকিব ব্রয়লার হাউজের মালিক হানিফ বলেন,গত এক সপ্তাহে প্রতিদিনই ১০-২০ টাকা করে পাইকার’রা দাম বাড়াচ্ছে। সবকিছুর দাম বাড়ায় পাইকার’রা দাম বেশি নিচ্ছে। বেশি দামে মাল কিনতে হচ্ছে। ফলে বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।
এদিকে,ডিম বিক্রেতা বরকত ভূঁইয়া বলছেন, কোয়েলের ডিমের দাম অনেক আগে থেকেই বাড়তি। গত এক সপ্তাহে পোল্ট্রির ডিম এবং হাঁসের ডিমের দামও বেড়েছে। যে ডিম মানুষ কিনেছে ৮-৯ টাকা তা এখন প্রতিদিন যাচ্ছে আর ১-২ টাকা করে বাড়ছে। এভাবে চললে মানুষ কিভাবে খাবে। বেচাকেনাও কমে যাচ্ছে। যে আগে ১০টা কিনতো সে এখন কিনছে ৫টা।
এ বিষয়ে জেলা কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক কাজী হাফিজুর রহমান বলেন,দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ে সরকার ইতোমধ্যে অনেকগুলো পরিকল্পনা করেছে। রমজানকে সামনে রেখে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। এক ধরনের অসাধু ব্যবসায়ী’রা আছে যারা অতিরিক্তি মুনাফার জন্য বাজারকে লাগামহীন অবস্থায় নিয়ে গেছে বলে ধারণা। বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা উচিত বলেও মনে করেন তিনি।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *