১৪ দফা দাবি আদায়ে  যশোর জুট  ইন্ডাসট্রীজ লিমিটেড (জে, জে, আই) এর  ১নং গেট চত্তরে পাটকল শ্রমিকদের  সমাবেশ

Uncategorized খুলনা রাজনীতি সারাদেশ

পিংকি জাহানারা : রাষ্ট্রীয় পাটকল রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় চালু ও বকেয়া পাওনা পরিশোধসহ ১৪ দফা দাবিতে গতকাল শুক্রবার  ৭ এপ্রিল,  বিকাল ৪:০০টায় যশোরের অভয়নগরের রাজঘাটের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল  জে জে আই জুট মিলের সামনে  শ্রমিক সমাবেশ  অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, নাগরিক পরিষেদের আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট কুদরত-ই-খুদা ও খুলনা যশোর অঞ্চলের শ্রমিক
নেতৃবৃন্দ।
লিজ বা ব্যক্তি মালিকানায় নয়, বন্ধ সকল রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল অবিলম্বে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় চালু, ৫টি পাটকলের (খালিশপুর, দৌলতপুর, জাতীয়, কেএফডি, আরআর জুটমিল) শ্রমিকসহ সকল শ্রমিকের পাওনা (এরিয়ার, একটি বোনাস, একটি ইনক্রিমেন্ট, ৮টি বোনাসের ডিফারেন্স, ২০২০ সালের জুলাই মাসের ২দিনের মজুরি) ও অবশিষ্ট শ্রমিকদের সঞ্চয়পত্রের কাগজ ঈদের আগে দেয়ার দাবিতে পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ এর উদ্যোগে আজ ৭এপ্রিল শুক্রবার বিকেল ৪টায় রাজঘাট জেজেআই মিল গেটের সামনে এক শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শ্রমিকনেতা নজরুল ইসলাম মল্লিক এবং সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন শেখ।
সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিষদের আহবায়ক এ্যাড. কুদরত-ই-খুদা, বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব এস এ রশীদ। অন্যন্য বক্তাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) খুলনা জেলা সভাপতি ডা. মনোজ দাশ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ কেন্দ্রীয় সদস্য শ্রমিকনেতা মোঃ মোজাম্মেল হক খান, গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা আহবায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল, ফুলতলা উপজেলা আহবায়ক মোঃ অলিয়ার রহমান।
স্থানীয় শ্রমিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নাগরিক পরিষদের শ্রমিকনেতা শামসেদ আলম শমসের, শামস শারফিন শ্যামন, মোশাররফ হোসেন, নূর ইসলাম, নওশের আলী, নাজমুল গাজী প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ২০২০ সালের ২ জুলাই বর্তমান সরকার ২৬টি পাটকল বন্ধ করে য়ে। মিল বন্ধের ২ মাসের মধ্যে সকল পাওনা পরিশোধের অঙ্গীকার করলেও অদ্যাবধি অনেক শ্রমিক এরিয়ারসহ তাদের বকেয়া পাওনা পায়নি। খুলনার খালিশপুর ও দৌলতপুর জুটমিল, সিরাজগঞ্জের জাতীয় জুটমিল এবং চট্টগ্রামের কেএফডি ও আর আর জুটমিলের শ্রমিকরা এখনো বকেয়া কোন টাকা পায়নি। এছাড়াও বিভিন্ন মিলের শ্রমিকরা যাদের মামলা আছে তাদের দ্রæত মামলা নিষ্পত্তি করে বকেয়া টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে না।
অনেকে সঞ্চয়পত্রের টাকা এখনো পায়নি। ফলে শ্রমিকরা নিদারুন কষ্ট, যন্ত্রণা ও উৎকণ্ঠার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। বর্তমানে জীবনযাপন ব্যয় অত্যধিক বৃদ্ধি পাওয়ায় কর্মহীন এবং বকেয়া পাওনা থেকে বঞ্চিত শ্রমিকরা তাদের পরিবার পরিচালনা করতে হিমশিম খাচ্ছে। রমজান মাসের অর্ধেক রোজা চলমান এবং ঈদ আসন্ন। এমতাবস্থায় ঈদের আগে সকল শ্রমিকের বকেয়া পাওনা পরিশোধ এবং সঞ্চয়পত্রের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা জরুরী নতুবা শ্রমিকদের সাথে নিয়ে ঈদের পর কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সমাবেশে বক্তারা ৬টি দাবীনামা ঘোষণা করেন। দাবি সমূহ যথাক্রমে, (১) ৫টি পাটকলের শ্রমিকসহ যেসকল শ্রমিকরা এখনো তাদের বকেয়া পাওনা পায়নি তাদের পাওনা আগামী ঈদ উল ফিতরের আগে পরিশোধ করতে হবে। যে সকল শ্রমিকরা সঞ্চয়পত্রের কাগজ পায়নি তাদের অবিলম্বে তা হস্তান্তর করতে হবে।
(২) লোকসানের জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে এবং লুটপাটকারীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করাসহ শাস্তি দিতে হবে।
(৩) ব্যক্তি মালিকানাধীন পাটকল শ্রমিকদের চাকরী স্থায়ী করতে হবে এবং তাদের নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র দিতে হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের মজুরী নিত্যপণ্যের বাজারদর, শ্রমিক ও তার পরিবারের জীবনযাপনের প্রয়োজনীয় উপাদানের মূল্য, দক্ষতা এবং ব্যয়িত শ্রমশক্তি পুনরুৎপাদনের প্রয়োজনীয় পুষ্টিগ্রহণের সক্ষমতা অর্জন বিবেচনায় নিয়ে নির্ধারণ করতে হবে।
(৪) ম্যান্ডেটরি প্যাকেজিং এক্ট বাস্তবায়ন করতে হবে। সময়ের চাহিদা বিবেচনা করে পাট থেকে বহুমুখী পণ্য উৎপাদনের জন্য গবেষণাখাতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দিতে হবে।
(৫) বিজেএমসির মাথাভারী প্রশাসন থেকে অতিরিক্ত জনবল ছাটাই করতে হবে। পাট মন্ত্রণালয়ের অযাচিত খবরদারি বন্ধ করে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল পরিচালনা সংস্থাটিকে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হবে। (৬) পাট রক্ষা আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *