যুবলীগের কংগ্রেস কাল আলোচনায় যারা

এইমাত্র রাজধানী রাজনীতি

বিশেষ প্রতিবেদক : চলমান শুদ্ধি অভিযানে টলমাটাল সাংগঠনিক অবস্থার মধ্যেই আগামীকাল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুবলীগের সপ্তম কাউন্সিল। ক্যাসিনোকান্ড, টেন্ডারবাজীসহ নানা অপকর্মে সংগঠনের নেতাদের নাম আসায় বিব্রত নেতা-কর্মীরা। সংগঠনের ঐতিহ্য ধরে রাখতে সৎ, যোগ্য ও পরিচ্ছন্ন ইমেজের নেতৃত্ব চান পদপ্রত্যাশিরা। কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, বর্তমান কমিটির পরিচ্ছন্ন নেতা ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের সমন্বয় নতুন কমিটি গঠিন হতে পারে।
দুর্নীতি ও অপকর্মের বিরুদ্ধে চলমান শুদ্ধি অভিযানে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ নেতাদের নাম। নানা অভিযোগে সংগঠনের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকে পদ হারাতে হয়েছে। ক্যাসিনোকান্ডে গ্রেপ্তার হন ঢাকা মহানগর দক্ষিনের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, সহসভাপতি এনামুল হক আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াসহ কয়েকজন। আরও অনেক নেতার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
এমন বাস্তবতায় শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে সংগঠনের সপ্তম জাতীয় সম্মেলন। উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
শুদ্ধি অভিযানের মধ্যেও বিতর্কিত কেউ কেউ পদ পেতে প্রচারণায় নেমেছেন। ক্যাসিনোকান্ডে গ্রেপ্তার খালেদ মাহমুদ ভূইয়ার ডান হাত হিসেবে পরিচিত শটগান সোহেল ও তার সহযোগি আলী রেজা খান রানা মহানগর দক্ষিণের শীর্ষ পদ পেতে চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রাজধানীর শাহজানপুরের ১১ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি কাওছার হত্যার মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি এই দুইজন।
এদিকে নতুন কমিটিতে করা ঠাঁই পাচ্ছে তা নিয়ে চলছে জল্পনা কল্পনা। এখনো পরিস্কার হয়নি নেতৃত্বের বয়সের সীমারেখা। আলোচনায় আছেন বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য, সাবেক ছাত্রলীগ নেতাসহ পরিচ্ছন্ন ইমেজের নেতাদের নাম।
আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, সাংগঠনিক নেত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
সম্মেলনের ২য় অধিবেশনে ঘোষণা হতে পারে যুবলীগের নতুন কমিটি। একইদিন ঘোষণা করা হবে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতাদের নাম।
আলোচনায় যারা : দীর্ঘ সাত বছর পর আজ শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুবলীগের সপ্তম জাতীয় সম্মেলন। আলোচিত এ সম্মেলন ঘিরে জনমনে রয়েছে কৌতূহল। কাদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে যুবলীগের আগামীর নেতৃত্ব-তা জানতে উন্মুখ হয়ে আছে নেতাকর্মীরা।
চলমান শুদ্ধি অভিযানের পেছনে যুবলীগের ভূমিকাই ছিল বেশি। ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে সংগঠনটির চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকে অব্যাহতি দেয়া হয়। যুবলীগের আরও বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা ক্যাসিনো কা-সহ টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজির অভিযোগে জেলও খাটছেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আলোচিত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটসহ অনেকে ইতোমধ্যে বহিষ্কার হয়েছেন। যারা এখনও বহিষ্কার কিংবা গ্রেফতার হননি তারাও আছেন আতঙ্কে। তবে কপাল খুলতে পারে ক্লিন ইমেজের নেতাদের। সম্মেলন ঘিরে ক্লিন ইমেজের নেতারা অনেকটাই চাঙা হয়ে উঠেছেন।
সম্মেলনকে সামনে রেখে গুঞ্জন চলছে কারা আসছেন শীর্ষ নেতৃত্বে তা নিয়ে। সম্ভাব্য পদ প্রত্যাশীরা নিজেদের মতো করে লবিং করছেন, চলছে দৌড়ঝাঁপ, চেষ্টা করছেন নেত্রীর নজরে আসার। উপ-কমিটির সদস্যরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এদিকে চয়ন ইসলামকে আহ্বায়ক ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশীদকে সদস্য সচিব করে সপ্তম জাতীয় সম্মেলন (কংগ্রেসের) প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, নেত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন একটি নির্দিষ্ট বয়সসীমার মধ্যে যুবলীগকে নিয়ে আসার। নেত্রীর সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
যুবলীগের সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক চয়ন ইসলাম বলেন, যুবলীগের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে বয়সসীমা শিথিল করার কোনো সম্ভাবনা নেই।
যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট বেলাল হোসাইন বলেন, প্রধানমন্ত্রী দলের জন্য যা ভালো মনে করবেন তাই ভালো। দলের জন্য ক্লিন ইমেজ, পরীক্ষিত ত্যাগী, কর্মীবান্ধব, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আদর্শের অনুসারী এমন ব্যক্তিই নেতৃত্বে আসবেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুবলীগের নেতৃত্বের জন্য সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৫৫ বছর বেঁধে দিয়েছেন। তবে শেষ পর্যন্ত এবারের সম্মেলন বিবেচনায় কিছুটা শিথিলতাও আসতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা উঠেছে। তবে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন বয়স শিথিল করার কোনো সম্ভাবনা নেই।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *