মিলি সুলতানা : মরহুম চলচ্চিত্রকার আজিজুর রহমান বুলির ‘লাভ ইন সিঙ্গাপুর’ ছবিতে ভিলেন আদিল সাইড অ্যাকট্রেস মিতালি ব্যানার্জিকে রেপ করেছিলেন বেশ রাখঢাক করে। যেমন, ধর্ষণের দৃশ্যে দেখা গেল আদিল তার শিকার মিতালি ব্যানার্জির শাড়ি ব্লাউজ পেটিকোট ফ্লোরে ছুঁড়ে মেরেছেন। ওইটুক অবধি ছিল রেপ সিন। আর ওতেই ভিলেন আদিলকে উদ্দেশ্য করে সিনেমা হলে উপস্থিত দর্শকদের সমস্বরে চেঁচামেচি গালিগালাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল।সম্পূর্ণ শালীন একটি ধর্ষণ দৃশ্য, অথচ কি সাংঘাতিক দর্শক রিঅ্যাক্ট দেখে আজো সেই নূপুর সিনেমাহলের স্মৃতি আমার মনে পড়ে। ‘
হিসাব নিকাশ’ ছবিতে গোলাম মুস্তাফা ধর্ষণ করেছিলেন চিত্রনায়িকা দোয়েলকে। সেই দৃশ্যও পরিচ্ছন্নভাবে উপস্থাপন করেছিলেন পরিচালক। আহমেদ শরীফ রাজ আদিল বাবর দারাশিকো মিজু আহমেদদের পর রাজিব এবং হুমায়ূন ফরিদী প্রবল প্রতাপে ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।রাজিব হুমায়ূন ফরীদির মৃত্যুর পর মনোয়ার হোসেন ডিপজলের কপালে “চারচান্দ” লেগে গিয়েছিল।
ডিপজল তার সাথে করে অশ্লীলতার পাহাড় নিয়ে এফডিসিতে ঢোকেন। তার মত এমন নোংরা খল অভিনেতা আমাদের চলচ্চিত্রে অতীতে কেউ ছিলেন না। মনে একরাশ বিস্ময় নিয়ে ভাবি, ডিপজলের মত এমন ন্যাস্টি ভিলেন বাংলা সিনেমায় দ্বিতীয় কেউ নেই। তার প্রত্যেকটা ডায়লগ সীমাহীন বিরক্তির উদ্রেক করে। আমার ধারণা ডিপজলের মত অশিক্ষিত জ্ঞানহীন খল অভিনেতা আমাদের চলচ্চিত্রে এর পূর্বে আর কেউ ছিলেন না।
তার অসংখ্য ছবিতে নোংরা রগরগে দৃশ্য, গালিগালাজ খিস্তিখেউড় ছাড়া কোনো অভিনয় নেই। সব রকমের অশালীন সংলাপ ডিপজলের মুখ দিয়ে বের হয়েছে। ডিপজলের আঞ্চলিক ভাষায় খিস্তিখেউড় শুনে বিশেষ একশ্রেণির মানুষ আনন্দ পায়, তারা বাহবা দেয়।
এই ব্যক্তি বিশুদ্ধ বাংলায় একটা সিঙ্গেল ওয়ার্ড বলতে পারেননা। ডায়লগ বলার সময় তার আঞ্চলিকতার অত্যাচারে দর্শক ইরিটেট হয়। তার সংলাপ বলার ধরণ গাবতলি বাসস্ট্যান্ডের ইজারাদার ও বাস কন্ডাকটরদের মত।
অশ্লীলতার মূর্ত প্রতীক এই ডিপজল। সিনেমায় তার মুখ দিয়ে যত অশ্লীল গালিগালাজ বেরিয়েছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কোনো ভিলেনের মুখ দিয়ে এমন বিশ্রী শব্দ বের হয়নি। ডিপজল এদেশের অজ্ঞ শ্রেণীকে শিখিয়েছেন কিভাবে মেয়েদের পাটক্ষেতে নিয়ে যেতে হয়। ডিপজল তার সিনেম্যাটিক কুকর্ম আড়াল করার জন্য ক্যামেরার দোহাই দিয়ে নির্জলা মিথ্যাচার করেছেন।তাকে হাস্যকর সাফাই দিতেও দেখলাম।
তিনি নাকি কোনো অশ্লীল ছবিতে অভিনয়ই করেননি। যা যা দেখানো হয়েছে তা ক্যামেরা দিয়ে জোড়াতালি দেয়া হয়েছে। ভাবছি এমন মিথ্যেবাদী কিভাবে হতে পারে মানুষ? অশ্লীলতার গাট্টি বোচকা কাঁধে নিয়ে এফডিসিতে ঢুকেছিলেন আজকের বকধার্মিক ডিপজল। তিনি তার টার্গেট ফুলফিল করে এখন নীতিবাক্য কপচাচ্ছেন।