অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর পরিচয়ে শিক্ষিকার সাথে প্রতারণার দায়ে  পিবিআই কর্তৃক এক  প্রতারক গ্রেফতার

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অডিট (এডমিন এন্ড প্ল্যানিং হেড অব দ্য ডিপার্টমেন্ট) হেডকোয়ার্টার্স এন্ড ভিভিআইপি টার্মিনাল, হযরত শাহজালাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট এর কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার দায়ে  পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) কর্তৃক এক  প্রতারক গ্রেফতার  হয়েছে, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের,


বিজ্ঞাপন

জানা গেছে,  প্রতারক জাবের হোসেন চৌধুরী @ জাহিন চৌধুরী (৪০) পিতা-জাহেদ চৌধুরী, মাতা-নেলী চৌধুরী, সাং-রামনগর, থানা-দাগন ভ‚ইয়া, জেলা-ফেনী, বর্তমান-৯/১ ওমর আলী লেন, পশ্চিম রামপুরা, থানা-রামপুরা, ঢাকাকে বৃহস্পতিবার  ১ জুন  তার বর্তমান বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সাকিনা মল্লিক (৫৬) মিরপুর মডেল থানায় হাজির হয়ে অভিযোগ করেন যে, তিনি পেশায় একজন শিক্ষিকা।তিনি গত ২৮ জানুয়ারি  একটি অনলাইন গ্রুপের সাথে নিঝুমদ্বীপে বেড়াতে যান। উক্ত গ্রুপের সদস্য হিসেবে আসামী জাহিন চৌধুরী (৪০) এর সাথে তার পরিচয় হয়। আসামী নিজেকে “অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অডিট (এডমিন এন্ড প্ল্যানিং হেড অব দ্য ডিপার্টমেন্ট) হেডকোয়ার্টার্স এন্ড ভিভিআইপি টার্মিনাল, হযরত শাহজালাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট এর কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেন।

পরবর্তীতে উক্ত আসামীর সাথে তার মোবাইল ফোন এবং হোয়াটস অ্যাপে নিয়মিত যোগাযোগ হতো। উক্ত অনলাইন গ্রুপের সাথে তিনি ও আসামী আরো বেশ কিছু সদস্য গত ১৫ ফেব্রুয়ারি  এগ্রোফার্ম , শাপাহার, নওগাঁ এবং গত ১৬ মার্চ  শ্রীমঙ্গল ও সিলেটে বেড়াতে যান।

সিলেট থেকে আসার কিছুদিন পর আসামী জাহন চৌধুরী তাকে জানায় যে, চাকুরীর সুবাদে সরকার তাকে গাড়ি প্রদান করবেন, যার মূল্য ৮৫,০০,০০০ (পঁচাশি লক্ষ) টাকা। উক্ত টাকার বিপরীতে সমপরিমাণ টাকার ব্যাংক স্টেটমেন্ট অফিসে জমা দিতে হবে। আসামী জানায় উক্ত ৮৫,০০,০০০ (পঁচাশি লক্ষ) টাকার বিপরীতে তার ২৮,০০,০০০ টাকা কম আছে। উক্ত কারণে আসামী তখন তার নিকট টাকা ধার হিসেবে চায়।

পরবর্তীতে আসামী তাকে আসামীর নামীয় ওয়ান ব্যাংক এর মতিঝিল শাখার একাউন্ট এ ৭২ ঘন্টার জন্য ফান্ড ট্রান্সফারের জন্য অনুরোধ করলে তিনি সরল বিশ্বাসে আসামীর কথায় রাজি হয়ে গত ২৮ মার্চ ২০২৩  মিরপুর-১ সোনালী ব্যাংক শাখা হতে তার নিজ নামীয় একাউন্ট হতে আসামীর একাউন্টে ১১,০০,০০০ (এগার লক্ষ) টাকার ইলেক্ট্রনিক্স ফান্ড ট্রান্সফার করেন।
পরবর্তীতে উল্লেখিত টাকা ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও আসামী টাকা ফেরত দিতে টালবাহানা করতে থাকে। পরবর্তীতে অভিযোগকারী সাকিনা মল্লিক আসামীর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে মোবাইল বন্ধ পান।

অভিযোগকারীর সন্দেহ হলে তিনি হযরত শাহজালাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে যেগাযোগ করেন এবং জানতে পারেন আসামী জাহিন চৌধুরী নামে সেখানে কেউ চাকুরী করেন না। তখন তিনি বুঝতে পারেন যে, তিনি প্রতারনার স্বীকার হয়েছেন। উক্ত ঘটনার বিষয়ে মিরপুর মডেল থানায় মামলা নং-৪০ তারিখ-১৭ এপ্রিল  ২০২৩ রুজু হয়।

উল্লেখিত  মামলাটি মিরপুর মডেল থানা পুলিশ কর্তৃক তদন্তকালে আসামী গ্রেফতারে সহযোগিতা চেয়ে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) এর বিশেষ পুলিশ সুপার বরাবরে তদন্ত কর্মকর্তা অধিযাচনপত্র প্রেরণ করেন।

পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন পিবিআই এর অ্যাডিশনাল আইজিপি, পিবিআই  বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্তাবধান ও দিক-নির্দেশনায় এবং পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) এর বিশেষ পুলিশ সুপার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, বিপিএম-সেবা এর নিবিড় তদারকিতে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) এর পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ তরিকুল ইসলাম-পিপিএম-সেবা, পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ জুয়েল মিঞা, পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ মোস্তফা কামাল খান, এসআই (নিঃ) ইদ্রিস আলী এবং এএসআই (নিঃ) মোঃ আলমগীর হোসেনদের সমন্বয়ে একটি বিশেষ টিম ঢাকা মহানগরীর রামপুরা থানাধীন ৯/১ ওমর আলী লেন, পশ্চিম রামপুরা আসামীর বর্তমান বাসা থেকে বৃহস্পতিবার  ১ জুন  ঘটনায় জড়িত প্রতারক আসামী জাহিন চৌধুরী (৪০) কে গ্রেফতার করা হয়।

আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে জনৈক সাকিনা মল্লিককে প্রতারিত করে টাকা হাতিয়ে দেয়ার কথা স্বীকার করে। আসামী বেকার হলেও নিজেকে সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্মকর্তা পরিচয় দিতেন। সে লোকজনকে চাকরি দেওয়া, স্বর্ণের বার ও কম মূল্যে গাড়ি নিয়ে দেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। আসামী জানায় টাকা পয়সা আছে এমন বয়স্ক এবং বিধবা মহিলা তার মুল টার্গেট।

আসামী প্রতারনার মামলায় ইতিপূর্বেও হালিশহর থানা পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হয়েছিল এবং জামিনে মুক্ত হয়ে একইভাবে বিভিন্ন লোকদের প্রতারিত করে আসছিল।
আসামী জাবের হোসেন চৌধুরী @ জাহিন চৌধুরী এর বিরুদ্ধে  লক্ষীপুর জেলার লক্ষীপুর সদর থানার মামলা নং-৭, তারিখ-০৪/০৮/২০১৭ সালে এবং  চট্টগ্রাম, হালিশহর থানার মামলা নং-২৭, তারিখ-২৮/০২/২০২১ সালে  ধারা-১৭০/৪০৬/৪২০ পেনাল কোড তৎসহ দি পাসপোর্ট (অফেসেন্সেস) অ্যাক্ট, ১৯৫২ এর ৩(১)(এফ) ধারা সহ আরো বেশকিছু মামলা রয়েছে জানা যায়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *