ঢামেক হাসপাতালে টাকায় মেলে ‘জাল মেডিকেল’ সনদ!

অপরাধ আইন ও আদালত এইমাত্র স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল চিকিৎসাঙ্গনে স্বনামধন্য একটি প্রতিষ্ঠান। তবে সেখানে ওয়ার্ডবয়সহ গড়ে ওঠা একটি প্রতারক চক্র জাল ও ভুয়া মেডিকেল সনদ প্রস্তুত এবং সরবরাহ করে আসছে। ছুটি, মেডিকেল লিভ কিংবা পুলিশি মামলায় ইনজুরি রিপোর্টের জন্য ভুয়া সনদ সরবরাহ করে আসছিল চক্রটি। সরবরাহ করা ভুয়া ও জাল সনদের বিপরীতে গুরুত্ব অনুযায়ী চক্রটি হাতিয়ে নিত মোটা অঙ্কের টাকা।
সোমবার সুনির্দিষ্ট তথ্য ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নার্সিং কলেজের ভেতরের গ্যারেজ থেকে হাতেনাতে জাল জন্ম-মৃত্যু সনদপত্র, নকল সিল ও ইনুজরি সনদ, স্ট্যাম্পসহ মো. আরিফ (৫০) নামে একজনকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।
আটক মো. আরিফ ঢামেক হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় হিসেবে কর্মরত বলে জানিয়েছে অভিযান পরিচালনাকারী র‌্যাব-১০। র‌্যাব-১০ এর কর্মকর্তারা বলেন, অল্প সময়ের মধ্যেই টাকার বিনিময়ে চক্রটি জাল সনদ তৈরি ও সরবরাহ করত। ঢামেক হাসপাতালের শুধু ওয়ার্ড বয় নয়, এ চক্রে আরও অনেকে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
র‌্যাব-১০ এর অভিযানের নেতৃত্বদানকারী মেজর মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, একটি দালাল চক্রের মাধ্যমে মূলত জালিয়াতি চক্রটির কাছে বিভিন্ন জাল সনদ ও ইনজুরি সার্টিফিকেটের চাহিদা যায়। তারা মোটা অঙ্কের টাকা নেয়ার পর অল্প সময়ের মধ্যেই জাল সনদ সরবরাহ করে।
তিনি বলেন, পুলিশের যেকোনো মামলায় প্রতিবেদনের জন্য অনেক ক্ষেত্রে ইনজুরি সনদ দরকার হয়। যা নরমালি একটা অফিসিয়াল সিস্টেমের মধ্যে হাসপাতাল থেকে পেতে হয় এবং তা সময়সাপেক্ষ। এ সুযোগটি নিয়ে দালাল চক্রটি অল্প সময়ের ব্যবধানে জালিয়াতি চক্রটির কাছ থেকে মেডিকেল লিভের জন্য মেডিকেল সনদ, ইনজুরি সনদ সরবরাহ করত। এ ক্ষেত্রে যথাযথ কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষরও তারা জাল করত।
মেজর জাহাঙ্গীর বলেন, মেডিকেল কলেজের মাধ্যমে যেকোনো প্রয়োজনে মেডিকেল সনদ নিতে গেলে সত্যতা থাকতে হয়, সময়ও লাগে। কিন্তু এ চক্রটি কেউ মারধরের শিকার হয়নি, ইনজুরি হয়নি কিন্তু তার ইনজুরি সনদ দরকার, তাদেরকে জাল ইনজুরি সনদ সরবরাহ করে আসছে। যার ওপর ভিত্তি করে অনেকে ভূতুরে মামলাও দায়ের করছেন। দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি এ জালিয়াতি করে আসছে।
ঢামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কেউ এ চক্রের সাথে জড়িত কি না? কারণ ইনজুরি সনদসহ মেডিকেল সনদ সংক্রান্ত যেকোনো ডকুমেন্ট পেতে হলে রেজিস্টার্ড বুক ও সিরিয়াল মেইনটেইন করতে হয়- এমন প্রশ্নে মেজর জাহাঙ্গীর বলেন, ঢামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কেউ জড়িত কি না তা তদন্ত সাপেক্ষ। তবে আটক মো. আরিফ ঢামেক হাসপাতালের ওয়ার্ড বয়। তার সাথে আরও কয়েকজন জড়িত বলে আমরা জানতে পেরেছি।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে এ ব্যাপারে তিনি জবানবন্দি দিয়েছেন এবং সত্যতা শিকার করেছেন। তাদের বিরুদ্ধেও তথ্যপ্রমাণ সাপেক্ষে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মেডিকেল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মামলা দায়ের করা হবে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *