প্রতিকূলতা পেরিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু করেছে শিশুরা

Uncategorized চট্টগ্রাম জাতীয় জীবন-যাপন শিক্ষাঙ্গন সারাদেশ

সারিবদ্ধ ভাবে হাসিমুখে স্কুলে যাচ্ছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মেয়েরা।!! আগুনে শিক্ষাকেন্দ্র পুড়ে যাওয়া এবং ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাত সত্ত্বেও, রেকর্ড ৩,০০,০০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশু প্রথম দিনে স্কুলে উপস্থিত হয়েছে !! 


বিজ্ঞাপন

 

নিজস্ব প্রতিবেদক :  কক্সবাজার সোমবার ২৩ জুলাই, বাস্তুচ্যুতি, শিক্ষাকেন্দ্রগুলো আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাত কাটিয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের শ্রেণিকক্ষগুলো আজ স্কুলের প্রথম দিনে উচ্ছ্বসিত শিশুদের কোলাহলে পরিপূর্ণ। কিশোর-কিশোরী এবং মেয়েদের জন্য শিক্ষার সুযোগ বাড়ানোর ফলে ২০২৩/২৪ শিক্ষাবর্ষে রেকর্ড ৩,০০,০০০ শিশু নিবন্ধিত হয়েছে।

নতুন শিক্ষাবর্ষে প্রথমবারের মতো সব বয়সের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুরা মিয়ানমারের পাঠ্যক্রমে পড়াশোনা করবে। ২০২১ সালে চালু হওয়ার পর থেকে কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে এই আনুষ্ঠানিক পাঠ্যক্রমটি ধীরে ধীরে গ্রেড- ৩ থেকে গ্রেড- ৫ পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছে এবং আজ এটি প্রথমবারের মতো গ্রেড- ১০ পর্যন্ত চালু হচ্ছে। এই উদ্যোগ রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে বড়  ও ছোট- উভয় শিশুদের জন্য শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, ‘‘রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুরা শিখতে চায়। তারা তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশা ও স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে চায়। মিয়ানমারে এই শিশুদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- বাংলাদেশে থাকাকালীন তারা যেন তাদের শিক্ষা চালিয়ে যেতে পারে। প্রতিটি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুর জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আমি আমাদের সহযোগী ও দাতাদের ইউনিসেফের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করছি।’’

বড় শিশুদের জন্য নতুন এই সুযোগের পাশাপাশি, একটি সর্বাত্মক প্রচারাভিযানের মাধ্যমে স্কুলের বাইরে থাকা ১৩ হাজারের বেশি শিশুকে শ্রেণিকক্ষে আনা সম্ভব হয়েছে। এ বছর রেকর্ড উপস্থিতির মূলে কাজ করেছে, কিশোরীদের শিক্ষা চালিয়ে যেতে সহায়তা প্রদান। সামাজিক রীতিনীতির কারণে অভিভাবকরা প্রায়ই বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে চান না।

এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় অভিভাবকদের কাছে মেয়েদের শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরতে, শুধুমাত্র মেয়েদের জন্য শ্রেনীকক্ষ তৈরী করতে এবং নারীদের সহচার্যে কিশোরীদের স্কুলে পাঠাতে ইউনিসেফ ও তার সহযোগীরা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে শিক্ষা প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করা একটি বিশাল কর্মকাণ্ড। সহিংসতা ও নিপীড়নের কারণে ২০১৭ সালে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী, যাদের অর্ধেক শিশু, একটি ঘনবসতিপূর্ণ শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছে। সেখানে তিন হাজার ৪০০ শিক্ষাকেন্দ্রে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুদের শিক্ষা প্রদান কার্যক্রম চলছে , যার মধ্যে দুই হাজার ৮০০ শিক্ষাকেন্দ্র ইউনিসেফের সমর্থিত। আরও রয়েছে কমিউনিটি বেসড লার্নিং ফ্যাসিলিটি।

শরণার্থী শিবিরে স্কুলের প্রথম দিনে, ইউনিসেফ ২০২৩/২৪ শিক্ষাবর্ষে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় জরুরিভিত্তিতে ৩ কোটি ৩০ লাখ ডলারের জন্য আবেদন করেছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *