মো:রফিকুল ইসলাম,নড়াইলঃ
‘চিত্রা আমার নদী,বইছে নিরবধি,শ্লোগানকে সামনে নিয়ে নড়াইলে এস এম সুলতানের ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে জেলা প্রশাসন ও এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের আয়োজনে বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে নৌকা বাইচের উদ্বোধন করা হয়। এস এম সুলতানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শহরের চিত্রা নদীতে এ নৌকা বাইচের আয়োজন করা হয়েছে। এ নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে নদীর দুই পাড়ে সৃষ্টি হয় আনন্দ-উৎসব। নৌকা বাইচে নারীদের চারটি নৌকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ১২টি নৌকা অংশগ্রহণ করে,এর মধ্যে টালাই গ্রুপে চারটি নৌকা,কালাই গ্রুপে,চারটি ননৌকা ও মহিলা গ্রুপে’র চারটি নৌকা অংশগ্রহণ করে। নড়াইল শহরের চিত্রা নদীর শেখ রাসেল ব্রীজের নিচে পুরাতন ফেরিঘাট এলাকা থেকে এস এম সুলতান সেতু পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার অংশজুড়ে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা সম্পন্ন হয়।
দুপুরে নৌকাবাইচ শুরু হলেও সকাল থেকেই বিভিন্ন পেশার মানুষ নদীর দুই পাড়,বাসা বাড়ি ও রূপগঞ্জ বাজারের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে’র ছাদসহ গাছে গাছে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। নদীতে নৌকা, ট্রলার,স্পিডবোটসহ বিভিন্ন বয়সের হাজারো মানুষ উপভোগ করেন,নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা। নৌকা বাইচ উপলক্ষে চিত্রা নদী’র পাড়ে বাঁধাঘাটে এবং বিভিন্ন স্থানে মিষ্টিসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা বসেছিলো। সুষ্ঠু-সুন্দর ভাবে প্রতিযোগিতা শেষ করতে পেরে খুশি আয়োজক’রা। খুশি অংশগ্রহণকারী’রা। নৌকা বাইচ শেষে শহরের বাঁধাঘাট চত্বরের অস্থায়ী মঞ্চে বিজয়দের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন,প্রধান অতিথি খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি হাসানুজ্জামান। এসময় অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন,জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী। এসময় উপস্থিত ছিলেন,পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শাশ্বতী শীল,পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা,সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার,মুক্তিযোদ্ধা জনপ্রতিনিধি,রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ,এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী বৃন্দ প্রমূখ। এ প্রতিযোগীতায় পুরুষদের টালাই গ্রুপে প্রথম হয়েছে মাগুরার‘আকরাম খান’নৌকা,দ্বিতীয় হয়েছে তেরখাদা খুলনার‘ভাই ভাই জল পরী নৌকা ও তৃতীয় হয়েছে গোপালগঞ্জ জেলা টুঙ্গিপাড়ার‘জয় মা কালী নৌকা। পুরুষদের কালাই গ্রুপে প্রথম হয়েছে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার জোরারিয়ার নিকুঞ্জ কুমার মন্ডলের‘মা শীতলা নৌকা,দ্বিতীয় হয়েছে যশোরের জগন্নাথপুরের‘আব্দুল কাদের খান নৌকা এবং তৃতীয় হয়েছে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার নিছার এক্সপ্রেস নৌকা। এছাড়া মহিলা গ্রুপে প্রথম হয়েছে,
নড়াইল সদর উপজেলার হাতিয়াড়া গ্রামের‘গানের পাখি নৌকা,দ্বিতীয় হয়েছে নড়াইল সদর উপজেলার একই গ্রামের ‘চিত্রাকলি’এবং তৃতীয় হয়েছে নড়াইল সদরের গোয়াখুলা গ্রামের‘কুসুম কলি’নৌকা। এ প্রতিযোগিতায় টালাই ও কালাই গ্রুপের প্রথম স্থান অধিকারী নৌকাকে ৬০ হাজার টাকা,দ্বিতীয় স্থান অধিকারী নৌকাকে ৪০ হাজার টাকা ও তৃতীয় স্থান অধিকারী নৌকাকে ২০ হাজার টাকা এবং মহিলা গ্রুপের প্রথম স্থান অধিকারী নৌকাকে ১০ হাজার টাকা পুরষ্কার প্রদান করা হয়। এ ছাড়াও অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক নৌকাকে পাঁচ হাজার টাকা করে পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে।