নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শৃংখলার সঙ্গে ভোট কাস্ট, জনগনকে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে আসা এবং নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে যুবলীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। রোববার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার ওয়ারীরর সানাই কমিউনিটি সেন্টারে এক মতবিনিময় সভায় এ আহবান জানান তিনি।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ঢাকা-৬ নির্বাচনী এলাকায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের সঙ্গে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী যুবলীগ। সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. মাইন উদ্দিন রানার সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজার সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
ঢাকা-৬ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, ‘আমি যখন ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ছিলাম পুরান ঢাকায় পার্ক, খেলার মাঠ, কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণসহ ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেছি। আমার সাধ্যে যতটুকু ছিল আমি করেছি। কবরস্থানের উন্নয়ন এবং সংস্কারের পরে আমরা দাফন সম্পূর্ণ ফ্রি করে দিয়েছিলাম। সনাতন ধর্মাবলম্বী ভাইদের জন্য শ্মশানের দাহ ফ্রি করা হয়েছিল। তিনি বলেন, আল্লাহ আমাকে আবার সুযোগ দিলে এই এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকতে চাই। এ জন্য যুবলীগের নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ প্রতিটি ঘরে, পাড়া-মহল্লায় প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের কথা তুলে ধরবেন। আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরবেন। আমি মেয়র থাকা অবস্থায় যতটুক উন্নয়ন করেছি আমার সেই উন্নয়নের কথা তুলে ধরবেন। এর মাধ্যমে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করবেন।
সুখে-দুঃখে সব সময় পুরান ঢাকার জনগনের সঙ্গে ছিলেন জানিয়ে মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, করোনার সময়েও সুখে দুঃখে জনগনের পাশে ছিলাম। করোনার সময় যুবলীগ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ সবাইকে নিয়ে কাজ করেছি। মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের মাধ্যমেও আমরা হাজারো পরিবারের মাঝে খাদ্যদ্রব্য বিতরণ করেছি। তাই আমরা মনে করি এই এলাকার মানুষের ভোট আমাদের অধিকার।
ঢাকা-৬ আসনে দীর্ঘদিন নৌকা মার্কার প্রার্থী ছিলো না জানিয়ে মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, যারা বিগত সময়ে নৌকার সমর্থন নিয়ে জনপ্রতিনিধি হয়েছেন তারা আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। নৌকার সমর্থন নিয়ে সংসদে গিয়ে এই দুঃসময়ে সংসদে দাঁড়িয়ে আমাদের বিরুদ্ধে কথা বললো। এটা আমরা মেনে নিতে পারিনা। নৌকা থেকে নেমে গেলে পাঁচশ’ ভোট পেতেন কিনা সন্দেহ আছে। নৌকায় উঠে সংসদে গিয়ে বললেন এই বুড়া বয়সে নির্বাচনে গিয়ে গুনাহগার হতে চাইনা। আমাদেরটা খাইলেন, আমাদেরটা নিলেন মুখটা মুইছা টিস্যুর মতো ফেলে দিলেন। কর্মীদের তো দিলেনই না নেত্রীর সমালোচনা পর্যন্ত করতে ছাড়লেন না। তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে প্রত্যাখ্যানের সময় এসেছে। শুধুমাত্র এই এলাকাতেই নয়, সারা বাংলাদেশে তাদের প্রত্যাখ্যান করার সময় এসেছে। বেইমানির জবাব আমরা রাজনৈতিভাবে দিবো ইনশাআল্লাহ।
মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, আওয়ামী লীগকে শুধু রাজনৈতিক সংগঠন বলে মনে করিনা। এটা একটা পরিবার। আওয়ামী-যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ আমাদের পরিবার। আমরা শুধু বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী নয়, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক উত্তরসূরী। আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী শেখ হাসনিা শুধুমাত্র আমাদের রাজনৈতিক নেত্রী নয়, আমাদের পরিবারের অভিভাবক। আওয়ামী লীগ আমাদের পরিবার। আমাদের বাবা-মার যে মার্যদা, আমাদের কাছে প্রধানমন্ত্রীও একইভাবে মর্যাদাশীল। তাই এই পরিবারের একজন তৃণমূলের নেতাও যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে সবাই একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই দীর্ঘ চলার পথে আমরা অনেক চড়াই-উৎরাই দেখেছি। অনেক অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছি, আর নির্যাতন-অত্যাচার সহ্য করতে চাইনা।
সরকারের উন্নয়নরে কথা উল্লেখ করে সাবেক এই মেয়র বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এই ১৫ বছরে যে অর্জন তা বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের নেই। এটা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি। ঢাকা শহরের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। মেট্ররেল, এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ে, পদ্মা সেতুসহ এমন কোন উন্নয়ন যা প্রধানমন্ত্রী করেনি।