নিজস্ব প্রতিনিধি (মুন্সীগঞ্জ) : দেশ যখন দুর্নীতি আর দালালদের হাতে জিম্মি, তখন লৌহজং উপজেলার গাওদিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড যেন রীতিমতো দখলদারিত্বের রাজ্যে পরিণত হয়েছে। সুশীল সমাজ নীরব, প্রভাবশালীরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এই সুযোগে গজিয়ে ওঠা দালাল চক্রের শীর্ষে এখন আলোচিত নাম বাবুল আহমেদ ওরফে বাবু মোল্লা।

মুন্সীগঞ্জের গাওদিয়া গ্রামের মৃত মন্তাজ উদ্দিন মল্লার ছেলে বাবু মোল্লা এক সময় ভুইফোড় দালাল হিসেবেই পরিচিত ছিল। আজ সে হয়ে উঠেছে নারী নির্যাতন, ভয়-ভীতি, মারধর, দালালি আর তদবির বাণিজ্যের একক সম্রাট। তার হাতে নির্যাতিত গ্রামের নারী-পুরুষ কেউ রেহাই পাচ্ছে না।
গত ১৮ আগস্ট, দুপুর ১টার দিকে ঘটে তানিয়া নামের এক নারীর উপর ন্যাক্কারজনক হামলা। অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে, বাবু মোল্লা, তার ভাই লোকমান হোসেন মোল্লা এবং ভাবি ময়না মিলে তানিয়ার বাবার বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়। এলোপাতাড়ি মারধরে তানিয়া আহত হন। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে বাবু মোল্লা দলবল নিয়ে পালিয়ে যায় এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যায়।

এ বিষয়ে তানিয়া জানান, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকেই বাবু মোল্লা ও তার ভাইয়েরা এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছে। একাধিকবার তাকে হেনস্তার চেষ্টা করা হয়েছে। এমনকি তার ভাবি ময়না তাকে এডিট করা অশ্লীল ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা করে এবং অন্যদের বিরুদ্ধে ভুয়া বক্তব্য দিতে বাধ্য করতে চায়। রাজি না হওয়ায় নির্যাতনের শিকার হন তিনি। বর্তমানে তানিয়া নিজের বাড়িঘর ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছেন।

গ্রামের একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, বাবু মোল্লার পরিবার অপকর্মের আখড়া। নোংরামি, নারী কেলেঙ্কারি, অবৈধ সম্পর্ক, জমি দখল, তদবির ব্যবসা, সবই ওদের নিয়ন্ত্রণে। ভালো মানুষজন তাদের সাথে মিশে না। বাবু মোল্লা বেপারী বাড়ির মেয়ে বিয়ে করে কারনে দাপট দেখাচ্ছে। এখন যাকে খুশি হুমকি দেয়, মামলা-ঝামেলায় ফাঁসানোর ভয় দেখায়।
গ্রামবাসীর দাবি, ১৮ আগস্টের ঘটনায় বাবু মোল্লার সঙ্গে শুধু ভাই-ভাবিই নয়, আরও কয়েকজন সক্রিয় ছিল। এদের মধ্যে ছোট ভাই কালু, ভাতিজা আকাশ, ময়নার চাচাতো বোন আলো ও ময়নার ভাইয়ের বউ মাসুদা বেগমও হামলায় জড়িত ছিল।
এ বিষয়ে লৌহজং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওসমান গনি বলেন, অভিযোগ আমরা পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।