মো:রফিকুল ইসলাম,(নড়াইল) : নড়াইলে অনলাইন প্রতারনার দায়ে ২ অনলাইন প্রতারক চক্রের সদস্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের। জানা গেছে, গত (১৪ ডিসেম্বর) মোঃ রেজওয়ান সিদ্দিকি ইমরান (৩২) “ইলোরা ফ্যাশন” নামক ফেইসবুক পেইজে বিভিন্ন প্রকার কম্বলের বিজ্ঞাপন দেখে ১,৫৫০ টাকা মূল্যের ২টি কম্বল নেওয়ার জন্য অর্ডার দেন। প্রতারক চক্র তাকে ম্যাসেঞ্জারে কল দিয়ে কুরিয়ার খরচ বাবদ অগ্রিম টাকা চায় এবং ভুক্তভোগী তাদের কথা মতো “নগদ” একাউন্টে টাকা পাঠায়।
প্রতারক চক্রের সদস্যরা ডেলিভারীম্যান পরিচয় দিয়ে ভুক্তোভোগীকে কোম্পানী থেকে কোড নাম্বার সংগ্রহ করে তাকে দিতে বলে,কোড নাম্বার ছাড়া কোন কম্বল দেওয়া যাবে না। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী কোম্পানী থেকে কোড নাম্বার সংগ্রহের জন্য ফোন করলে প্রতারক চক্র পুনরায় টাকা চায়। এভাবে বিভিন্ন ছলচাতুরী করে প্রতারক চক্র ভুক্তভোগী মোঃ রেজওয়ান সিদ্দিকি ইমরানের নিকট হতে ৬টি ধাপে সর্বমোট ২৭ হাজার ৯০০ টাকা “নগদ” একাউন্টের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়।
কম্বল ক্রয় বাবদ টাকা পাওয়ার পর প্রতারক চক্র ভুক্তভোগীর কল রিসিভ করে না এবং কোন কম্বল প্রেরণ করে না। উক্ত ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে নড়াইল সদর থানায় এজাহার দায়ের করলে,নড়াইল সদর থানার মামলা নং ৮,তারিখ ০৮/০১/২০২৪ , ধারা-৪০৬/৪১৯/৪২০ পেনাল কোড আইনে একটি প্রতারণার মামলা রুজু হয়।
মামলা রুজু হওয়ার পর তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফিরোজ আহম্মেদসহ নড়াইল জেলার গোয়েন্দা শাখা ও সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম উক্ত প্রতারক চক্রকে সনাক্ত এবং আসামীদের গ্রেফতার করার জন্য তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে। যার প্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার ৯ জানুয়ারি ভোর ৪ টা ১০ মিনিটের সময় অনলাইন প্রতারক চক্রের সদস্য মোঃ শাহজালাল শেখ (২৭) এবং মোঃ শাহ্ জামান (২৩) উভয় পিতা-আঃ কুদ্দুস শেখ,মাতা-মোসাঃ রহিমা খাতুন, গ্রাম-যাদবপুর,থানা-কালিয়া,জেলা-নড়াইলদ্বয়কে নড়াইল জেলার কালিয়া থানাধীন যাদবপুর গ্রামের তাদের বসতবাড়ী হতে গ্রেফতার করা হয়।
আসামিদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৯টি মোবাইল ফোন ও ১৬টি বিভিন্ন ব্যক্তির নামে রেজিস্ট্রেশন করা মোবাইল সিম উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী’রা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এই চক্রটি দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষকে অনলাইনে বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
আসামিদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত মোবাইল সিমের বিকাশ একাউন্টের স্টেটমেন্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়,১/১/২০২৩ হতে ৩১/১২/২০২৩ পর্যন্ত ১ বছরে সর্বমোট ২৩,৪৫,৫৪৬ (তেইশ লক্ষ পঁয়তাল্লিশ হাজার পাঁচশত ছেচল্লিশ) টাকা লেনদেন করেছে। আসামী মোঃ শাহজালাল শেখ এর নামে ২০১৮ সালে ঢাকার কোতয়ালী থানায় এবং ২০২২ সালে হাজরীবাগ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক পৃথক ২টি প্রতারণার মামলা আছে।
নড়াইল পুলিশ সুপার মোহাঃ মেহেদী হাসান এর সঠিক দিক নির্দেশনায় জেলা পুলিশ নড়াইল জেলার সাধারণ মানুষের জান মালের নিরাপত্তার লক্ষে সর্বদা আন্তরিকভাবে কাজ করে চলেছে।