নিজস্ব প্রতিবেদক : গণপূর্ত ডিপ্লোমা প্রকৌশলী। গণপূর্ত অধিদপ্তরে উপসহকারী প্রকৌশলী পদে চাকরি শুরু করে পদোন্নতি পেয়ে সহকারী প্রকৌশলী ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) পদে দায়িত্ব পালন করেন। অনেকে আবার কথিত যোগ্যতায় নির্বাহী প্রকৌশলী পদেও পদোন্নতি পান। মাঠ পর্যায়ে সেকশন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে বিভিন্ন মন্ত্রী/এমপি, সচিবসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ও জেলা পর্যায়ে ডিসি এসপিদের অফিস বাসা-বাড়ির কাজ করাতে গিয়ে হয়ে উঠেন অনেক ক্ষমতাশালী। ফলে এদের বদলী করতে গিয়ে গণপূর্ত প্রশাসনকে কখনো কখনো নাকানি- চুবানি খেতে হয়। বদলী নিয়ে মিছিল-মিটিং আন্দোলন ইতোপূর্বে বহুবার হয়েছে। গণপূর্তে অনিয়ম দুর্নীতি আর লুটপাটের শেকড় বলা হয় তাদেরকে। তবে গণপূর্ত ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের শেকড় অতল গভীরে। এ কারণে গণপূর্ত ঢাকা মহানগর ও আশপাশের বিভিন্ন ডিভিশন, সার্কেল ও জোনে এক শ্রেণীর ডিপ্লোমা প্রকৌশলী রং পল্টিয়ে বছরের পর বছর এমনকি একযুগ দেড়যুগ যাবৎ ঘুরেফিরে বহালতবিয়তে আছেন। অনেকে আবার অবস্থা খারাপ দেখলে কিছুদিনের জন্য হাইবারনেশন পালন করেন। পরে সময় সুযোগমতো ফিরে আসেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, লীগ সরকারের বিগত ১৬ বছরে যারা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে গণপূর্ত’র মাঠ প্রশাসন দাবড়িয়ে বা দাপিয়ে বেড়িয়েছেন সময়ের পরিবর্তনে তাদের প্রায় সকলেই এখন কট্টর জাতীয়তাবাদী। যারা এক সময়ে পরিচয় দিতেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা, এখন তারা পরিচয় দিচ্ছেন ছাত্রদলের হয়ে। তারা আওয়ামী জার্সি ছুড়ে ফেলে দিয়ে এখন জাতীয়তাবাদের ইউনিফর্ম গায়ে জড়িয়ে ‘জিয়ার সৈনিক’ হিসেবে বুক ফুলিয়ে গর্বের সাথে পরিচয় দিচ্ছেন। বিগত ১৫/২০ বছর যাবৎ যারা ঘুরেফিরে ঢাকাতে আছেন তাদের একটি তালিকা কাছে এসেছে।
মাঠ পর্যায়ে দীর্ঘদিনের যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে তার কিছুঅংশ যথাক্রমে তুলে ধরা হলো, ঢাকা মেট্রোপলিটন জোনের সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মোল্লাহ প্রমোশন পেয়ে এ দপ্তরে আছেন প্রায় ২বছর যাবৎ। এর পূর্বে আ’লীগের ক্ষমতা ব্যবহার করে ঢাকা রক্ষণাবেক্ষণ ডিভিশনে শাখা কর্মকর্তা হিসেবে প্রায় অর্ধযুগ, উত্তরা এপার্টমেন্ট প্রজেক্টে তিন বছরসহ চাকরিজীবনের বেশীরভাগ সময়ে তিনি দাপটের সহিত ঢাকায় কাটিয়েছেন। জোনের আরেক সহঃ প্রকৌশলী আনোয়ারুল ইসলাম প্রায় ৭ বছর ছিলেন ২নং সার্কেলের প্রাক্কলনিক। প্রমোশন নিয়ে প্রয় ২বছর যাবৎ আছেন এই জোনে। ঢাকা জোনে সহকারী প্রকৌশলী রহমত উল্লাহ স্বৈরাচারের রহমতে ঢাকাতেই আছেন চাকরির প্রায় পুরোটা সময় জুড়ে।
সেকশন কর্মকর্তা হিসেবে জরিপ ডিভিশনে ছিলেন একযুগেরও বেশী সময়ে। সেখানে বেনামী ঠিকাদারী ব্যবসা থাকলেও লীগারদের আশীর্বাদে প্রমোশন নিয়ে ঢাকা জোনের চেয়ার দখল করে লেবাস পাল্টিয়ে জাতীয়তাবাদের জার্সি লাগিয়ে তিনি অতীতের ন্যায় নিজের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কতিপয় সহকর্মী জানিয়েছেন। ঢাকা গণপূর্ত ১নং বিভাগের অধীন উপসহকারী প্রকৌশলী আবু নাসের চৌধুরী প্রায় ১২ বছর যাবৎ একই সেকশনে। রাজারবাগ ১নং উপবিভাগকে নিজের ঘরবাড়ি বানিয়ে ফেলেছেন তিনি।
এ বিভাগের রাজারবাগ ২নং সাবডিভিশিনে মাবুদ পারভেজ একই পদে মিরপুরে প্রায় ৪ বছরসহ ঢাকায় ঘুরেফিরে আছেন প্রায় ১যুগ যাবৎ। ২নং বিভাগের অধীন ৩নং সাবডিভিশনে উপসহকারী প্রকৌশলী শাহনেওয়াজ (গোয়ালা শাহনেওয়াজ হিসেবে পরিচিত) আছেন প্রায় চাবছর যাবৎ। তিনি সিটি ডিভিশন, শেঃ বাঃ নঃ ১নং গণপূর্ত বিভাগসহ ঘুরেফিরে ঢাকায় আছেন প্রায় ১৫ বছর। একই সাবডিভিশনের মাসুদুল হাসান রক্ষণাবেক্ষণ ও মতিঝিল গণপূর্ত বিভাগ সহ ঘুরেফিরে ঢাকায় আছেন প্রায় ১ যুগ যাবৎ।
একই ডিভিশনের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঢাকা গণপূর্ত উপবিভাগ-২ এর মোহম্মদ মোর্শেদ খান একই চেয়ারে আছেন প্রায় ১১ বছর, এ সাবডিভিশনে প্রায় সাড়ে ৩ বছরসহ রিপন কুমার ঘোষ ৪নং ডিভিশনের হাইকোর্ট সেকশনের ৪ বছরসহ ঢাকায় আছেন প্রায় ১৫ বছর যাবৎ, ডিভিশনটির ধানমন্ডি উপবিভাগে উপসহকারী প্রকৌশলী আবু তাহের এই চেয়ারে তিনবছরের অধিকসহ ইতোপূর্বে প্রায় ৪ বছর ৪নং ডিভিশনের অধীন পূর্তভবনের দায়িত্বেসহ ঢাকায় আছেন প্রায় ১৩ বছর যাবৎ।
একই সাবডিভিশনের মুস্তাফিজুর রহমান ঘুরেফিরে ঢাকায় প্রায় ৮ বছর; ঢাকা ৩নং ডিভিশনের অধীন উপবিভাগ-৪ এর অধীনে কেন্দ্রীয় জেলখানার দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান ফারুকী একই চেয়ারে আছেন প্রায় ১ যুগেরও অধিক সময় ধরে। তার বিরুদ্ধে নতুন জেলখানার নির্মাণ কাজে দুর্নীতিসহ বিভিন্ন কেলংকারির অভিযোগ রয়েছে। গ্রামের বাড়ি যশোরে তিনি যাতায়াত করেন প্লেনে করে, ঢাকায় ২/৩টি এপার্টমেন্ট যশোর জেলা শহরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ নামে-বেনামেসহ কয়েক কাটি টাকার ভূ-সম্পদের মালিক তিনি।
এ ডিভিশনের তেজগাঁও সাবডিভিশনে উপসহকারী মুজাহিদুল ইসলাম প্রায় ৪ বছর যাবৎ একই চেয়ারে থাকাসহ ইতোপূর্বে ১নং ডিভিশনের ১নং উপবিভাগে প্রায় সাড়ে ৩ বছরসহ প্রায় ৯ বছর যাবৎ ঢাকায় আছেন। উপবিভাগটির আরেক সেকশন কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান প্রমাণিক ইতোপূর্বে ৪নং ডিভিশনের ইস্কাটনে ৪ ্ধসঢ়;বছর শেঃবাঃ নঃ প্রায় ৩্ধসঢ়;ছর সহ প্রায় ১যুগ যাবৎ ঘুরেফিরে ঢাকায়।
ডিভিশনটির খাদ্য উপবিভাগের অডিটভবন সেকশন কর্মকর্তা মাযহারের বিরুদ্ধে বেনামী ঠিকাদারী ব্যবসাসহ বিভিন্ন অনিয়ম- দুর্নীতি ভূয়া বিল-ভাউচারের অভিযোগ রয়েছে। তিনিঘুরেফিরে ঢাকায় আছেন একযুগেরও অধিক সময় ধরে।
নগর গণপূর্ত’র রমনা ২নং সাবডিভিশনের অধীন উপসহকারী সাজেদুল হক আছেন প্রায় তিনবছর যাবৎ, ইতোপূর্বে ৩নং বিভাগে প্রায় ৪ বছর ও মেডিকেল ডিভিশনের সলিমুল্লাহ সাবডিভিশনে প্রায় দেড় বছরসহ ঢাকায় ঘুরেফিরে আছেন প্রায় ১০বছর, সাবডিভিশনের আরেক সেকশন কর্মকতর্কা শফিকুল ইসলাম আছেন প্রায় ৩ বছরসহ ঢাকার বিভিন্ন ডিভিশনে ঘুরেফিরে প্রায় ১৫ বছর।
পূর্ত অধিদপ্তরের সর্বপেক্ষা মূল্যবান সেকশন নগর গণপূর্ত বিভাগের রমনা ১নং সাবডিভিশনের সদ্যসাবেক সেকশন কর্মকর্তা মনিরুজ্জমান, তার বদলী নিয়ে তুলকালাম ঘটে গেছে গণপূর্ত অধিদপ্তরে। সচিব কোয়ার্টার সেকশনের দায়িত্বে ছিলেন তিন বছরেরও অধিক সময় ধরে, ঢাকা ৩নং সাবডিভিশনের পাশপাপাশি সার্কেল-১ সহ এই মহানগীরর বিভিন্ন ডিভিশনে ঘুরেফিরে চাকরীজীবনের ৮০% সময় কাটিয়েছেন ঢাকায়। অবৈধ টাকার জোড়ে আওয়ামী রাজনীতির ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রী এপমি’দের প্রভাবে নিজের ভাইকে বানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান। ঢাকা মহানগরীতে ৩/৪টি এপার্টমেন্ট বরিশাল মহাগরীতে জায়গা-জমি, ঢাকা/বরিশালে ডেভলপার ব্যবসাসহ নামে-বেনামে রয়েছে অগাধ সহায়-সম্পদ।
গণপূর্ত ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতি বিতর্কিত হয়েছে তার ওই বদলী নিয়ে মিছিল মিটিং আন্দোলন করে। ৪নং ডিভিশনের ৫নং উপবিভাগের মোহাম্মদ সিরাজুম মুনীর সাব্ধেসঢ়;ক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর ক্লাসমেট পরিচয় দিয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন গোটা গণপূর্ত অধিদপ্তর। এ সেকশনে আছেন ৪ বছরেরও অধিক সময় ধরে, ইতোপূর্বে উত্তরা এপার্টমেন্ট প্রকল্প ৪নং ডিভিশনের ইস্টিমেটরসহ ১ যুগের অধিক সময় ধরে ঘুরেফিরে ঢাকায়। একই সাবডিভিশনে তার পাশ^¦বর্তী আরেক সেকশন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম ৪ বছরেরও অধিক সময় ধরে একই চেয়ার দখলে রাখাসহ ঘুরেফিরে ঢাকায় আছেন প্রায় ১যুগ।
একই ডিভিশনের হাইকোর্ট সেকশনের উপসহকারী প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিন বর্তমান চেয়ারে ৫ বছরেরও অধিক সময়সহ ইতোপূর্বে রমনা ২নং উপভিাগের সাবেক কেন্দ্রীয় জেলখানায় দায়িত্বে দীর্ঘসময়ে থাকাসহ ঘুরেফিরে ঢাকায় আছেন ১৫ বছরেরও অধিক সময় ধরে। তার একটি হাতঘড়ির দামই ৩ লক্ষাধিক টাকা, বেনামী ঠিকাদারী ব্যবসাসহ বিবিধ অপকর্মের মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন এই ডিপ্লোমা প্রকৌশলী। বর্তমানে মির্জা আব্বাসের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন বুক ফুলিয়ে। অথচ ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী/এমপিদের সুপারিশে অগাধ সুযোগ-সুবিধা বাগিয়ে নিয়েছেন তিনি। সাবডিভিশনটির আরেক উপসহকারী প্রকৌশলী গাজী তৌহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে রয়েছে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ।
মেডিকেল কলেজে গণপূর্ত বিভাগের ঢাকা মেডিকেল সাবডিভিশনে উপসহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম, একই চেয়ারে আছেন প্রায় ৪ ব্ধসঢ়;ছর, ইতোপূর্বে মতিঝিল ডিভিশনে প্রায় ৫্ধসঢ়;ছরসহ চাকরি জীবনের প্রায় পুরোটা সময় ঘুরেফিরে ঢাকায়, আরেক শাখা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম প্রায় ৩বছর যাবৎ আছেন একই সেকশনে, বিগত দুই অর্থবছরে মেডিকেল কলেজের ৩২, ৩৮ ও ওপির ইস্টিমেট কেনাবেচা করে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ চাকরির অল্প সময়ে তিনি এখন কোটিপতি।
এই ডিপ্লোমা প্রকৌশলী ইতোপূর্বে প্রাক্কলনিক হিসেবে শেঃ বাঃ নঃ ৩নং ডিভিশনে ছিলেন প্রায় ৪ বছর, ইডেন গণপূর্ত বিভাগের ২নং সাবডিভিশনের মাহবুব-উল-আলম বর্তমান পদে প্রায় ৩বছর, ইতোপূর্বে ১নং সাবডিশিনে ছিলেন প্রায় ৪ বছর, আজিমপুর গণপূর্ত বিভাগে প্রায় ৪ বছরসহ ঘুরেফিরে ঢাকায় আছেন প্রায় দেড়যুগ যাবৎ, একই সাবডিভিশনে কামরুল হাসান বাদলআছেন প্রায় ৫ বছর যাবৎ, ইডেন ১নং সাবডিশিনেজামাল উদ্দিন মজুমদার আছেন প্রায় ৪ বছর যাবৎ, আরবরিকালচার গণপূর্ত বিভাগে প্রাক্কলনিক করিম (ক্ষ্যাপা করিম হিসেবে পরিচিত) আছেন প্রায় ৭ বছর যাবৎ, মাঝখানে একবার শেরে বাংলা নগরে বদলী হলেও তিনিসেখানে যোগদান করেননি, রক্ষণাবেক্ষণ সাবডিভিশন-১ এর নাঈম হোসেন আছেন প্রায় ৪ বছর যাবৎ, ডিভিশনটির ২নং সাবডিভিশনের গোপালী উপসহকারী প্রকৌশলী মহিউদ্দিন মোল্লা একই চেয়ারে আছেন প্রায় ৪বছর, তিনি ইতোপূর্বে প্রায় ৬বছর ছিলেন সম্পদ ডিভিশনে, সাবডিভিশনটির অপর উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান আছেন প্রায় ৫বছর যাবৎ, ডিভিশনটির সাবডিভিশন ৩ এর পলাশ তালুকদার একই চেয়ারে ৮বছরসহ ঘুরেফিরে ঢাকায় আছেন প্রায় ১০বছর।
শেরে বাংলা নগর ১নং গণপূর্ত বিভাগে শাহ মোঃ তৌফিকুর রহমান বর্তমান পদে আছেন প্রায় সাড়ে তিন বছর, ইতোপূর্বে গণভবনে ৪ বছর, পূর্ত ভবন সাবডিভিশনে ৪ বছরসহ ১৩ বছর যাবৎ ঘুরেফিরে ঢাকায়, এ সাবডিভশনের অপর সেকশন কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান ঘুরেফিরে ঢাকায় আছেন প্রায় ৮বছর যাবৎ, শেঃ বাঃনঃ ২নং সাবডিভিশনের ৩ জন শাখা কর্মকর্তাই ঘুরেফিরে ঢাকায় আছেন প্রায় ১ যুগ ধরে, ডিভিশনটির মেডিকেল সাবডিভিশনের ‘জ’ ও ‘আ’ অদ্যক্ষরের উপসহকারী প্রকৌশলীদ্বয় বর্তমান পদে প্রায় ৩/৬ বছরসহ ইতোপূর্বে মহাখালীসহ ঘুরফিরে ঢাকাতে আছেন প্রায় ১২/১৮ বছর ধরে, শেঃ বাঃ নঃ ৩নং সাবডিভশনের কামরুল হাসান দীর্ঘ ৬ বছরেরও অধিক সময় ধরে একই চেয়ারে, তিনি ঘুরেফিরে ঢাকায় আছেন প্রায় ১৬ বছর যাবৎ।
শেঃ বাঃ নঃ ৪নং সাবডিভিশনের সেকেন্দার জোবায়েদ আলী বর্তমান পদে ৩ বছরসহ ইতোপুর্বে মিরপুরে ৪ বছর সহকারে ঘুরেফিরে ঢাকায় আছেন প্রায় দেড়যুগ ধরে, মাঝেমধ্যে ঢাকার বাইরে বদলী হলেও ৫/৬ মাসের মাথায় বীরদর্পে ফিরে এসছেন ঢাকায়, একই সাবডিভিশনের অপর সেকশন কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বর্তমান পদে প্রায় ৩ বছরসহ ইতোপূর্বে রক্ষণাবেক্ষণ ডিভিশনে ৪ বছরসহ ঘুরেফিরে ঢাকায় আছেন ১০বছরেরও অধিক সময় ধরে, একই এলাকার ৫নং সাবডিভিশনের এবিএম সাজেদুল ইসলাম ও ইবনুল হাসানরা কোন সময়ে ঢাকার বাইরে ছিলেন এমন রেকর্ড খুঁজতে অনেক ঊর্দ্ধতন প্রশাসনকে হন্যে হয়ে রেকর্ড তল্লাশী করার প্রয়োজন হবে।
একই এলাকার ৬, ৭ ও ৮নং সাবডিভিশনের ২/১জন ছাড়া প্রায় সকল সেকশন কর্মকর্তাই সুবিধাভোগীদের তালিকায় আছেন, মহাখালী ডিভিশনের অধীন মহাখালী সবডিশিনের মাফিয়া সেকশন কর্মকর্তা মাসুদ রানা বর্তমান সেকশনে প্রায় তিন বছরসহ সিটি ডিভিশন নারায়ণগঞ্জ মতিঝিল মিলে চাকরিজীবনের প্রায় পুরোটা সময় ঢাকাতে, বেনামী ঠিকাদারী ব্যবসামহ চাকরিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ডেভলপার ব্যবসাসহ নামে-বেনামে ২০ কোটিরও অধিকসহায়-সম্পদের মালিক তিনি। অপর দু’জন সেকশন কর্মকর্তাও লীগ সরকারের সুবিধাভোগী হিসেবে পরিচিত। একই ডিভিশনের উত্তরা সাবডিভিশনের জুলফিকার আরেফিন মুরাদ আছেন প্রায় ৮ বছর যাবৎ।
মতিঝিল ডিভিশনের ১নং সাবডিভিশনের সেকশন কর্মকর্তা মনিরুল মোর্শেদ আছেন প্রায় ৮ বছর যাবৎ, সাবডিভিশন ২এর নুরুল কবীর, মাযহারুল ইসলাম ও মোহম্মদ মিজানুর রহমান ঘুরে ফিরে ঢাকায় আছেন চাকরিজীবনের বেশীরভাগ সময়, একই ডিভিশনের ঢাকা ৭নং সাবডিভিশনের অধীনে শাহ মোহামম্মদ আসাদুজ্জামান আছেন প্রায় ৫ বছর যাবৎ: আজিমপুর গণপূর্ত বিভাগের অধীনে ১নং সাবডিভিশনে আজমল হোসেন বর্তমান চেয়ারে প্রায় ৩ বছরসহ ইতোপূর্বে মহাখালীতে ২বছর সিটিতে ৪ বছর সহ ঘুরেফিরে ১৬ বছর যাবৎ ঢাকাতেই আছেন, আরেক সেকশন কর্মকর্তা ওমর ফারুখ মাফিয়া হিসেবে ডিপ্লেমা প্রকৌশলীদের মধ্যে পরিচিত, আজিমপুর ২নং সাবডিভিশনে উপসহকারী প্রকৌশলী মমিনুল ইসলাম (ব্ধুসঢ়;দ্ধিজীবী মোমিন) তুষার আলম (ঢাকা ও মানিকগঞ্জে বাড়িসহ নামে-বেনামে কমপক্ষে ১০ কোটি টাকার মালিক, বেপরোয়া ড্রিকিংসহ বিভিন্ন ধরণের অসামাজিক কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে), আল আমিন সকলেই দীর্ঘ সময় ধরে ঘুরেফিরে ঢাকায় আছেন।
মিরপুর ডি ভিশনের ১নং সাবডিভিশনে সেকশন কর্মকর্তা হারাধন দত্ত আছেন তিনবছরেরও অধিক সময় ধরে, চাকরির মাত্র ১০ বছরের ব্যবধানে তিনি এখন কোটিপতি, ডিভিশনটির ২নং সাবডিভিশনে উপসহকারী প্রকৌশলী শাহজাহান কবীর আছেন প্রায় ১০ বছর, একই সাবডিশিনের অপর সেকশন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ঘুরেফিরে ঢাকায় আছেন চাকরির শুরু থেকেই, কদাচিৎ বাহিরে থাকলেও ৬মাস বা ১ বছরের বেশী তাকে থাকতে হয়নি। তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ হচ্ছে-তিনি যেখানেই বড় প্রজেক্ট দেখেন সেখানেই পোষ্টিং বাগিয়ে নেন। মিরপুর ৩নং সাবডিভিশনে এসএম আবু সায়েম একই চেয়ারে ৭ বছরেরও অধিকসহ ঘুরেফিরে ঢাকায় আছেন চাকরির বেশীরভাগ সময়ে।
সাভার ডিভিশনের ২নং সাবডিশিনের স্মৃতিসৌধ সেকশনকে প্রায় আজীবনের জন্য লিজ নিয়েছেন উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান, তিনি একই সেকশনে প্রায় ১৪ বছর যাবৎ থেকে স্মৃতিসৌধ এলাকার জায়গা-জমি ভাড়া খাটিয়ে দুই কোটিরও অধিক টাকা কামিয়েছেন বলে সহকর্মীরা বলাবলি করছেন।ডিভিশনটির ১নং সাবডিভিশনের উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুল মুত্তালিব বর্তমান চেয়ারে প্রায় ৩ বছরসহ চাকরিজীবনের সিংহভাগ সময়ে ঘুরেফিরে ঢাকায়।
বিভিন্ন সার্কেল ও জোনের ইস্টিমেটর (প্রাক্কলনিক),স্টাফ অফিসার পদেও অনেকে ঘুরেফিরে ৮/১০/১২ বছর যাবৎ ঘুরেফিরে ঢাকাতে রয়েছেন। ঢাকা গণপূর্ত সার্কেল ২ এর ইস্টিমেটর মাহবুবা খাতুন, একবই চেয়ারে আছেন ৪ বছরেরও অধিক সময় ধরে। তার কাছে ইস্টিমেট গেলে নির্ধারিত পার্সেন্টেজের চেয়ে ১/২% বেশী টাকা রাখার অভিযোগ রয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণ সার্কেলে (প্রায় ৬বছর) থাকতে এ নিয়ে ঠিকাদারদের সাথে প্রায়ই ঝগড়া করতে দেখা গেছে তাকে। ইস্টিমেটের ভুল-ত্রুটি বের করে ঠিকাদারকে ডেকে অতিরিক্ত অর্থআদায় করা তার জন্য কোন ব্যাপারই নয়।
অপর প্রাক্কলনিক নবীনুর রহমান জোয়ার্দার একযুগেরও বেশী সময় ধরে একই চেয়ারে। তার সুবিধা হচ্ছে-কপালে দাগসহ তিনি ইসলামী লেবাস গায়ে লাগিয়ে মুখে দাড়ি রেখে নির্ধারিত পার্সেন্টেজ কড়ায়-গন্ডায় হিসেবে করে বুঝে নিচ্ছেন। সার্কেলের স্টাফ অফিসার রফিকুল ইসলাম প্রায় (২বছর ধরে) প্রাক্কলনিক হিসেবে এই সার্কেলে ছিলেন প্রায় ৯ বছর। অপর স্টাফ অফিসার জহিরুল ইসলাম (প্রায় ৪ বছর) ইতোপূর্বে ধানমন্ডি সাবডিভিশনে প্রায় ৩বছরসহ কালেভাদ্রে ঢাকার বাইরে গেলেও ফিরে এসেছেন গর্ব সহকারে। ৩নং সার্কেলের স্টাফ অফিসার ইব্রাহিম খান প্রায় ৪বছরেরও অধিক সময় ধরে একই চেয়ারে থাকার পাশাপাশি একই সার্কেলে আছেন প্রায় ৯ বছর।
৪নং সার্কেলের স্টাফ অফিসার আবু সুফিয়ান চাকরিজীবনের প্রায় ৮০ভাগ সময় ঘুরে ফিয়ে ঢাকায়। একই সার্কেলের প্রাক্কলনিক শাহাদত হোসেন ১ যুগেরও অধিক সময় ধরে আছেন একই চেয়ারে। সাভার সার্কেলের প্রাক্কলনিক দিলরুবা বেগম, একই চেয়ারে আছেন আছেন প্রায় ৯বছর।
রক্ষণাবেক্ষণ সার্কেলের স্টাফ অফিসার খান শাহীন হোসেন বাগেরহাটে বাড়ি হওয়ার সুবাদে গোপালগঞ্জের প্রভাব খাটিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সেকশন কর্মকর্তা হিসেবে প্রায় অর্ধযুগ, পরবর্তীতে প্রমোশন নিয়ে এই সার্কেলে প্রায় ৩ বছরসহ প্রায় ১৫ বছর ঘুরেফিরে ঢাকাতেই আছেন।
একই সার্কেলের প্রাক্কলনিক আখলিমা বেগম প্রায় ১ যুগ যাবৎ আছেন একই চেয়ারে। আরো অনেক ডিপ্লোমা প্রকৌশলী আছেন যারা ঘুরেফিরে একযুগ দেড়যুগ যাবৎ ঢাকার বিভিন্ন ডিভিশন সার্কেল ও জোনে অবস্থান করছেন।