তাহিরপুরে তোপের মুখে কয়লাসহ নৌকা আটক করেছে বিজিবি

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় প্রশাসনিক সংবাদ বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ সিলেট

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি  : সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বিভিন্ন সীমান্তে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চোরাকারবারী ও তাদের গডফাদার। তারা ভারত থেকে অবৈধ ভাবে পাথর ও কয়লাসহ অস্ত্র,মাদকদ্রব্য পাচাঁর করছে। আর সেই অবৈধ মালামাল পাচাঁর করতে গিয়ে এপর্যন্ত শতাধিক লোকের মৃত্যু হয়েছে। তাই সীমান্তের চিহ্নিত চোরাকারবারী ও তাদের গডফাদারকে গ্রেফতারের জন্য র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর সহযোগীতা জরুরী প্রয়োজন।


বিজ্ঞাপন

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো আজ মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) ভোর রাতে উপজেলার বালিয়াঘাট সীমান্তের লাকমা ও লালঘাট সীমান্ত দিয়ে পাচাঁরকৃত প্রায় ২শ মেঃটন কয়লা ইঞ্জিনের নৌকায় বোঝাই শুরু করে চোরাকারবারীদের গডফাদার তোতলা আজাদ ও তার সোর্স সেলিম মিয়া, রুবেল মিয়া, হাবিবুর মিয়াগং। অন্যদিকে একই সময়ে পাশে চারাগাঁও সীমান্তের লালঘাটের অংশে ওই গডফাদারের নির্দেশে তার সোর্স খোকন মিয়া, শরাফত আলী, সুরুজ আলী, আদম আলী, শামসু মিয়া, জাহের আলী, হারুন মিয়াগং আরো ২টি নৌকায় পাচাঁরকৃত কয়লা বোঝাই শুরু করে।


বিজ্ঞাপন

এখবর জানতে পেরে বালিয়াঘাট ক্যাম্পে নায়েক সজীব টহলে থাকা সৈনিকদের নিয়ে লালঘাট বড় মসজিদের সমানে গিয়ে চোরাকারবারী হাবিবুর মিয়াকে কয়লা বোঝাই স্টিলবডি ইঞ্জিনের নৌকাসহ আটক করে।ওই সময় ওপরের উল্লেখিত চোরাকারবারীরা লাটিসুটা নিয়ে বিজিবিকে নাজেহাল করার চেষ্টা চালায় এবং আটককৃত স্টিলবড়ি নৌকা ও চোরাকারবারী হাবিবুরকে নিয়ে যায়। এখবর পেয়ে চারাগাঁও ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং কয়লাসহ কাঠবডি ১টি নৌকা আটক করা হয়।

এর আগে বালিয়াঘাট সীমান্তের লাকমা এলাকায় ভারত থেকে কয়লা ও মাদক পাচাঁরের সময় সাবেক ক্যাম্প কমান্ডার জাফরের ওপর হামলা চালায় চোরাকারবারীরা। তার আগে চারাগাঁও ক্যাম্পের সাবেক কমান্ডার খাদেমুল ইসলামকে ও নাজেহাল করার চেষ্টা করে ওপরের উল্লেখিত চোরাকারবারী ও তাদের গডফাদার।

সীমান্ত চোরাচালান ও চাঁদাবাজি করে গত ৭বছরে প্রায় ১০কোটি টাকার মালিক হয়েছে গডফাদার তোতলা আজাদ। এছাড়া তার প্রধান সোর্স কলাগাঁও গ্রামের রফ মিয়া ৩কোটি, জঙ্গলবাড়ি গ্রামের সোর্স আইনাল মিয়া ২কোটি, বড়ছড়া এলাকার সোর্স আক্কল আলী ২কোটি, লাকমার গ্রামে সোর্স রতন মহলদার ১কোটি,লালঘাট গ্রামের সোর্স ইয়াবা কালাম দেড় কোটি ও চারাগাঁও এলাকার বাবুল মিয়া ১কোটি টাকার মালিক হওয়াসহ দুধেরআউটা গ্রামের জিয়াউর রহমান জিয়া,তার ভাই মনির মিয়াসহ আরো ১০জন সোর্স রয়েছে। তাদের নেতৃত্বে চোরাচালান করতে গিয়ে বালিয়াঘাট ও চারাগাঁও সীমান্তে এপর্যন্ত অর্ধশধাধিক লোকের মৃত্যু হয়েছে।

গত বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাত ৮টায় বালিয়াঘাট সীমান্তের লালঘাট ও লাকমা সীমান্ত দিয়ে চোরাকারবারী হাসিম মিয়া, জানু মিয়া, জিয়াউর রহমান জিয়া, মনির মিয়া, কামরুল মিয়া, রতন মহলদার ,শরীফ মিয়া, তিতু মিয়া ও ইয়াবা কালামগং প্রায় ৫শ মেঃটন কয়লা ও মাদকদ্রব্য পাচাঁর করে। পরে পাচাঁরকৃত মালামাল ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করে নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা নিয়ে যাওয়ার সময় মধ্যনগর থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩১ মেঃটন অবৈধ কয়লা বোঝাই নৌকাসহ গডফাদার তোতলা আজাদেও সোর্স চোরাকারবারী সালমান মিয়া (২২) ও জামিরুল ইসলাম (২৬) কে গ্রেফতার করে।

এব্যাপারে বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের সরকারী মোবাইল নাম্বারে (০১৭৬৯-৬১৩১২৭) কল করলে ফোন রিসিভ করে ক্যাম্পের কমান্ডার পরিচয় দিয়ে নাম প্রকাশ না করে বলেন- আমরা অভিযান চালিয়ে কয়লাসহ নৌকা আটক করতে সক্ষম হয়েছি, চোরাকারবারীরা আমাদের কোন ক্ষতি করতে পারেনি।

চারাগাঁও ক্যাম্প কমান্ডার আব্দুর রহিম বলেন- বালিয়াঘাট সীমান্তের অংশে চোরাকারবারীরা আমাদের বিজিবির কাজে বাঁধা দেওয়ার কথা জানতে পেরে দ্রæত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমি। সীমান্ত চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে দ্রæত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তাদের তালিকা তৈরি করে আমাদের উপরস্থ কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছি ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *