নিজস্ব প্রতিবেদক : শূন্য থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন জামালপুরের ক্যাসিনো সম্রাট ও ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম @ মুক্তা @ নিলয় খান । তিনি জামালপুর জেলার ইটাইল ইউনিয়নের শৈলেরকান্দা আকন্দ বাড়ী গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে । হঠাৎ করেই মমিনুল ওরফে মুক্তার কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। তার অবৈধভাবে গড়ে তোলা সম্পদ অর্জনের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার নিকট তদন্তের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী ।
বর্তমানে ৬০ লাখ টাকার ৩ টি হায়েজ গাড়ী, ৪০ লাখ টাকার ২ টি ট্রাক,৫ লাখ টাকার ১ টি আর ওয়ান ৫ মোটর সাইকেল, রাজধানীর উত্তরায় ২ টি ফ্ল্যাট, মুক্তাগাছা ভাবকির মোড়ে ২ কোটি টাকার সম্পত্তি, বিভিন্ন স্থানে একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ নিজ বাড়ীতে পিতা ও মাতা ও আত্মীয় স্বজনদের নামে ক্রয় করেছেন প্রায় ১০ কোটি সম্পত্তি । এ নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর শাকিল নামের এক যুবক জামালপুর জেলা সমন্বিত দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে মমিনুল প্রায় শত কোটি টাকার মালিক বলেও উল্লেখ্য করা হয়েছে।
জানা গেছে, জামালপুরে দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে অবৈধ ক্যাসিনো এজেন্টদের সম্পদের পরিমাণ। কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছেনা ক্যাসিনো সম্রাটদের কারসাজি। অবৈধ বেটিংসাইট পরিচালনা করে রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাচ্ছে ক্যাসিনো সম্রাটরা। জামালপুরের সদর উপজেলার ইটালি ইউনিয়ন তার অনুরূপ। চেহারা দেখে বোঝার উপায় নেই মাত্র ৩০ বছর বয়সে এজেন্টদের তালিকায় নাম লিখিয়ে অল্প সময়ে কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়েছেন মমিনুল ইসলাম মুক্তা ।
খোজ নিয়ে জানা যায়, অভাভের তাড়নায় ২০০৮ সালে ইটাইল ইউনিয়নের ইদ্রিস আলী তার স্ব পরিবার নিয়ে ঢাকায় গিয়ে রিক্সা চালক ও তার স্ত্রী রাজধানীর বিভিন্ন মানুষের বাসায় কাজ করে তাদের সংসার পরিচালনা করতেন । এর দীর্ঘ কয়েক বছর পরে তাদের ছেলে মমিনুল ওরফে মুক্তা অনলাইন ক্যাসিনো নেশায় জড়িয়ে পড়লে নাইজেরিয়ার এক এজেন্টের সাথে পরিচয় হলে তার সাথে প্রতারণা করে ৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে সম্পুর্ন পরিবার নিয়ে জামালপুরের ইটাইলে ইউনিয়নের শৈলেরকান্দায় নিজ বাড়ীতে চলে আসে।
এরপর স্থানীয় স্থানীয় ইমরান ও মঞ্জুর পাশাপাশি কিছু যুবলীগের বিভিন্ন নেতার ছত্রছায়ায় এলাকায় শুরু করে অনলাইন জুয়ার সাইট । আর এ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তার সহযোগী ইমরান ও খাদ্য ব্যবসায়ী মঞ্জু মিয়া তাকে বিভিন্ন সরকারী কর্মকর্তাদের নাম বিক্রি করে তাকে সহযোগিতা করে আসছে । এরপর ২০২৩ সালে ইটাইল ইউনিয়নের ৯ ওয়ার্ড যুবলীগের কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে স্থান পান ক্যাসিনো সম্রাট মমিনুল ইসলাম @ মুক্তা । এর আগে তিনি যুবলীগের সক্রিয় কর্মী থাকায় এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় তার প্যানা লাগানো ছিল অহ রহ।
শৈলের কান্দা এলাকার আল আমিন, মোহন,সুলাইমান, জমির মন্ডল এবং নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরো কয়েকজনে জানান, এক যুগ আগেও ছিলেন বেকার। অথচ এখন গাড়ি-বাড়ি-ফ্ল্যাট সবই আছে তার। মুক্তার এখন শত কোটি টাকার মালিক । তার তান্ডপে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। কেউ প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলায় ফাসানোর হুমকি দেয় । প্রতারণা করে জমিও কিনেছেন কয়েকজনের থেকে ।
বর্তমানে বিএনপির সাথে রাজনীতি করে বলে পরিচয় দিয়ে চলে । অথচ তিনি ৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন । কোটি কোটি টাকার মালিক সহ বিভিন্ন সম্পত্তি কিভাবে হলো এগুলো সঠিক তদন্তের মাধ্যমে মমিনুল ইসলাম মুক্তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানান স্থানীয় এলাকাবাসী ।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে মমিনুল ইসলাম @মুক্তাকে কল দিয়ে বক্তব্য চাইলে তিনি এডিয়ে গিয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি ।
তবে ইটাইল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আতিকুল ইসলাম জানান, এই ছেলেটাকে আমি চিনি না । যুবলীগ করে নাকি তাও জানি না । তবে তিনি বিএনপির বা অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কোন কর্মী না।
এদিকে জামালপুর পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে এ প্রতিবেদক মাসুদুর রহমানকে জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে অবৈধ কোন বিষয়ে জড়িত থাকলে খোজ খবর নিয়ে আইনী পক্রিয়ায় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।