সবচেয়ে বেশি কীটনাশকের ব্যবহার হার হয় ফল ও সবজিতে ——-অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন

Uncategorized জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক  : আজ সোমবার ৩০ ডিসেম্বর, দেশে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যগুলোর মধ্যে ফল ও সবজিতে কীটনাশকের ব্যবহার হার বেশি। আমাদের কৃষক শ্রেণি কীটনাকশ ব্যবহারে সাধারণত নিয়ম-কানুন অনুসরণ করে না। ফলে দেখা যায় খাদ্যপণ্যের মধ্যে শাক-সবজি ও ফলে কীটনাশকের উপস্থিতি বেশি পাওয়া যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন।


বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, দেশে উৎপাদিত কোন খাদ্য কতটুকু নিরাপদ তা জানা যায় না। তবে আমরা প্রত্যাশা হচ্ছে সব ধরনের খাবারই নিরাপদ থাকতে হবে।


বিজ্ঞাপন

আজ সোমবার (৩০) রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) কার্যালয়ে কর্তৃপক্ষের সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত মিট দ্যা প্রেস শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএফএসএ’র চেয়ারম্যান জাকারিয়া উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন৷ এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন, উপস্থিত ছিলেন বিএফএসএর সদস্য মাহমুদুল কবির মুরাদ ও মো. ওয়াহিদুজ্জামান প্রমুখ।

প্রবন্ধে ড. রুহুল আমিন বলেন, জাতিসংঘের এসডিজি গোল ২ এ খাদ্য নিরাপত্তা ও নিরাপদ খাবারের ব্যাপারে বলা হয়েছে। তিনি দেশের মানুষের খাদ্যে ফল গ্রহণ সম্পর্কে বলেন, গ্রামের মানুষ ২৩.৮ ও শহরে ৩৮ শতাংশ ফল খেয়ে থাকে। এটি বিভাগীয়ভাবে গ্রহণের ক্ষেত্রে বরিশালে ৪০.২, চট্টগ্রামে ১৭.৩, ঢাকায় ২৬.৫, খুলনায় ২৬.২, ময়মনসিংহে ৩৫.৮, ৪৮.৯, রংপুরে ৬০.১ ও সিলেটে ৪৫.৭ শতাংশ।

এদিকে গরুর মাংস ও পোলট্রি মাংস গ্রহণের ক্ষেত্রে গ্রামের মানুষ ১৫.৭, শহুরে ৩৩.১ শতাংশ, ডিম গ্রহণে গ্রামের মানুষ ১০.১, শহুরে ১৮.৯ শতাংশ, গ্রহণের গ্রামের মানুষ ১৫.৭, শহুরে ৩৩.১ শতাংশ। তা ছাড়া দেশে ডিম, দুধ ও মাংসের উৎপাদন বেড়েছে। সেখানে ধনীদের এটি গ্রহণের হার ৭ শতাংশ ও গরিব মানুষের খাদ্য গ্রহণের হার মাত্র ২ শতাংশ।

ফুড সেফটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সম্পর্কে বলেন, বিদেশে রপ্তানি করতে হলে নিরাপদ খাদ্য রপ্তানি করতে হবে। তা না হলে বিদেশুরা আমাদের পণ্য কিনবে না।

তিনি বলেন, তিনভাগে খাদ্য নিরাপদতা নির্ভর করে। তার মধ্যে রয়েছে পাবলিক ফুড সেফটিং, থার্ড পার্টি ও ন্যাশনাল পর্যায়ে।
দেশে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের হার কতটুকু এক প্রশ্ন
সম্পর্কে তিনি বলেন, কোন খাদ্য কতটুকু নিরাপদ তা জানা যায় না। তবে ফল ও সবজিতে কীটনাশকের ব্যবহার বেশি।

কীটনাশক ব্যবহার সম্পর্কে জাকারিয়া বলেন, সবজিতে কীটনাশক সরাতে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখলে কিছুটা কমে। বেশি অনিরাপদ বা ক্ষতিকারক খাদ্য এড়িয়ে চলতে হবে। যেমন কলিজা জাতীয় খাবার। এ খাবার পরিমাণে কত খেতে হবে।
নিজেদের বল সম্পর্কে তিনি বলেন, সারাদেশে ২৪৮ জনবল নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এটি বাড়ানোর ব্যাপারে কাজ করা হচ্ছে। তা ছাড়া খাদ্যের নিরাপদতা পরীক্ষায় বৈদেশিক অনুদানের মাধ্যমে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় আরো ৩টি ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হবে। তাতে ৩১৮ টি পদে লোকবল নিয়োগের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খাদ্য নমুনা পরীক্ষা করা নিয়মিত কাজ। প্রতিটি জেলা অফিসকে মাসে কমপক্ষে ২টি নমুনা পাঠানোর নিয়ম রয়েছে। নিরাপদ শাক-সবজি আসলেও বাজারের পরিবেশের কারণে তা দূষণের কবলে পড়ে। এক্ষেত্রে বাজারগুলোর পরিবেশ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে কোন উদ্যোগ রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি স্থানীয় সরকার ও পৌরসভার দায়িত্ব। সেখানে আমাদের কাজ করার সুযোগ কম।

অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খোলাবাজারে পণ্যের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা কঠিন। কেননা এটা তারা উৎপাদন করে না। তবে রেস্টুরেন্টে ভেজাল খাবার দেয় কিনা তা আমরা ধরে থাকি। আর ভেজাল পাওয়া গেলে কর্তৃপক্ষ কাউকে ছাড় দেয় না। তা ছাড়া রেস্টুরেন্ট বন্ধ করার ক্ষমতা আমাদের নেই, তা আদালতের ওপর নির্ভর করতে হয়। এদিকে কুষ্টিয়ায় মসলায় চক পাউডারের উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি। কয়েক মাস আগে একটা কোমল পানীয়ের মধ্যে ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া গেছে। তা নিয়ে আমরা ব্যবস্থা নিলে তারা আদারতের দারস্থ হয়ে অনুমোদন নিয়ে নিয়েছে। এটা আমাদের সীমাবদ্ধতা।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *