নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর ভাটারায় আদালতের আদেশ অমান্য করে বলপূর্বক মাসুদ খান নামের এক ব্যক্তি কর্তৃক অপরের জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জমির মালিক নূর নবী ভূইয়া বাধা দিতে গেলে মাসুদ খানের লোকজন তাকে মারধর করে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এতে সংশ্লিষ্ট ভাটারা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেও মেলেনি কোন সুরাহা। উল্টো আদালতের আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিনরাত নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে মাসুদ বাহিনী।
জানা যায়, ডিএনসিসি ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের ভাটারা মৌজার সাঈদ নগর এলাকার ২৬৮৬নং সিএস/এসএভুক্ত এবং আরএস দাগ নম্বর ৬৯৬৬, ৬৯৬৮, ৬৯৬৯, ৬৯৭০সহ মহানগর জরিপের ১৫২১৮নং দাগের মোট এক একর একান্ন শতাংশ জমি ঘিরে দীর্ঘদিন ধরেই আদালতে মামলা (মামলা নং- নং-৮২৮/২৫) চলমান রয়েছে। ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি করা ওই মামলায় নালিশী জমির দখলদারিত্বের উপর ‘স্থিতাবস্থা’ আদেশ জারি করেন ঢাকার ১ম যুগ্ম জেলা জজ আদালত। তবে আদালতের রায় অমান্য করে গত বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে অবৈধ বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ চালিয়ে যাচ্ছে মাসুদ খান ও তার লোকজন। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের আইনী পদক্ষেপ না থাকায় এরই মধ্যে প্লটের বেশির ভাগজুড়ে অবৈধ দেয়াল নির্মাণ সম্পন্ন করেছে অভিযুক্ত মাসুদ খান।
![](https://ajkerdesh.com/wp-content/uploads/2024/05/WhatsApp-Image-2024-05-31-at-21.07.07_c7f123fd.jpg)
ভুক্তভোগী জমির মালিক নুর নবী ভূইয়ার অভিযোগ, মাসুদ খান সন্ত্রাসী লোকজনকে সাথে নিয়ে আদালতের রায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আমার কেনা জমিতে দশ ফুট গাঁথুনি দিয়ে দেয়াল নির্মাণ কাজ করতেছে। বার বার থানায় গিয়েও আমি কোন প্রতিকার পাইনি।
মারধরের শিকার জমির মালিক নুরুন্নবী যুগান্তরকে জানায়, সেখানে আামার সাড়ে বিশ কাঠার উপরে কেনা জমি আছে। সকালে খবর পেয়ে আমি জমিতে গেলে মাসুদ খান তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাকে মারধর করেছে। যদি কখনো জমিতে আসি তাহলে সে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আমি ভাটারা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।
ভুক্তভোগীর স্ত্রী নুরুন নাহার বেগম জানান, এর আগেও মাসুদ খানের লোকজন আমাকে মারধর করে আমার নামে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে আমাকে আমার জমিতে যেতে দিচ্ছে না। এসব জানার পরও থানা পুলিশ চুপ আছে। এখন আমরা নিরুপায়।
এদিকে, আদালতের আদেশ অমান্য করে ওই জমিতে অবৈধ নির্মাণ তৎপরতার বিষয়টি স্বীকার করে ভাটারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম বলেন, আমি দুইবার টিম পাঠিয়ে ওই দিনই কাজ বন্ধ করেছি। আদালতের ‘স্থিতাবস্থা’কে মেয়াদোত্তীর্ণ দাবি করে প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘বিষয়টা অবগত আছি। উনার যেই নিষেধাজ্ঞাটা শুনলাম ওটার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। উনারে বলছি আরেকটা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আসেন।’ তবে মামলার নথিতে স্পষ্টভাবে ‘অত্র মোকদ্দমা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উভয়পক্ষকে নালিশী সম্পত্তির দখলের বিষয়ে স্থিতাবস্থার আদেশ’ উল্লেখ থাকার বিষয়টি নিয়ে ওসিকে প্রশ্ন করা হলে ওসি মাজহারুল ইসলাম প্রতিবেদককে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
অপরদিকে, আদালতের রায় উপেক্ষা করে বলপূর্বক অপরের জমি দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মাসুদ খান মুঠোফোনে প্রতিবেদককে বলেন, উনি (নুরুন নবী) আমার চাচাতো ভাইয়ের কাছ থেকে জমি কিনছে। আমার জায়গাতে আমি দখলে আছি। আদালতের স্থিতাবস্থা’ আদেশ অমান্য করে বাউন্ডারি নির্মাণের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে বিষয়টি তিনি বার বার এড়িয়ে যান। একই সঙ্গে ভুক্তভোগী নুরুন নবীকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন অভিযুক্ত মাসুদ খান।