আওয়ামীলীগের প্রেতাত্মা চিহ্নিত কর্মকর্তাদের দখলে  এলজিইডি : সারাদেশে আলোচনা ও সমালোচনাসহ নিন্দার ঝড় 

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

বিশেষ প্রতিবেদক  : বিগত ৫ আগস্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন সংগ্রামের ফলে সাবেক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা পালালেও তার দোসররা এখনও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সহ দেশের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে ঘাপটি মেরে থাকলেও থেমে নেই তাদের সকল অপকর্ম । তারা সুযোগ বুঝে লক্ষ্য অর্জনে ছলে, বলে, কলে, কৌশলে এমনকি বিগত সময়ের সকল প্রকারের অনিয়ম ও দুর্নীতি’র বিষয় টা ধামাচাপা দিতে বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে উপার্জন করা বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে নিজেদের টার্গেট পৃরণেও সক্ষম হচ্ছেন।


বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রীয় অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এই সকল আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রেতাত্মা চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এখন ম্যানেজিং প্রতিযোগিতায় নেমেছেন।


বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা পালালেও তারা বিভিন্ন প্রকারের কূটকৌশলী অপতৎপরতা চালিয়ে রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। আবার ক্ষমতার দাপটও দেখাচ্ছেন। অবৈধ অর্থের জোরে সবাইকে ম্যানেজ করে ফেলছেন বলেও জানা গেছে ।


বিজ্ঞাপন

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) বিগত আওয়ামী আমলে যারা গোপালগঞ্জ কিংবা টঙ্গীপাড়ার নাম ব্যবহার করে কর্মস্থলে রামরাজত্ব কায়েম করেছেন তারা এখনও সবাইকে ম্যানেজ করে আগের মতোই আছেন। কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। তারা বিগত সময়ে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট করে বিত্তশালী হয়েছেন।

এখন তারাই সেই অর্থ দিয়ে দুর্নীতিবাজদের ম্যানেজ করে ফেলছেন। অন্যদিকে দুর্নীতিবাজরা রাতারাতি ভোল পাল্টিয়েও ফেলেছেন। ফলে তিমিরেই থেকে গেলো গত ৫ আগস্টের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন সংগ্রামের বৈষম্য, পূরণ হয়নি হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতার লক্ষ ও উদ্দেশ্য।

সূত্র জানায়, এলজিইডির বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর রশীদ মিয়া গত ৪ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব নিয়েই স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার এপিএস মোঃ মোয়াজ্জেম হােসেনের অনুরোধে গত ৫ ফেব্রুয়ারি একজন চিহ্নিত ফ্যাসিবাদের দোসর পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তরে কর্মরত হিসাবরক্ষক আব্দুর রশিদ খানকে বাগেরহাট জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে বদলী করেছেন। যা নিয়ে এলজিইডির প্রধান কার্যালয়সহ এলজিইডির সারাদেশে অবস্থিত অফিস সমুহে তীব্র সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় বইছে।

বহুল আলোচিত ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা সরকারের বিশ্বস্ত সহচর পিরাজপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মহারাজ এবং তার আপন ছোট ভাই ভান্ডারিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিরাজের নগ্ন হস্তক্ষেপে পিরোজপুর জেলা এলজিইডিতে ভয়াবহ লুটতন্ত্র কায়েম করা হয় ঐ আমলে।

তাদের ক্ষমতার হাত এতটাই লম্বা ছিলো যে, এলজিইডির কোন প্রকৌশলীই সরকারি অর্থ রক্ষায় কার্যকর কোন ভূমিকা রাখতে পারেননি। পিরোজপুর জেলার সরকারি দপ্তরগুলোতে মহারাজ-মিরাজ এক মূর্তমান আতঙ্কে পরিনত হয় সেই আমলে। তাদের অন্যায় কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস ছিল না কারোরই। কিন্তু ৫ আগস্টের পর মিরাজ-মহারাজ পলাতক থাকলেও তাদের দোসররা এখনও সক্রিয়।

পিরোজপুর জেলা এলজিইডির সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী লুটেরা আব্দুস সাত্তার হাওলাদার ছিলেন মহারাজ-মিরাজের হাতের পুতুল। তারা যা বলতেন তাই করতেন সাবেক দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তার হাওলাদার। তবে তিনি এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। দুর্নীতিবাজ সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তার হাওলাদারকে আইনের আওতায় এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলে সচেতনমহল মনে করেন। চোরে চোরে মাসতুতু ভাই-এমন প্রবাদ বাক্য মহারাজ-মিরাজ ও সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তার হাওলাদারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বলে ভুক্তভোগীরা এমনটাই মত দিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় সম্পদ হরণকারী, লুটেরা মহারাজ-মিরাজের পৈতৃক বাড়ী ভান্ডারিয়া উপজেলায়।

এ কারণেই ভান্ডারিয়া উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে কর্মরত হিসাবরক্ষক আব্দুর রশিদ খান ফ্যাসিবাদ মহারাজ-মিরাজের আস্থাভাজন হয়ে দীর্ঘদিন তাদের কার্যক্রমে ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করে বিপুল পরিমাণ কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে নিজের আখের গুছাতে সক্ষম হয়েছেন।

জানা গেছে, ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ নেতাদের সুপারিশে এলজিইডিতে সহকারি হিসাবরক্ষক হিসেবে আব্দুর রশিদ খান যোগদান করেন। তার পৈতৃক নিবাস গােপালগঞ্জের টঙ্গীপাড়া এলাকায়। সেই সুবাধে উক্ত দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিবাদের দোসর আব্দুর রশিদ খান দ্রুত পদোন্নতিও পেয়ে যান। পদোন্নতির পাশাপাশি তার ক্ষমতার প্রভাবও বাড়তে থাকে। যে কারণে হিসাবরক্ষক আব্দুর রশিদ খান লুটেরা মহারাজ-মিরাজের খুবই আস্থাভাজন ছিলেন।

ফ্যাসিবাদ মহারাজ-মিরাজ পলাতক হলেও হিসাবরক্ষক আব্দুর রশিদ খানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে ভিন্ন মাধ্যমে। আর এই গোপন সম্পর্কের কথা জানাজানি হওয়ার ভয়ে তিনি তদ্বির করে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাগেরহাটে জেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে বদলী হয়েছেন। সূত্র জানায়, তিনি কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিকও হয়েছেন। যা দিয়ে এখন দুর্নীতিবাজদের ম্যানেজ করে ফেলছেন।

মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, তিনি উপদেষ্টার এপিএস মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেনকে ম্যানেজ করেই এলজিইডির নতুন প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর রশীদ মিয়াকে বদলীর আদেশ জারি করতে বাধ্য করেছেন।

এদিকে বিষয়টি গণমাধ্যমের নজরে আসলে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার এপিএস মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি গণমাধ্যম কে জানান, ‘হিসাবরক্ষক আব্দুর রশিদ খান যে ফ্যাসিবাদের দােসর তা আমার জানা নেই। এছাড়া তার মা অসুস্থ সেই জন্যই আমি প্রধান প্রকৌশলীকে বলেছি’।এলজিইডি সূত্র জানায়, এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেন এলজিইডিতে উপদেষ্টার নাম ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *