নিজস্ব প্রতিবেদক :
নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর পদক্ষেপে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান টানা বন্ধ থাকায় পাঠদানের ধারাবাহিকতা রাখতে মাধ্যমিকের পর প্রাথমিকের তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাসও সংসদ টিভিতে দেখানো হবে।
ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে এসব ক্লাস ধারণ করা হচ্ছে জানিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ফসিহউল্লাহ সোমবার বলেন, চলতি সপ্তাহের মধ্যে টিভিতে ক্লাস দেখানো শুরু করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।
‘আমার ঘরে আমার ক্লাস’ শিরোনামে ২৯ মার্চ থেকে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ক্লাস দেখানো শুরু করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
এই ক্লাস দেখে শিক্ষার্থীদের বাড়ির কাজ করে স্কুল খোলার পর তা সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের কাছে জমা দিতে হবে। এই বাড়ির কাজের উপর প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়নের অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফসিহউল্লাহ সোমবার বলেন, আমরা প্রতিদিনিই এনিয়ে (ক্লাস রেকর্ডিং) কাজ করছি। এখন শিক্ষকদের একসঙ্গে করার সুযোগ না থাকায় বিষয়ভিত্তিক গ্রুপ করে দিয়ে তাদের নির্দেশনা দিয়েছি।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ), কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ এবং ভিডিও কনটেন্ট তৈরিতে অভিজ্ঞ শিক্ষকদের ওইসব গ্রুপে রাখা হয়েছে, তারা প্রতিদিনই কাজ করছেন।
ফসিহউল্লাহ বলেন, আমরা আশা করছি সোম-মঙ্গলবার কিছু কনটেন্ট হাতে পাব। এরপর সেগুলো একটু পরীক্ষা করা হবে ঠিকঠাক আছে কিনা। কবে থেকে এসব ক্লাস প্রচার করা হবে তা দুই-তিনদিন পর জানিয়ে দেব।
বাসায় বসে শিক্ষকরা কীভাবে এসব ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করবেন সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রাথমিক শিক্ষার মহাপরিচালক বলেন, ব্যাকগ্রাউন্ড কেমন হবে সে বিষয়েও বলে দিয়েছি। শিশুদের পাঠ তাদের মত করেই তৈরি করা হচ্ছে। শিক্ষকদের তৈরি ভিডিওতে কিছু অ্যানিমেশন যুক্ত করা হবে।
সংসদ টিভির সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। এই টিভি ছাড়াও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মে এসব কনটেন্ট আপলোড করব।
আগে থেকে প্রাথমিকের অনেক মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট তৈরি করা আছে জানিয়ে ফসিহউল্লাহ বলেন, এখনকার কারিকুলাম ও টেক্সটের সঙ্গে মিল আছে সেসব কনটেন্টও প্রচারের জন্য বিবেচনায় আনা হবে।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মোবাইল নম্বর আমাদের কাছে আছে। আমরা তাদের নম্বরে ম্যাসেজ দিয়েছি। শিক্ষকদের বলা আছে, অফিসারদের বলা আছে, শিক্ষকদের মাধ্যমে তারা যেন অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, শিশুদের লেখাপড়াটা যেন একটু হলেও চালু থাকে সে বিষয়ে ম্যাসেজ দেন।
বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সময় ভিডিও কনফারেন্স সিস্টেম যেমন, গুগল ক্লাসরুম, জুম, হ্যাংআউট, স্কাইপের মত প্রযুক্তি ব্যবহার করে লাইভ ক্লাসরুমের মাধ্যমে পাঠদান পরিচালনা করতে প্রাথমিকের শিক্ষা কর্মকর্তাদের সম্প্রতি এক চিঠিতে নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
ডিজিটাল এডুকেশন সিস্টেমে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সহায়তা করতে অভিভাবকদেরও অনুরোধ জানানো হয়েছে।
করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই ভাইরাসের সংক্রমণ না কমলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি আরও বাড়বে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।