১০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ প্ল্যান্ট স্থাপনে রবি, ফ্রোসোলার ও গ্রিনপাওয়ার এশিয়ার ত্রিপক্ষীয় চুক্তি

Uncategorized অর্থনীতি কর্পোরেট সংবাদ জাতীয় ঢাকা বানিজ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  পরিবেশবান্ধব সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনে রবি আজিয়াটা পিএলসি, ফ্রোসোলার সল্যুশনস লিমিটেড ও গ্রিনপাওয়ার এশিয়া একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে। এর আওতায় একটি ১০০ মেগাওয়াট পিক (এমডব্লিউপি) সৌরবিদ্যুৎ প্ল্যান্ট নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য একটি স্পেশাল পারপাস ভেহিকল (এসভিপি) গঠন করা হবে। ইতোমধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সম্ভাব্য কয়েকটি স্থান সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। বিস্তারিত সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মাধ্যমে প্রকল্পের চূড়ান্ত স্থান নির্বাচন করা হবে।


বিজ্ঞাপন

এই সমঝোতা স্মারকের আওতায় রবি একটি কর্পোরেট পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্টের (সিপিপিএ) মাধ্যমে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী বিদ্যুৎ ক্রনয় করবে।


বিজ্ঞাপন

আজ বুধবার (৭ মে) ঢাকায় রবির করপোরেট অফিসে সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষরিত হয়। এমওইউতে স্বাক্ষর করেন রবি আজিয়াটা পিএলসির চিফ টেকনোলজি অফিসার (সিটিও), পেরিহান এলহামী আহমেদ মেতাওয়েহ: ফ্লোসোলার সল্যুশনস লিমিটেডের ফ্রোসোলারের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক: মোস্তফা আজিম কাসেম খান এবং গ্রিনপাওয়ার এশিয়ার প্রেসিডেন্ট। পিয়েরিক মোরিয়ে।


বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে রবি’র ভারপ্রাপ্ত সিইও এবং সিএফও রিয়াজ রাশিদ, চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলমসহ ফ্লোসোলার ও রবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া অনুষ্ঠানে ঢাকায় ফ্রান্স দূতাবাসের হেড অব ইকনোমিক ডিপার্টমেন্ট জুলিয়েন দুয়ে, ফ্লোসোলার সল্যুশনস লিমিটেডের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর তাশফিকুল আলম খান উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, এটি বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে একটি নবযাত্রার সূচনা। উদ্যোগটি নেওয়া সম্ভব হচ্ছে সরকারের প্রস্তাবিত মার্চেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট পলিসির কারণে। খসড়া ওই নীতিমালায় বলা হয়েছে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি ছাড়াই বিদ্যুৎ উৎপাদন ও গ্রাহকের কাছে সহজেই বিক্রির সুযোগ পাবে। শিগগিরই নীতিমালাটি অনুমোদন হওয়ার কথা রয়েছে।

রবি, ফ্লোসোলার ও গ্রিনপাওয়ার এশিয়ার এমওইউর আওতায় নেওয়া প্রকল্পটি বিল্ড-ওন-অপারেট (বিওও) মডেলে বাস্তবায়ন হবে। এটি রবির শূন্য কার্বন নিঃসরণ ও ক্লিন এনার্জির লক্ষ্য অর্জনে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। প্রকল্পটি বছরে প্রায় ৬৮,২০০ টন কার্বন নিঃসরণ কমাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অংশীদারত্বের উল্লেখযোগ্য দিক : ১০০ মেগাওয়াট পিক সৌর পার্ক নির্মাণ: একটি সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করা হবে, যার স্থান নির্ধারণ করা হবে সাবস্টেশনের ক্ষমতাসহ একাধিক বিষয় বিবেচনায় রেখে। পার্কটির উন্নয়ন, অর্থায়ন ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে স্পেশাল পারপাস ভেহিকেল (এসপিভি)। দীর্ঘমেয়াদি কর্পোরেট পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্ট (সিপিপিএ)-এর অধীনে রবি হবে এ প্রকল্পের একমাত্র ক্রেতা।

মার্চেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট সুবিধা: আগামী ৬ মাসের মধ্যে সরকারের নতুন প্রস্তাবিত নীতিমালা কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারের প্রস্তাবিত এ নতুন নীতিমালার সুবিধা গ্রহণ করে প্রকল্পটি মার্চেন্ট ভিত্তিতে পরিচালিত হবে। এটি হবে সুবিধাজনক এবং সম্প্রসারণের সুযোগও থাকবে।

.কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে রবি’র গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ: এই সৌর পার্ক রবি’র কার্বন ফুটপ্রিন্ট উল্লেখযোগ্যভাবে কমাবে, যা ২০৫০ সালের মধ্যে রবি’র শূন্য কার্বন নিঃসরণের লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে।

বিটিএস সাইটে সৌর শক্তি ব্যবহারের সম্ভাব্যতা যাচাই: একটি যৌথ সমীক্ষার মাধ্যমে রবির ১৬ হাজার বিটিএস সাইটে সৌর শক্তি ব্যবহার করার সম্ভাবনা পরীক্ষা করবে। এতে রবির নেটওয়ার্কের একটি বড় অংশকে নবায়নযোগ্য শক্তিতে রূপান্তর করা সম্ভব হবে।

ফ্রান্স থেকে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ ও স্থানীয় শক্তিশালী নবায়নযোগ্য জ্বালানি ডেভেলপারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ: এই প্রকল্পে অংশ নিচ্ছে ফ্রান্সের ভল্টা গ্রুপের সম্পূর্ণ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান গ্রীনপাওয়ার এশিয়া। ইতোমধ্যে তারা ১০০ মিলিয়ন ইউরো সংগ্রহ করেছে এবং তাদের ২০০ মেগাওয়াট পিক ক্ষমতার প্রকল্প চালু বা নির্মাণাধীন রয়েছে। পাশাপাশি ৫০০ মেগাওয়াট পিক ক্ষমতার প্রকল্প পাইপলাইনে রয়েছে। ফ্রোসোলার সল্যুশন লিমিটেড- একটি উদীয়মান নবায়নযোগ্য শক্তি প্রতিষ্ঠান, যারা বর্তমানে একটি ইপিসি কোম্পানি থেকে পূর্ণাঙ্গ প্রজেক্ট ডেভেলপার ও নবায়নযোগ্য শক্তির সম্পদ ব্যবস্থাপক হিসেবে রূপান্তরিত হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে রবি’র ভারপ্রাপ্ত সিইও এবং সিএফও রিয়াজ রাশিদ বলেন, “ফ্লোসোলার ও গ্রিনপাওয়ার এশিয়ার সঙ্গে একত্রে আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে একটি সাহসী দৃষ্টান্ত স্থাপন করছি, যা জলবায়ু সহনশীলতার পথে বাস্তব পরিবর্তন আনতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।”

এ বিষয়ে রবি’র সিটিও পেরিহান এলহামী আহমেদ মেতাওয়েহ বলেন, ‘এই অংশীদারত্ব আমাদের টেকসই যাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এটি উদ্ভাবন, নীতিগত ও কৌশলগত সহযোগিতার একটি যুগান্তকারী সংমিশ্রণ। সিপিপিএর মাধ্যমে ১০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ নিশ্চিত করে আমরা শুধু জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাচ্ছি না, বরং খরচ সাশ্রয় এবং পরিবেশ, সামাজিক ও সুশাসনগত (ইএসজি) দায়িত্বের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের টেলিকম খাতে অগ্রগামী ভূমিকা রাখছি।’

ফ্লোসোলারের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা আজিম কাসেম খান বলেন, ‘সরকারের উদ্ভাবনী নীতিমালার মাধ্যমে কীভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার দ্রুততর করা যায় এবং কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব- তার একটি দৃষ্টান্ত হবে প্রস্তাবিত এই সৌর পার্ক। এই প্রকল্পটি ভবিষ্যতের মার্চেন্টভিত্তিক নবায়নযোগ্য প্রকল্পগুলোর জন্য একটি মডেল হবে।’

গ্রিনপাওয়ার এশিয়ার প্রেসিডেন্ট পিয়েরিক মোরিয়ে বলেন, ‘রবি ও ফ্রোসোলারের সঙ্গে আমাদের এই সহযোগিতা নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনাকে জোরালোভাবে তুলে ধরছে। এই প্রকল্পটি জ্বালানি নিরাপত্তা ও টেকসই পরিবেশ নিশ্চিতের ক্ষেত্রে অবদান রাখবে।’ ###

রবি সম্পর্কে  :  রবি আজিয়াটা পিএলসি (‘রবি’) একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি যেখানে এশিয়ার টেলিযোগাযোগ বাজারের অন্যতম কোম্পানি মালয়েশিয়াভিত্তিক আজিয়াটা গ্রুপ বারহাদের সিংহভাগ মালিকানা (৬১.৮২%) রয়েছে। এছাড়া রবিতে পাবলিক শেয়ারহোল্ডারদের (১০%) পাশাপাশি বিশ্ব টেলিযোগাযোগ বাজারের অন্যতম কোম্পানি ভারতী এয়ারটেলের (ভারত) শেয়ার রয়েছে ২৮.১৮%। রবি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর। দেশের মানুষের জন্য প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ডিজিটাল সেবা আনছে কোম্পানিটি। দেশের প্রতিটি প্রান্তে উদ্ভাবনী সেবা পৌঁছে দেয়ার উদ্দেশে রবি অব্যাহত বিনিয়োগের মাধ্যমে শক্তিশালী টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো গড়ে তুলেছে। দেশজুড়ে থাকা এ অবকাঠামো ডিজিটাল পণ্য ও সেবা সরবরাহের পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল প্রতিবেশ গড়ে তুলতে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। শহর কিংবা গ্রাম যেখানেই হোক রবির হাত ধরে ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে হাটছে দেশবাসী।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *