অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি : “দক্ষ যুব গড়বে দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ” স্লোগানে যশোরের অভয়নগর উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ৫ দিন ব্যাপী ইমপ্যাক্ট (বায়োগ্যাস) প্লান্ট স্থাপন প্রশিক্ষণ’র শুভ উদ্বোধন করে তা সফলভাবে প্রশিক্ষণ সমাপ্তি করা হয়েছে। বুধবার (৭ মে) সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এলাকার বিভিন্ন পেশার যুবকদের অংশ গ্রহনে বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন প্রশিক্ষণ’র শুভ উদ্বোধন করা হয়।

গত সোমবার (১৯ মে) প্রশিক্ষণে অংশ গ্রহনকারী সকল প্রশিনার্থীদের উপস্থিতিতে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সনদ, সম্মানী ভাতা, দুপুরে উন্নত মানের খাবার বিতরনের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের সমাপ্ত করা হয়েছে। দারিদ্র বিমোচনের লক্ষ্যে ব্যাপক প্রযুক্তি নির্ভর সমন্বিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা (ইমপ্যাক্ট) ৩য় পর্যায় (১ম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৫ দিন ব্যাপী বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন বিষয়ক প্রশিক্ষণের আয়োজন করেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। তারই ধারাবাহিকতায় ৫ দিন ব্যাপী পরিবেশ বান্ধব জ্বালানী বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন প্রকল্পের প্রশিক্ষণের সফল ভাবে সমাপ্তি করা হয়েছে।

এ সময়ে উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসার মো: শাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন যশোর জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো: সেলিমুজ্জামান। সমাপনী দিনে শুভেচ্ছা বক্তব্যে’র সঞ্চালনা করেন উপজেলা সহকারী যুব উন্নয়ন অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমান।

এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী যুব উন্নয়ন অফিসার মোছা: শাহাজাদী বেগম। ইমপ্যাক্ট (বায়োগ্যাস) প্রকল্পের অভয়নগর থানার সুপার ভাইজার মো: হাফিজুর রহমান প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষক হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন। বাড়ির আঙ্গিনায় বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা এবং জ্বালানী খরচ কমাতে কার্যকারী বিষয় গুলো তিনি সকলের সামনে আলোচনার মাধ্যমে তুলে ধরেন। ফলে বেশ কয়েকজন প্রশিক্ষনার্থী বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করবেন বলে জানান।
তারমধ্যে বুইকারা বাঘাবাড়ি এলাকার প্রশিক্ষনার্থী আল হেলাল শুভ বলেন, আমাদের বাড়িতে ২টি বড় গরু আছে। আমি ওই গরুর মল অথবা গোবর দিয়ে একটি বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করে পরিবারের জ্বালানি খরচ কমাতে চাই। বায়োগ্যাস এর উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে বিষয় টি আমার কাছে সহজ মনে হচ্ছে। এজন্য যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কতৃপক্ষ কে কৃতজ্ঞতা সহ ধন্যবাদ জানাই। বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন প্রশিক্ষণে ২০ জন নারী-পুরুষ নিয়ে একটি ব্যাচ তৈরি করা হয়েছে। এ বছর ইমপ্যাক্ট (বায়োগ্যাস) প্রকল্পের উপর মোট ৪টি ব্যাচে ৮০ জন নারী-পুরুষ প্রশিক্ষণ নিবেন।
তারমধ্যে ২টি ব্যাচে ২০ জন করে মোট ৪০ জন নারী-পুরুষ ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা নিজের বাড়িতে গরুর মল অর্থাৎ গোবর দিয়ে বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করে লাভবান হয়েছেন।
তাদের পরিবারে এখন আর বাড়তি জ্বালানি খরচ নেই। এই বিষয়ে উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য পূর্বের প্রশিনার্থীরা কৃতজ্ঞতা সহ ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সোমবার বিকালে ৪র্থ ব্যাচের প্রশিক্ষণের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।
প্রতিটি ব্যাচে ২০ জন করে মোট ৪টি ব্যাচে ৮০ জন নারী-পুরুষ নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে এ বছর ইমপ্যাক্ট (বায়োগ্যাস) প্লান্ট স্থাপন প্রকল্পের সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে বলে উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান।
প্রশিক্ষণের শুরুতে প্রতিটি প্রশিক্ষনার্থীকে উন্নতমানের একটি ব্যাগ, একটি খাতা, একটি কলম ও খাবার দেওয়া হয়েছে এবং প্রশিক্ষণ শেষে তাদেরকে সম্মানী ভাতা ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সনদ প্রদান করা হয়। এরপর যদি কোনো প্রশিক্ষনার্থী অর্থ সংকটে বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করতে না পারে। সেক্ষেত্রে তাকে অর্থ সহায়তা করা হবে।