গোপালগঞ্জে গ্রেফতার ৩ শতাধিক, জেলা কারাগারে অতিরিক্ত বন্দী  :  পাঠানো হয়েছে বিভিন্ন কারাগারে 

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত খুলনা গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় প্রশাসনিক সংবাদ বিশেষ প্রতিবেদন রাজনীতি সংগঠন সংবাদ সারাদেশ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি :  গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে সহিংসতার পর যৌথ বাহিনীর অভিযানে ৩ শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে  জারি করা কারফিউ শনিবার সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১৪ ঘণ্টার জন্য শিথিল করা হলেও জনমনে আতঙ্ক কাটেনি। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অধিকাংশ মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। শহরের বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে এবং রাস্তায় জনসাধারণের উপস্থিতি খুবই কম। আজ রবিবারও জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এইচএসসি পরীক্ষা ও সরকারি অফিস ১৪৪ ধারার আওতা মুক্ত রয়েছে।


বিজ্ঞাপন

শহরের চৌরঙ্গী, বটতলা, কালিবাড়ী, বিসিক, লঞ্চঘাট ও থানাপাড়া এলাকা ঘুরে দেখা গেছে—কিছু মানুষ প্রয়োজনীয় কাজে বের হলেও পরিবহন ও যাত্রী সংকট রয়েছে। রিকশাচালকরা যাত্রী না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। একজন চালক জানান, “গত তিন দিন ধরেই রিকশা চালাচ্ছি, কিন্তু আয় নেই বললেই চলে।”


বিজ্ঞাপন

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ড. রুহুল আমিন সরকার জানান, পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে এবং অভিযান চলমান রয়েছে। অভিযান পরিচালনার সময় নিরপরাধ কেউ যেন আটক না হয়, সে দিকেও দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।


বিজ্ঞাপন

এদিকে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগার সূত্রে জানা যায়, ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত বন্দী থাকায় স্থান সংকুলান না হওয়ায় ১০০ শত বন্দীকে পার্শবর্তী জেলা পিরোজপুর ও বাগেরহাট কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে কারা কর্তৃপক্ষ একটি তালিকাও প্রকাশ করেছে, যাতে পরিবারের সদস্যরা তাদের খোঁজ নিতে পারেন।


বিজ্ঞাপন

গতকাল  নতুন করে ১১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এ নিয়ে মোট গ্রেফতার ৩ শতাধিক ছাড়িয়েছে । এদিকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তরফ থেকে জানানো হয় গ্রেফতার অভিযান চলমান থাকবে। গ্রেফতার আতংকে বহু গ্রাম পুরুষ শূন্য হয় গেছে। ১৬ জুলাইয়ের ঘটনার পর সবচেয়ে অসুবিধার মধ্যে আছে গোপালগঞ্জ জেলার শ্রমজীবী মানুষ। একদিকে গ্রেফতার আতংক অন্যদিকে খাবার সংকট।

পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। গোপালগঞ্জ শহরের বিভিন্ন রুটে চলাচল করা অটোরিকশা চালকরা যাত্রী না থাকায় অলস সময় পার করছেন। একজন অটোরিকশা চালক জানান আজ সারাদিন কোন যাত্রী না পাওয়ায় তার পরিবারের জন্য চাল ডাল কিনতে পারবেন না। যাত্রীর  আশায় অটোরিকশা স্যান্ডে তারমত অনেকে বসে আছেন।

১৪৪ ধারা জারি থাকার কারনে শহরের অধিকাংশ দোকান পাট বিপনি বিতান বন্ধ রয়েছে। এতে জনভোগান্তি চরম আকার ধারণ করছে। কিছু হোটেল রেস্তোরাঁ ও ওষুধের দোকান খোলা থাকলেও ক্রেতা নেই বললেই চলে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হোটেল মালিক জানান তাদের হোটেলের কর্মচারীদের মজুরি দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।

এ অবস্থা চলতে থাকলে হোটেল রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেয়া ছাড়া তাদের কোন উপায় নাই। শহরের কাঁচা বাজারে কিছু দোকান পাট খোলা থাকলেও ক্রেতাদের উপস্থিতি খুবই কম।

গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারের সামনে গ্রেফতারকৃতদের স্বজনদের ভীড় ক্রমশ বেড়েই চলেছে। একজন মহিলা জানান তার ছেলে একটা পানি কোম্পানিতে পানি সাপ্লাইয়ের কাজ করে গত দুদিন আগে তাকে গ্রেফতার করে আনা হয়েছে। সে কোনো রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি বলেন আমার ছেলেকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে নয়জন শিশু রয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের যশোর শিশু শোধনাগারে পাঠানো হবে বলে জেলা কারাগার সূত্রে জানা গেছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *