নবাব সলিমুল্লাহর নামে ইশারাত মঞ্জিলে জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করার দাবি সিটিজেন ইনিশিয়েটিভের

Uncategorized জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী রাজনীতি সংগঠন সংবাদ সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক  : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিটিজেন ইনিশিয়েটিভের সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ও রাজনৈতিক দর্শনের পুনর্মূল্যায়ন জরুরি হয়ে উঠেছে এমন মন্তব্য করেছেন শিক্ষাবিদ, গবেষক ও বিশিষ্ট রাজনৈতিক চিন্তাবিদরা।


বিজ্ঞাপন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের আব্দুল্লাহ ফারুক অডিটোরিয়ামে সিটিজেন ইনিশিয়েটিভের ‘রিশেপিং বাংলাদেশ’ সিরিজের ৫ম পর্ব “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস, রাজনীতি ও প্রতিশ্রুতি” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ও লেখক ডা. ফাহমিদুর রহমান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহদি আমিন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান এবং যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক মীর সালমান শামিল।


বিজ্ঞাপন

ডা. ফাহমিদুর রহমান বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একসময় পূর্ব বাংলার দরিদ্র মুসলমানদের সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তিতে রূপান্তরিত করার জন্য প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। নবাব সলিমুল্লাহ, নওয়াব আলী চৌধুরী এবং শেরে বাংলা ফজলুল হকের মতো ব্যক্তিত্বরা এই প্রতিষ্ঠার পেছনে ছিলেন। অথচ আজ তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূলধারার আলোচনায় প্রায় অনুপস্থিত।


বিজ্ঞাপন

তিনি আরো বলেন দীর্ঘ ১৫ বছরে চালু থাকা ফ্যাসিবাদের ভিত্তি বাঙ্গালী জাতিবাদের উৎপত্তি ও হয়েছিলো এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঙ্গালী জাতিবাদ থেকে বিউপনিবেশায়ন করে বাংলাদেশ পন্থার দর্শন নিরমান করতে হবে”। তিনি নবাব সলিমুল্লাহর স্মৃতি রক্ষায় তার নামে ইশারাত মঞ্জিলকে জাদুঘরে রূপান্তরের দাবি জানান।


বিজ্ঞাপন

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহদি আমিন বলেন, “বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন বাংলাদেশপন্থী রাজনীতি; যেখানে সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত হবে, এবং রাজনীতিতে থাকবে নৈতিকতা ও সততার চর্চা।” তিনি জিয়াউর রহমানের সন্তানদের সাক্ষাৎকার উল্লেখ করে বলেন, “আমরা এমন রাজনীতি চাই, যেখানে স্মৃতি ও সম্মান থাকবে।” ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এই রাজনীতির সাহিত্য ও পটভূমি নির্মাণ করতে হবে।

অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমাদের বারবার রক্ত দিতে হচ্ছে কেন? ১৭ বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক সমাজ কীভাবে ফ্যাসিবাদকে সহ্য করেছে সেটি আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। নবাব সলিমুল্লাহ কেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলেন, সেই ঐতিহাসিক বাস্তবতাও অনুধাবন করা জরুরি।”

ইউনিভার্সিটি অব জর্জিয়ার পিএইচডি গবেষক মীর সালমান শামিল আলোচনায় ‘জুলাই বিপ্লব’ চলাকালে জনপ্রিয় কিছু শ্লোগানের ভাষ্য তুলে ধরেন। যেমন: “দিল্লি না ঢাকা: ঢাকা ঢাকা” “ভারত যাদের মামুবাড়ি, দেশ ছাড়ো তারাতাড়ি” “পেতে চাইলে মুক্তি, ছাড়ো ভারত ভক্তি” “চশমাওয়ালা বুবুজান, নৌকা নিয়ে ভারত যান” তিনি ব্যাখ্যা করেন, “এখানে ‘ভারত’ বলতে বোঝানো হয়েছে ভারতীয় এস্টাবলিশমেন্ট বা রাষ্ট্রক্ষমতার কেন্দ্রকে, ভারতের সাধারণ জনগণকে নয়।

এই শ্লোগানগুলো বাংলাদেশের জনগণের ভারতীয় আধিপত্য নিয়ে জমে থাকা ক্ষোভের রাজনৈতিক প্রকাশ।” তিনি আরও বলেন, “গত ৩০০ বছর ধরে ভারতীয় ক্ষমতাকেন্দ্র পূর্ব বাংলার মানুষের সঙ্গে বৈষম্যমূলক ও সুবিধাবাদী আচরণ করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ইতিহাসও সেই উপেক্ষার একটি প্রতীক।” ৩৬ জুলাই-পরবর্তী বাংলাদেশে নতুন রাষ্ট্রচিন্তা গঠনে এই ইতিহাস ও ঐতিহ্য নতুনভাবে মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন বক্তারা।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিটিজেন ইনিশিয়েটিভের কো-ফাউন্ডার মুহাম্মদ তালহা। স্বাগত বক্তব্য দেন আয়োজনের সহযোগী শিল্প-সাহিত্যের পত্রিকা ডাকটিকেটের সম্পাদক কবি মুন্সি বোরহান মাহমুদ।

সিটিজেন ইনিশিয়েটিভ   :  দেশ ও বিদেশের গবেষক, শিক্ষাবীদ ও পেশাজীবীদের সংগঠন সিটিজেন ইনিশিয়েটিভ। গনতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য ক্যাম্পেইন, এই স্লোগানকে সামনে রেখে গত ১২ই জুলাই ২০২৩ সাল থেকে রাজনীতিতে সততা, জবাবদিহিতা, ও গণতান্ত্রিক চর্চা, এবং রাষ্ট্রে ন্যায়বিচার ও মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করার প্রয়াসে একটি সিভিল সোসাইটি সংগঠন হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে সিটিজেন ইনিশিয়েটিভ বা সি আই। বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন: www.citizeninitiativebd.com


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *