নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা সংকটাপন্নদের জন্য কার্যকর দাবি করা ‘ডেক্সামেথাসন’ ওষুধ পরীক্ষামূলকভাবে দেশেও প্রয়োগ করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, করোনা চিকিৎসায় প্রণীত গাইডলাইনে সরাসরি উল্লেখ না থাকলেও স্টেরয়েড ব্যবহারের নির্দেশনা অনুযায়ী এ ওষুধ প্রয়োগে কোন বাধা নেই। তবে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকায় শুধুমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সংকটাপন্ন ৩ শ্রেণির রোগীদের জন্য তা ব্যবহারের পক্ষে মত দেন বিশেষজ্ঞরা।
করোনাভাইরাস প্রধানত সংক্রমণ ঘটায় ফুসফুস ও রক্তনালীতে। এ ভাইরাস প্রতিরোধে রক্তের শ্বেত কণিকাসহ বিভিন্ন এন্টিবডি যখন সংক্রমণস্থলে আসতে থাকে তখন রক্ত জমাট বাধাসহ নানা প্রদাহে ক্ষতির মুখে পড়ে ফুসফুস। চিকিৎসকরা বলছেন, ঠিক এ জায়গাটিতেই কাজ করে স্টেরয়েড ডেস্কামেথাসন।
সম্প্রতি ব্রিটেনের একদল গবেষক করোনায় সংকটাপন্নদের ওপর এ ওষুধ প্রয়োগের সফলতা দাবি করেছেন। বাংলাদেশে যখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনায় মৃতের সংখ্যা, তখন কতটা আশা জাগানিয়া হতে পারে এ ওষুধ? দামও কম আর এর ব্যবহার নতুন নয়।
করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় জাতীয় নির্দেশিকায় সরাসরি ডেক্সামেথাসনের কথা উল্লেখ নেই। তবে উল্লেখ আছে স্টেরয়েড ব্যবহারের কথা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নানা রোগে সংকটাপন্ন রোগীদের ওপর প্রয়োগের দীর্ঘ ইতিহাস থাকায় করোনা সংকটাপন্নদের ওপর ব্যবহারেও কোন বাধা নেই।
চাইলে গাইডলাইনে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে, অন্তত পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকা মেডিকেল বা কয়েকটি জায়গায় প্রয়োগ করে দেখা যেতে পারে। চিকিৎসকেরা ব্যক্তিগতভাবে সাজেস্ট করতে পারবেন।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইআইডিসিআর) সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বেনজীর আহমেদ বলেন, বাংলাদেশেও ব্যবহৃত ও অত্যন্ত কমদামী একটা ওষুধ, খুবই কম দাম। আমাদের যে জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার গাইড লাইন আছে সেটাতে যুক্ত করে অন্তত আমাদের যারা বড় বড় চিকিৎসক আছেন তাদের তত্ত্বাবধানে এটা দ্রুত ব্যবহার করা দরকার।
তবে ভয়ও আছে। মৃদু উপসর্গে ব্যবহার কিংবা অতিরিক্ত ডোজে ডেকে আনতে পারে ভয়ানক বিপদ। ইমিউনিটি কমিয়ে দিতে পারে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে বক্ষব্যাধী বিশেষজ্ঞ ডা. মো. আতিকুর রহমান বলেন, ৩টি ক্ষেত্রে- যারা হাসপাতালে ভর্তি থাকবে, যারা ভেন্টিলেটার সাপোর্টে থাকবে, ভর্তি অবস্থায় যারা অক্সিজেন থেরাপি পাচ্ছেন, তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী দিতে হবে। করোনা ভাইরাসে যারা মাইনর সিম্পটমের রোগী তাদের দেয়া যাবে না। তার ফলে হবে কি আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা সেটা প্রথমেই কমিয়ে দেবে। তখন কিন্তু মৃদু সংক্রমিত রোগী খারাপ হয়ে যেতে পারে।
প্রথম শনাক্তের সাড়ে ৩ মাসের মাথায় দেশে করোনা সংক্রমণ রেখা উর্ধ্বমুখিই রয়েছে। এর মধ্যে মৃতের সংখ্যাও অতিক্রম করেছে ১২ শতকের ঘর।