শরণখোলায় ভারী বর্ষণে ধসে গেছে আঞ্চলিক মহাসড়ক

খুলনা সারাদেশ

পানিবন্দি ৫ হাজার পরিবার

 

নইন আবু নাঈম : নিমনো চাপের প্রভাবে বুধবার মধ্যরাত থেকে ভারি বর্ষণে বাগেরহাটের শরণখোলায় পোস্ট অফিসসহ তিন গ্রাম তলিয়ে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার। শরণখোলা-মোরেলগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের একটা অংশ ধসে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে যান চলাচল। ডুবে আছে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ। প্লাবিত হয়ে ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। সারাদিনে রান্না হয়নি পানিবন্দী বহু পরিবারে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে বাসিন্দারা।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলা সদরের রায়েন্দা বাজারের পূর্বাংশ এবং রায়েন্দা সরকারি পাইল হাই স্কুলের পশ্চি পাশ থেকে টিএন্ডটি এলাকা, খাদ্যগুদাম এলাকা, পাঁচরাস্তা ও বান্দাঘাটা এলাকার প্রায় সহ¯্রাধিক পরিবারের বাড়িঘরে হাঁটু পানি জমে রয়েছে। ওই এলাকা অবস্থিত সরকারি পোস্ট অফিসের মধ্যেও পানি উঠে গেছে। এছাড়া, রায়েন্দা বাজারের পুরাতন পোস্ট অফিস এলাকা, উত্তর কদমতলা পুরো গ্রাম ও কেজি স্কুল এলাকার আরো প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
অপরদিকে, ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সাইনবোর্ড-বগী আঞ্চলিক মহাসড়কের শরণখোলা উপজেলা সদরের রায়েন্দা সেতুর দক্ষিণ পারের সংযোগ সড়কের দুটি পয়েন্টে ব্যাপক ধস দেখা দিয়েছে। সকাল ১০টার দিকে প্রায়াত চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ হাওলাদারের বাড়ির সামনে থেকে প্রায় ২০ফুট সড়ক ধসে গভীর খাদ সৃষ্টি হয়েছে। স্কুল শিক্ষক হারুন অর রশিদের বাড়ির সামনেও কিছু অংশ ধসে গেছে। ধসে যাওয়া সড়কের আশপাশের ব্যাপক এলাকায় ফাঁটল ধরেছে। যে কোনো সময় পুরো সড়ক ধসে যানবাহন চলাচল বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশংকা রয়েছে।
পানিবন্দী টিএন্ডটি এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক শেখ মোহাম্মদ আলী, আ. হালিম খান, আ. লতিফ খান জানান, তাদের এলাকায় প্রত্যেকের বাড়ির উঠানে হাঁট পানি। অনেকের ঘরে পানি উঠে গেছে। বহু পরিবারে রান্নাবান্না হয়নি। স্বাভাবিক কাজকর্ম-চলাচলও করতে পারছে না মানুষ। পানি নিস্কাশনের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। মাত্র ১০ইঞ্চির একটি সরু পাইপ বসানো রয়েছে যা দিয়ে বিশাল এলাকার পানি সরানো সম্ভন নয়। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানিতে ডুবে মরতে হয়। পানি নিষ্কাশনের জন্য দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান তারা।
রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জালাল আহম্মেদ রুমি বলেন, আমার ঘরের বারান্দায়ও পানি উঠে গেছে। রায়েন্দা বাজার ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পাঁচ হাজারেরও বেশি পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। অনেকের পুকুর তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। শহর রক্ষা বাঁধ ও টেকসই বেড়ি বাঁধের কাজ চলমান থাকায় পানি নিষ্কাশনের পথ আটকে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত এই দুর্ভোগ নিরসন হবে না।
তিনি বলেন, প্রবল বৃষ্টিতে আমার বাড়ির কাছাকাছি রায়েন্দা সেতুর সংযোগ সড়ক ধসে গেছে। সড়কের ব্যাপক এলাকা ফাঁটল ধরেছে। বিষয়টি সংশিষ্ট কর্র্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরদার মোস্তফা শাহিন জানান, জলাবদ্ধ এলাকা থেকে দ্রুত পানি অপসারণের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। শরণখোলা-মোরেলগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের একটা অংশ ধসে পরার খবর পাওয়া গেছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে, আশা করছি দ্রুত ধসে পরা স্থান মেরামত করা হবে।


বিজ্ঞাপন