গতকাল সোমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যায় অভিনেত্রী সাফা কবির একজন ভক্তের প্রশ্নের উত্তরে বলছেন, ‘না আমি পরকালে বিশ্বাস করি না।’ এরপর এই ভিডিওর অংশটুকু ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
এরপরই শুরু হয় আলোচনা আর সমালোচনা। অবশ্য আজ ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে এ বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন সাফা কবির।
এ ব্যাপারে সাফা কবির বলেছেন, ‘আমি যদি কোনও ভুল করে থাকি সেই ভুলের জন্য আমি পরম করুণাময়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি। তিনি পরম দয়ালু এবং ক্ষমাশীল। তিনি নিশ্চয়ই আমাকে ক্ষমা করবেন।’
এ সময় সাফা কবির আরও বলেন, ‘আমি এবং আমার আল্লাহ জানেন, কারো বিশ্বাসে আঘাত দেওয়ার জন্য কোনও কথা আমি বলিনি। তবুও, আমার কোন কথায় যদি কারো মনে বা বিশ্বাসে আঘাত লেগে যায়, তার জন্য আমি দুঃখিত এবং করজোড়ে ক্ষমাপ্রার্থী।’
অভিনেত্রী সাফা কবির বলেন, ‘তবুও যারা, আমার ফেসবুক প্রোফাইল হ্যাক করেছেন এবং আমাকে অত্যন্ত বাজে ভাষায় আক্রমণ করছেন তাদের বিচারের ভারও আমি আল্লাহর হাতে দিলাম। তিনি নিশ্চয়ই সবকিছু জানেন এবং দেখেন।’
কিন্তু ক্ষমা প্রার্থনা করার পরও সাফা কবিরের ভক্তদের রাগ কমছে না। তার ফেসবুক পোস্টের নিচে করা মন্তব্যগুলো থেকে তাই মনে হচ্ছে। ওসব মন্তব্যে অনেকেই তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেছে। অবশ্য, অনেকে আবার তার পক্ষ নিয়ে পাল্টা কটু কথা বলেছে। তবে অনেক আবার ইতিবাচক মন্তব্যও করেছেন। কিন্তু বেশিরভাগ মন্তব্যে সাফা কবিরের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ পেয়েছে।
এদিকে পারভেজ হাসান নামের এক ভক্ত মন্তব্য করেছেন, ‘ঠেলায় পড়লে শয়তানো আল্লাহর নাম নেয়! আপুটি অনেক চালাক যেই দেখতে পারলো তার ক্যারিয়ার হুমকির পথে সে এখন আল্লাহর নাম নিচ্ছে!তারপরও বলবো যদি সত্যিই আল্লাহর কাছে মন থেকে ক্ষমা চেয়ে থাকে,তাহলে আল্লাহ ই তাকে ক্ষমা করে দিবে! আমাদের সবার মনে রাখা উচিৎ সম্মান দেওয়ার মালিক আল্লাহ নেওয়ার মালিকও আল্লাহ!’
এখানে আরেকজন বলেছে, ‘তুমিতো যা দেখো না তা বিশ্বাস করো না। তাই যদি হয়, তাহলে যাকে তুমি বাবা বলে ডাকো তাকে তো তুমি তোমাকে জন্ম দিতে দেখোনি। তাহলে তাকে কেন বাবা বলে বিশ্বাস করো?’
এরপর ইয়াসির অভি নামের একজন লিখেছে, ‘আপনারা সবাই শান্ত হোন,গালাগালি না করে সবাই তার পেইজে একটা একটা করে রিপোর্ট মারেন, আপনাদের একটা একটা রিপোর্টে তার পেইজ ডিজেবল হয়ে যেতে পারে।’
এদিএক শুভ ফরায়েজি লিখেছে, ‘এখন কেন ক্ষমা চাচ্ছে। সাথে সাথে চাওয়া উচিত ছিলো।’
নাজমুল হোসেন নামের একজন আবার লিখেছে, ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা কতটা খর্ব তার প্রমাণ মিললো সাফা কবিরের এক কথাতেই। সে কিন্তু নিজের মতামত পেশ করেছে, কাউকে গালি দেয়নি, কাউকে হুমকি দেয়নি। এতেই এক শ্রেণীর লোকদের জ্বলুনি দেখে অবাক না হয়ে পারলাম না।’
তাছাড়া জান্নাতুল ফেরদৌস নামের একজন মন্তব্য করেছে, ‘সম্ভবত যখন ইন্টারে পড়ি তখন এই মেয়ে ভ্যালেন্টাইন্স ডে তে একটা নাটক করছিল। এয়ারটেল নিবেদিত নাটক। তখন তার বয়স ২২-২৩ হইলে এখন তো মাশাল্লাহ দিলে ৩০ ছুই ছুই। এই আফাকে বলেন কেউ, তার এসব ন্যাক্যামী স্রেফ বিরক্ত লাগে! আর ভাব একটু কম নিতে বলেন। বেশী ভাব নিলে কিন্তু বাচ্চা হবে না!!’
শেখ আব্দুল্লাহ মাশুক লিখেছে, ‘আপনি ভুল করেননি, নিজের বিশ্বাস স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, এটা সৎ সাহস। এখন যেটা করলেন সেটা ছাগুদের চাপে, আপনার আমার সকলের বিশ্বাসকে শ্রদ্ধা করার সংস্কৃতি দেশে নেই। তবে এখন যেটা বললেন এটা যদি সত্যিই আপনার মনের কথা হয় তাহলে বলবো সৃস্টিকর্তা আপনার মঙ্গল করুন।’
এমডি তিতুমির লিখেছে, ‘কি বলবো, আপনাদের মত মানুষরাই এইসব কথা বলতে পারে কারন ধর্মীয় আদর্শ কাকে বলে তা তো বুঝেন না।’
মাহবুবুল ইসলাম লিখেছে, ‘নাস্তিক এর কোনো ক্ষমা নেই।’
নুসরাত জাহান লিখেছে, ‘আপনি পরকাল বিশ্বাস করেন না তাহলে আবার আল্লাহর কাছে দোয়া চান।’
এস কে রাফিউ ইসলাম বলেছে, ‘এর পর আর আপনার কোনো নাটক, টেলিফ্লিম দেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি।’ আরেকটি মন্তব্যে রাফিউ বলেন, ‘অনেক টাকা কামিয়েছেন এখন ঈমান আনবেন ও বাকি জীবন ভালো করে থাকবেন।’ এছাড়া হাজার হাজার মন্তব্যে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করা হয়েছে সাফা কবিরকে।