ফেনীর সোনাগাজীতে পাশবিক কায়দায় আগুনে পুড়িয়ে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ও ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী হাফেজ আবদুল কাদির স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন। তিনি ১৬৪ ধারায় এ জবানবন্দি দেবেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে জেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সরাফ উদ্দিন আহমদের আদালতে হাজির করা হয় তাকে।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর মিরপুরের পীরেরবাগ ছাপড়া মসজিদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে আব্দুল কাদিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতার কাদির সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক।
এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা শুরু হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
নুসরাত হত্যা মামলায় এরইমধ্যে যে তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, তাদের কথায় উঠে এসেছে- আব্দুল কাদির ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজদৌল্লার পক্ষে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
ওই তিনজনের স্বীকারোক্তিতে আরও বলা হয়- আব্দুল কাদির কারাগারে অধ্যক্ষ সিরাজদৌল্লার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, হত্যাকাণ্ডের দুদিন আগে, অর্থাৎ ৪ এপ্রিল সকালে ও রাতে হত্যা পরিকল্পনায় অংশ নেন। এমনকি তিনি মাদরাসাটির পশ্চিম হোস্টেলের যে কক্ষটিতে থাকতেই সেখানেই হত্যা পরিকল্পনার বৈঠক হয়। যে ১২ জন ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তাদের মূল পরিকল্পকের ভূমিকা পালন করেন আব্দুল কাদির। তার নির্দেশ ও পরিকল্পনা মোতাবেকই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়।
এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে নুসরাত হত্যার বিচার দাবিতে সোনাগাজীতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করবে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।
উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আলিম পরীক্ষা চলাকালে মাদরাসা ভবনের ছাদে মুখোশধারী ৪ জন মিলে আগুনে ঝলসে দেয় নুসরাতের শরীর। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় প্রথমে ফেনী সদর হাসপাতালে ও পরে নুসরাতকে স্থানান্তর করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে। ৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেন নুসরাত।