৯৯৯-এ ফোন করে বড় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গেলেন শতাধিক পর্যটক

সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিনিধি : সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে টেকনাফ ফেরার পথে শতাধিক পর্যটক নিয়ে সাগরে বিকল হয়েছে ‘এস টি ভাষা শহীদ সালাম’ নামের পর্যটকবাহী জাহাজ। জাহাজ চালুর পর ঘাট ত্যাগ করে অল্পদূর এগোতেই পাঁচ মিনিটের মাথায় ইঞ্জিন বিকল হয়ে ভাসতে থাকে। পরে ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে জাহাজটিকে তীরে আনতে সক্ষম হয় পুলিশ, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড। রোববার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল সোয়া তিনটার দিকে সেন্টমার্টিন বঙ্গোপসাগরে এ ঘটনা ঘটে।


বিজ্ঞাপন

যাত্রীদের অভিযোগ, বিকল ইঞ্জিন ঠিক করার নামে প্রায় তিন ঘণ্টা ভাসিয়ে রাখা হয় জাহাজটি। জাহাজটি ধীরে ধীরে মিয়ানমার জলসীমার দিকে ভেসে যাচ্ছে দেখে আতঙ্কিত পর্যটকদের কয়েকজন জাতীয় সেবা ৯৯৯-এ কল করে সহযোগিতা চান। পরে সেন্টমার্টিন কোস্টগার্ড, পুলিশ ও নৌবাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টায় সন্ধ্যার দিকে জাহাজটি তীরে আনা হয়।


বিজ্ঞাপন

দ্বীপে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়াতে যাওয়া টেকনাফ পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ শাহীন বলেন, ‘টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে এস টি ভাষা শহীদ সালাম জাহাজটি চলতি মৌসুমে রোববারই প্রথম আড়াই শতাধিক পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন যাত্রা শুরু করে। শতাধিক পর্যটক রাত্রিযাপনের জন্য থেকে গেলে বাকি শতাধিক যাত্রী নিয়ে টেকনাফ ফেরার পথে এ দুর্ভোগে পড়েন তারা।’

ঢাকার গাজীপুর থেকে পরিবার নিয়ে সেন্টমার্টিন ডে-ট্যুরে বেড়াতে যাওয়া আবদুর রহমান জানান, সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ নিয়ে একটি অকল্পনীয় অভিজ্ঞতা হয়েছে তার। তিনি বলেন, দ্বীপ থেকে ফেরার পথে ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেলে বঙ্গোপসাগরে তিন ঘণ্টা ভাসমান থেকেছি। ৯৯৯-এর সহযোগিতা না পেলে হয়তো আমরা মিয়ানমার জলসীমা অতিক্রম করে সেদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হতাম। পর্যটনশিল্প বিকাশে সেন্টমার্টিন নৌপথে এমন লক্কর ঝক্কর জাহাজ চলাচল বন্ধ করা দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।

দুর্ভোগের বিবরণ দিতে গিয়ে আবদুর রহমান বলেন, ‘করোনাকালের লকডাউনের বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পেতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে শনিবার কক্সবাজার বেড়াতে যাই। ট্যুর অপারেটরের কাছে সেন্টমার্টিনের ডে-ট্যুর প্যাকেজ চাওয়া হলে এস টি ভাষা শহীদ সালাম জাহাজে সাতটি টিকিট দেন। কক্সবাজার থেকে বেশ আরামে টেকনাফ জাহাজঘাটে পৌঁছাতে পারলেও জাহাজটি শুরু থেকেই বিড়ম্বনা দেয়। সেন্টমার্টিন যাওয়ার সময়ও অন্য জাহাজের চেয়ে দুর্বলভাবে চলে এক ঘণ্টা দেরিতে সেন্টমার্টিন পৌঁছে। জেটি ঘাটের চরম অব্যবস্থাপনার কারণে জাহাজ থেকে নামতে সময় গেছে দেড় ঘণ্টা।’

এস টি ভাষা শহীদ সালাম জাহাজের আবাসিক সুপারভাইজার (টেকনিশিয়ান) মোহাম্মদ সাহেদ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘মেশিনারি জিনিসের কোনো বিশ্বাস নেই। এই ভালো তো এই খারাপ হতেই পারে। আমি অন্যদের নিয়ে ত্রুটি সারার চেষ্টার কমতি করিনি। কিন্তু শেষমেশ পারিনি।’

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর নৌবাহিনী, পুলিশ ও কোস্টগার্ড যৌথভাবে ভাসমান জাহাজ থেকে পর্যটকদের তীরে ফেরানোর ব্যবস্থা করে। যাদের জরুরি জাহাজ ত্যাগ করা প্রয়োজন তাদের স্পিডবোটে টেকনাফ পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। নারী-শিশুসহ পরিবারগুলোকে আবাসনের বিষয়টি তদারক করা হচ্ছে।’