সাহিদুল এনাম পল্লব (ঝিনাইদহ) : ঝিনাইদহ হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভায়না ইউনিয়নে টি আর কর্মসূচি প্রকল্পের আওতায় (২০২৪-২০২৫)অর্থবছরের ৩য় পর্বের কাজের ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ দেখে মনে হয়েছে এটা দিনে দুপুরে পুকুর চুরি।বাকচুয়া লাল্টু খন্দকারের বাড়ির সামনে একটি কালভার্ট নির্মাণে বরাদ্দের পরিমাণ ধরা হয়েছে ২লক্ষ ১২ হাজার ৩শত ৮৩ টাকা, সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় পুরাতন ছেদলা পড়া ইট ও দুই নম্বর ইট ন্ম্নিমানের বালি ব্যবহার করা হচ্ছে।

হেডমিস্ত্রীর নিকট নিম্ন মানের ইট সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন ইট সবই ভালো কিছু ইট কম পড়ায় চেয়ারম্যান সাহেব পরিষদে কিছু পড়ে ছিল সেই গুলো কাজে লাগাতে বলেন।

রহিমপুর রুজদারের বাড়ি হতে শাকোরঘাট অভিমূখে রাস্তা উন্নয়ন ও ফ্লাট সলিং করণ প্রকপ্লের বরাদ্দের পরিমাণ ১লক্ষ পঁচাশি হাজার টাকা সেখানেও কোন রকম নিম্ন মানের ইট ও বালি ছিটিয়ে সামান্য পরিমাণ রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। বাকচুয়া গ্রামের মানিক খাঁ এর বাড়ি হতে কাসেম খাঁ এর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা ফ্লাট সলিং করণ প্রকপ্লের বরাদ্দের পরিমাণ ১লক্ষ ১৫ হাজার টাকা সেখানেও নিম্ন ইট ও বালি ফেলে রাখতে দেখা গেছে।

২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের কাবিখা প্রকপ্ল কর্মসূচীর আওতায় হরিয়ারঘাট সদর এর বাড়ি হতে মোহাম্মদ আলীর বাড়ি অভিমুখে রাস্তা উন্নয়ন ও ফ্লাট সলিং করণ কাজে বরাদ্দের পরিমাণ (গম) ৩.২০০ মে. টন ও একই পরিমাণ বরাদ্দে হরিয়ারঘাট মসলেম এর বাড়ি হতে সাফায়েত এর বাড়ি অভিমুখে রাস্তা উন্নয়ন ও ফ্লাট সলিংকরন দৃশ্যমান কাজের কোন উন্নয়ন চোখে পড়েনি ।

২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে টি আর কর্মসূচির আওতায় তৈলটুপি মিলনের বাড়ি হতে এসডি এর বাড়ি অভিমুখে ২৪০ ফুট রাস্তার উন্নয়ন ও ফ্লাট সলিং করন প্রকপ্ল ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লক্ষ ৮২ হাজার ২শত ৬টাকা, সেখানে ইটভাটার পাড়নের আমা নিম্নমানের ইট ও ধুলাবালি দিয়ে কোন রকম নয় ছয় করে কাজ শেষ করা হয়েছে।
সমপরিমাণ বরাদ্দে তৈলটুপি ইসলামের বাড়ি হতে হান্নানের বাড়ি অভিমুখে রাস্তা উন্নয়ন ও ফ্লাট সলিং করন কাজ দৃশ্যমান কিছুই চোখে পড়েনি। তবে এই রাস্তাটি ইসলাম এক বছর আগেই ইট দিয়ে ফ্ল্যাট সেলিং করেছে নিজেই তার বাড়ির উঠার জন্য।
উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে গৃহীত প্রকল্পের আওতায় ভায়না আসমান মোল্লার বাড়ি হতে হিদাদ মাষ্টারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা ম্যাকাডাম করণ ও উন্নয়ন কাজে বরাদ্দের পরিমাণ ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা সেখানেও নিম্ন মানের ইটের খোয়া ও ধুলা বালি দিয়ে কাঁদার মধ্যেই রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে অবশ্য তাতেই এলাকাবাসী খুশি কারন তাদের চলাচলের কোন রাস্তাই ছিল না।লক্ষীপুর পাকা রাস্তা হতে মালেকের বাড়ি অভিমূখে রাস্তা ম্যাকাডাম করণ ও উন্নয়ন প্রকপ্লে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩লক্ষ ২৩ হাজার ২৬ টাকা অথচ রাস্তার কোন কাজই হয়নি তবে স্থানীয় লোকজন বলছিলেন রাস্তার মাপ যোগ নিয়ে গেছেন খুব শিগগিরই নাকি কাজ শুরু হবে।
এই প্রসঙ্গে জানার জন্য ভায়না ইউনিয়ন পরিষদে গেলে সেখানে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব কে পাওয়া যায় সচিব বলে যে আমি সবে মাত্র মির্জাপুর ইউনিয়ন থেকে বদলি হয়ে এখানে এসেছি এখানকার কোন কাজ সম্পর্কে আমি জানিনা। তবে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বেরিয়ে আসার একঘন্টা পরে জানা গেল হরিণাকুন্ডুর বিভিন্ন ইউনিয়নের কাজ না হওয়ার মূল কারণ।
সেটা হল হরিণাকুণ্ড উপজেলা যুবদলের আহবায়ক ও যুবদলের ৬ নম্বর যুগ্ম আহবায়ক যাদের নাম যথাক্রমে আব্দুস সামাদ ও নাজমুল হুদা রিপন। এরা ৭টা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের নিকট থেকে ব্যাপক পরিমাণে অর্থ আদায় করে নিজেরা স্বঘোষিত প্রেসক্লাব বানিয়েছে।
উপজেলায় যে সমস্ত সাংবাদিক ছিল তাদেরকে হরিণাকুন্ডু থেকে দলীয় প্রভাব দেখিয়ে বিতাড়িত করেছে। চেয়ারম্যানদেরকে আশ্বস্ত করেছে যে আপনারা কাজ করেন আর না করেন তাতে সরকার এবং সাংবাদিকেরা কোন নিউজ তৈরি করবে না।
যার কারনে সাংবাদিকদের কাছে ফোন আসে যে হরিণাকুণ্ডু তে সাংবাদিক কেন গিয়েছিল আর যাওয়ার আগে তার সাথে কেন যোগাযোগ করেনি? পরবর্তীতে গেলে তার সাথে যোগাযোগ না করলে সাংবাদিকের সমস্যা আছে। তবে এই প্রসঙ্গে জানার জন্য ভায়না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা তুষারের মোবাইল নাম্বারে বারবার কল করলেও তিনি মোবাইল রিসিভ না করার কারণে তার মতামত জানা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আজিজুর রহমানের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে সে বলে যে কাজ না হলে পুনরায় কাজ করা হবে এবং এ ব্যাপারে তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসার উনি বলেন যে এক নম্বর ইটের পরিবর্তে দুই নম্বর ইট ব্যবহারের সুযোগ নেই। আমি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম এবং অতি শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারের এর মাধ্যমে কাজের প্রত্যয়ন পত্র না দিলে তাদের বিল তারা উঠাতে পারবে না। আমি বিষয়টা ভালোভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার কে নোট করে পাঠাচ্ছি।