পিরোজপুর প্রতিনিধি : প্রতারণা চক্রের ফাঁদে পড়ে উঠতি বয়সে যৌবন হারাচ্ছে বরিশাল বিভাগের কোমলমতি মেয়ে শিক্ষার্থীরা। বরিশাল বিভাগের জেলা শহর থেকে শুরু করে বিভিন্ন উপজেলায় নাম না প্রকাশের শর্তে লিখিত অভিযোগ পান মিডিয়ার লোকজন। মাসিক স্বরূপ বিণ্যাশ ও ফাটাকেষ্ট ২৪ ডড কমের অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।
অনুসন্ধান রিপোর্টে জানা গেছে, প্রথমেই প্রতারক ছেলে বা যুবক সুনির্দিষ্ট নম্বর জেনেই ১০০ থেকে ৫০০ টাকা ফ্লাসিলোড করে। পরে ছেলে ফোন দেয় মেয়ের নম্বরে। সুমধুর কন্ঠে ভেসে ওঠে আপু (ছদ্ম নাম রিপন বড়াল) আপনার মোবাইলে ৫০০ টাকা গেছে। প্রতারক ছেলে জানে সে ৫০০ টাকা ফেরত দিতে পারবে না। আর তখনই শুরু হয় ধাপে ধাপে প্রতারণা। সচেতন মেয়ে না হলে শতভাগ সর্বনাশের ফাদে পড়ে যায়। আবার লোভী মেয়েরা লোভের কারণে সখে সখে পতিতার খাতায় নাম লেখায়।
আর এরকমই বহু ঘটনার শিকার বানারীপাড়া, উজিরপুর, স্বরূপকাঠী, কাউখালী, নাজিরপুর, মঠবাড়িয়া, ভান্ডারিয়ার বহু শিক্ষিত বালিকা। বাদ নেই ভোলা, লালমোহন, চরফ্যাশন, তজিমউদ্দিনের মেয়েরাও। জনমত জরিপে তিনটি জিনিসকে দায়ী করা হয়েছে। প্রথমত ডিজিটাল যুগে মোবাইল, দ্বিতীয়ত মেয়েদের বোকামি ও তৃতীয়ত অতি মাত্রায় লোভের কারণে অকালে বিপদগামী হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। গত তিন বছরে বরিশাল বিভাগের বিএম কলেজের মেয়েরাসহ শহরের বাকী কলেজের মেয়রাও এই ফাঁদে পড়ার সত্যতা পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী অনেক মেয়ে সামজিক মানসম্মানের কথা ভেবে মিডিয়ার সামনে আসতে ভয় পায়। এমন কি থানা পুলিশকে মুখ খুলতে চায় না। অনুসন্ধানে ভোলার অর্পিতা বিশ্বাস, লালমোহনের শিখা সমদ্দার, বানারীপাড়ার নিলীমা মন্ডল, উজিরপুরের তামান্না দৈউরী, স্বরূপকাঠির মিতু, সাদিয়া, সুগন্ধা মন্ডল, রাখী বেপারী, অজান্তা মন্ডল, কুড়িয়ানার সাথী বেপারী, কামারকাঠীর নিপা প্রমুখ রয়েছে।
নাম না প্রকাশের শর্তে এসব মেয়েরা বলেন, বেশীরভাগ মেয়েদের ফোনে প্রথমে টাকা আসে। আর এভাবেই জড়িয়ে পড়ে ধীরে ধীরে অসামাজিক কাজে। প্রেমের ফাঁদে ফেলে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে এ চক্র। এক পর্যায়ে লম্পট নিখুঁত ভাবে নারীর শরীরের স্পর্শ কাতর স্থানের ছবি তুলে নেয়। আবার কেউ কেউ বিয়ের কথা বলে অগ্রিম ভিডিও ফুটেজ ধারণ করে নেয়। এদিকে গত দুই বছরে প্রশাসন দু একজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। কিন্তু প্রতারক চক্রের চাপে মেয়ে পক্ষ আপোষ করায় আমরা কোন মতে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেই। উদাহরণ স্বরূপ সৈয়দকাঠীর মেম্বার রিপন বড়াল। রিপন সমাজসেবার নামে এক ধরনের প্রতারণার ব্যাবসার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। কুড়িয়ানার এক মেয়ে পরিবারের অভিযোগে রিপন বড়ালকে বানারীপাড়া থানায় এনে কঠিন শাস্তি দেওয়াসহ লিখিত বন্ড সই নেওয়া হয়। রিপন বড়ালের মত বৃহত্তর বরিশালে বহু প্রতারক চক্র রয়েছে। বিএম কলেজের মেয়েদের প্রতারণায় ফেলে বরিশালে হোটেলসহ বাসা বাড়ীতে মিনি পতিতা খুলেছে। খদ্দের হিসেবে প্রশাসনের কিছু বিপদগামী লোকসহ মিডিয়ার লোকজনও রয়েছে। প্রশাসনের নজরধারী না থাকার কারণে দিন দিন বরিশালসহ পিরোজপুর জেলার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিপদগামী হচ্ছে।