পারিবারিক সহিংসতার অন্যতম কারণ বাল্যবিবাহ

রাজধানী

নিজস্ব প্রতিনিধি : বাল্যবিবাহ পারিবারিক সহিংসতা বৃদ্ধির অন্যতম একটি কারণ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ।


বিজ্ঞাপন

আজ সোমবার (১৪ জুন) দুপুরে নগরভবনে শীতলক্ষ্যা হলে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, কর্মকর্তা এবং যুব প্রতিনিধিদের সাথে করণীয়’ বিষয়ক আলোচনা সভায় ঢাদসিক প্রনিক ফরিদ আহাম্মদ এ কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন

ঢাদসিক প্রনিক ফরিদ আহাম্মদ বলেন, “বাল্যবিবাহ শুধু নারীর স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, সুস্থ সবল আগামী প্রজন্মের গড়ে ওঠায় বাধাগ্রস্ত করেনা বরং মাঠ পর্যায়ে কর্মরত থাকাকালীন আমরা দেখেছি যে, পারিবারিক সহিংসতা বৃদ্ধির অন্যতম একটি কারণ হলো বাল্যবিবাহ। কারণ অপরিণত বয়সে ছেলে বা মেয়ে, যারই বিয়ে হোক না কেন, তার পারিবারিক দায়িত্ববোধ, সামাজিক দায়িত্ববোধ কিংবা নিজস্ব গন্ডির যে দায়িত্ব-কর্তব্য রয়েছে, সেগুলো বিকশিত হওয়ার আগেই আরেকটি দায়িত্ব তার কাঁধে চেপে বসে। এতে করে অর্থনৈতিক সক্ষমতা থাকে না কিংবা হ্রাস পায়, সৃষ্টি হয় নানাবিধ সামাজিক জটিলতা। বাল্য বিবাহের ফলে সৃষ্ট এই জটিল পরিস্থিতি পারিবারিক সহিংসতা বৃদ্ধির অন্যতম একটি কারণ হয়ে দাঁড়ায়।”

নো ওয়ান বিহাইন্ড লেফট এসডিজি’র সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং অভীষ্ট উল্লেখ করেন ঢাদসিক প্রনিক ফরিদ আহাম্মদ বলেন, “বিশ্বব্যাপী এই অভীষ্ট অর্জনই সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং অভীষ্ট হিসেবে বিবেচনা হচ্ছে। কারণ, শুধু আমি ভালো থাকলে চলবে না, সমাজের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠী বা শিক্ষিত সম্প্রদায় ভালো থাকলে চলবে না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে হবে। আর সবাই মিলে ভালো থাকার উপায় হচ্ছে – সকলেই একযোগে সমন্বিতভাবে ভালোর দিকে এগিয়ে চলা। সেজন্য বাল্যবিবাহ নিরোধ করা একান্ত জরুরী।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সুয়ে মেন জো বলেন, “বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ এর ১৯ নম্বর ধারায় যে বিশেষ বিধান রাখা হয়েছে তা বিশেষ পরিস্থিতিতে অপ্রাপ্ত বয়স্কের সর্বোত্তম স্বার্থ বিবেচনা করেই রাখা হয়েছে। কারণ পশ্চিমা সমাজ ব্যবস্থায় অপ্রাপ্ত বয়স্করা নানাভাবে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লেও সেখানে তা বড় ধরনের অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয় না, যা আমাদের সমাজ-সংস্কৃতির সাথে সংগতিপূর্ণ নয়। তাই আইনের এই বিশেষ বিধান যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে কিনা সেজন্য আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অঞ্চল ৫ ও ৬ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন সরকার বলেন, “বাল্যবিবাহ নিবন্ধন করা আইন অনুযায়ী অপরাধ এবং সেজন্য বিবাহ নিবন্ধকের শাস্তির বিধান রাখা হলেও উপজেলা পর্যায়ে কিছু অসাধু নিবন্ধক এখনো মূল বিবাহ রেজিস্টারে তা নিবন্ধন না করে সাব-লেজারে অন্তর্ভুক্ত করে থাকে। এই আইন ও আইনের বিধিমালা বাস্তবায়নে এটি অন্যতম একটি চ্যালেঞ্জ।”

সভায় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাধারণ আসনের ৪৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাহানা আক্তার, সংরক্ষিত আসনের ৪ নং ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর ফরহানা ইসলাম ডলি, করপোরেশনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাবৃন্দ প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এবং সংস্থাটির বাস্তবায়ন সহযোগী ‘সুরভি’ এর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাবৃন্দ এবং যুব প্রতিনিধিবর্গ সভায় অংশ নেন।