বড় বাজেটের টেলিফিল্ম বিশ্বসুন্দরী

বিনোদন

আজকের দেশ ডেস্ক : আজ দেখলাম বর্তমান সময়ের বাংলা সিনেমার খুবই আলোচিত নায়িকা পরীমনি এবং সিয়াম আহমেদ এর “বিশ্বসুন্দরী” সিনেমাটি!


বিজ্ঞাপন

সুন্দরী তো সুন্দরীই। কিন্তু বিশ্বসুন্দরী? দেহের সুন্দর? নাকি মনের? নাকি অন্য কিছু? কর্ম-ত্যাগে মানুষ কি সুন্দর হতে পারে? এতগুলো প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধানে দেখতে পারেন চয়নিকা চৌধুরী নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘বিশ্বসুন্দরী’


বিজ্ঞাপন

ট্রেলার রিলিজের পর অনেক দর্শক যখন এটাকে নাটকের তকমা দিয়েছিলেন তখন এই সিনেমা সংশ্লিষ্ট অনেকেই তাদের একহাত নিয়েছিলেন। আমিও পুরো সিনেমা দেখে মন্তব্য করার পক্ষেই ছিলাম। কিন্তু এখন পুরো সিনেমা দেখে এটাকে নাটক মনে না হলেও “বড় বাজেটের টেলিফিল্ম” মনে হয়েছে আমার!

সিনেমাটির স্টোরি কনসেপ্ট ছিলো খুব সুন্দর।মানুষের বাহ্যিক সৌন্দর্যই সব না, তার মন মানসিকতাই তার ব্যাক্তিত্বের পরিচায়ক, এমন একটা বার্তা দেয়া হয়েছে প্রথমার্ধে। আর সিনেমার দ্বিতীয়ার্ধে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে বীরাঙ্গনাদের ত্যাগকে স্বরণ করে তাদের সম্মান দেখানো হয়েছে। যেটা নিঃসন্দেহে খুব ভাল প্লট। কিন্তু সিনেমাটি মূল সমস্যা বলে মনে হয়েছে স্ক্রিপ্ট এ।

সিয়াম-পরীমনি জুটিকে বেশ ভাল লেগেছে। তবে দুজনের অভিনয় পারফরম্যান্সে আরও উন্নতির জায়গা এখনো রয়েছে। চম্পা তিনি তার জায়গায় খুবই সুন্দর পারফরম্যান্স দিয়েছেন। কিন্তু মুনিরা মিঠু আমার এখানে একেবারেই ভালো লাগেনি! এছাড়া ফজলুর রহমান বাবু কে এই ধরনের চরিত্রে আমার ভালো লাগেনি। তারা দুজনই দুর্দান্ত অভিনয়শিল্পী এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই, কিন্তু চিত্রনাট্যে তাদের চরিত্রের গাঁথুনি ছিলো খুবই নড়বড়ে। অভিনয়ের পাশাপাশি মুনিরা মিঠুর মেকআপও বাজে লেগেছে। এছাড়া আনন্দ খালেদ এবং খালেদ হোসেন সুজনের দুজনের অভিনয় ই ছিলো বিরক্তিকর!

আর সিনেমার গানগুলো তেমন শ্রুতিমধুর না হলেও গানগুলো সিনেমাটোগ্রাফি লোকেশন ছিলো খুব সুন্দর। আর এই ছবির সবচেয়ে বড় নেগেটিভ দিক হল ডিরেকশন। চয়নিকা চৌধুরী আমার পছন্দের পরিচালকদের একজন। আমি তার নির্মাণ করা অসংখ্য অসাধারণ নিকট দেখেছি। কিন্তু সিনেমায় এসে তিনি এত বাজে ডিরেকশন দেবেন তা আশা করিনি। এটা তার প্রথম ছবি হলেও তিনি প্রায় ৪০০ নাটকের পরিচালনা করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। কিন্তু তিনি সেই অভিজ্ঞতা বিন্দুমাত্র কাজে লাগাতে পারেননি।

ছবির টেকনিক্যাল দিকগুলো অতি দুর্বল হওয়ায় এটি নাটকের তকমা পেয়েছে। সিনেম্যাটোগ্রাফি, কালার কারেকশন, এডিটিং, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক সবকিছুই খাপছাড়া। কক্সবাজার, নীলগিরির মত চোখ জুড়ানো লোকেশনে শুট হলেও তাকে সিনেমার সিনেমাটোগ্রাফার প্রপার একটা সিনেম্যাটিক ফিল দিতে পারেন নি। বর্তমানে মিউজিক ভিডিও কিংবা শর্টফিল্মে এর চেয়ে ভাল ক্যামেরা ওয়ার্ক দেখা যায়।

ওভারঅল, সিনেমাটিতে খুব সুন্দর একটা স্টোরি প্লট সাথে দারুন একঝাঁক অভিনয় শিল্পী থাকা সত্ত্বেও পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী এই “বিশ্বসুন্দরী” কে একটা অসাধারণ সিনেমায় পরিনত করতে পারেন নি।