বিনোদন প্রতিবেদক : বয়স নয় গ্ল্যামার ও অভিনয়ে যিনি বয়সকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দর্শকদের মাত দিতে রেখেছেন তিনি হলেন ভার্সেটাইল অভিনেত্রী জয়া আহসান। অভিনয় দক্ষতা ও সৌন্দর্যে মুগ্ধ দুই বাংলার দর্শক মহল। আজ জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর শুভ জন্মদিন। দেখতে দেখতে জীবনে ৩৭টি বসন্ত পেরিয়ে আজ ৩৮-এ পা দিলেন তিনি।
জয়া আহসানের প্রথম সিনেমা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘ব্যাচেলর’। এটি মুক্তি পায় ২০০৪ সালে। এরপর বড় পর্দায় দীর্ঘ বিরতি দিয়ে নূরুল আলম আতিক পরিচালিত ‘ডুবসাঁতার’ ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। এরপর নাসির উদ্দীন ইউসুফ পরিচালিত ‘গেরিলা’ ছবিতে অভিনয় করে নতুন করে সবার নজর কাড়েন জয়া। এতে অভিনয়ের সুবাদে প্রথমবারের মতো পান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এছাড়া টলিউডের ‘বিসর্জন’ সিনেমাতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পেয়েছেন জয়া।
ডুবসাঁতার, ফিরে এসো বেহুলা,গেরিলা,চোরাবালি,আবর্ত,পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী,জিরো ডিগ্রি,একটি বাঙালি ভূতের গপ্পো,রাজকাহিনী,বিসর্জন,খাঁচা,পুত্র,দেবী,এক যে ছিলো রাজা, ক্রিসক্রস,কণ্ঠ এবং আহমদ ছফার কালোজয়ী উপন্যাস অবলম্বনে অলাতচক্র।
জয়া আহসান এখন পর্যন্ত ৪ বার চলচ্চিত্র পুরস্কার, ৭ বার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, ২টি ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডসহ মোট ২৮টি পুরস্কার অর্জন করেছেন।
অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজকের আসনটিও দারুণভাবে সামলেছেন জয়া আহসান। তার প্রথম প্রযোজনা ‘দেবী’। এটি মুক্তি পেয়েছিল ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর। হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন অনম বিশ্বাস।
জয়া আহসান ১৯৮৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন গোপালগঞ্জ জেলায়। তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা এ এস মাসউদ এবং মা রেহানা মাসউদ ছিলেন একজন শিক্ষক। তারা দুই বোন এক ভাই।১৪ মে ১৯৯৮ মডেল ও অভিনেতা ফয়সাল আহসানকে বিয়ে করেন।২০১১ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেফ হয়।
জয়া আহসান ২০১৩ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসব থেকে নিমন্ত্রণ পান। এই বছর তিনি অভিনয় করেন কলকাতার অরিন্দম শীল পরিচালিত আবর্ত ছায়াছবিতে। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন আবীর চ্যাটার্জি। এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পূর্বে শ্রেষ্ঠ নবীন অভিনেত্রী হিসেবে মনোনয়ন পান। একই বছর বাংলাদেশের সাফি উদ্দিন সাফি পরিচালিত রোমান্টিক ছায়াছবি পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনীতে অভিনয় করেন। এতে প্রথমবারের মত বিপরীতে অভিনয় করেন শাকিব খান। ছায়াছবিটি ঈদুল আযহায় মুক্তি পায় এবং দারুন ব্যাবসাসফল হয়।জয়া আহসানের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ব্যবসাসফল ছবি।দীর্ঘদিন সিনেমা হলে রান করেছে।স্যাটেলাইট চ্যানেলে সর্বোচ্চ টি আরপি প্রাপ্ত ছবি।তবে এই ছবির সিকুয়্যাল পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী ২ বাজে নির্মানের জন্য সমালোচিত হয়েছিলো।
উল্লেখ্যযোগ্য টেলিভিশন নাটকগুলির মধ্যে শঙ্খবাস,আমাদের ছোট নদী,কফি হাউজ,লাবণ্য প্রভা,নীড়,চৈতা পাগল,কুহক,পাঞ্জাবীওয়ালা,নো ম্যানস ল্যান্ড,আমাদের গল্প ইত্যাদি দারুন সব নাটক।
এতো সাফল্যের মাঝে মাঝে মধ্যে সমালোচনা উঠে তার কোন গড়পড়তা কাজ,এক্সপ্রেশনে দূর্বলতা বা ডায়ালগ ডেলিভারির জন্য।আবার কখনো বয়স লুকানো নিয়ে উঠে হাস্যরসের খোরাক।কিন্তু এতো বছর বয়সেও নিজের ফিটনেস যেভাবে ধরে রেখেছেন তার আগে কজন অভিনেত্রী পেরেছেন?
এই মুহুর্তে দেশের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী। যিনি তার কাজের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক খ্যাতি পেয়েছেন।