নিজস্ব প্রতিনিধি : চরের জমি হলো ‘হিডেন ডায়মন্ড’। চরের কৃষিজমিতে অধিক উৎপাদন করতে হলে প্রথমেই চরের কৃষককে বিভিন্ন ধরনের কৃষি সহায়তা, প্রশিক্ষণ, কৃষিপ্রযুক্তি প্রদানের বিকল্প নেই। কৃষি ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি চরাঞ্চলে যে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী রয়েছে, তাদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্র আকারের বিভিন্ন ধরনের খামার ও উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে সেটাও চরের অর্থনীতিতে নতুন এক প্রবাহ তৈরি করবে।
গত শনিবার দুপুরে চর মাঝাড়দিয়ার নবীনগর স্কুল মার্কেট বাইতুস সালাম জামে মসজিদ এর কাজের উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
আরএমপি পুলিশ কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক বলেছেন, চরমাঝাড়দিয়ার এলাকা কৃষিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এখানে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছিয়ে দিচ্ছেন কৃষেকরা।
কিন্তু এখানকার মূল সমস্যা হলো রাস্তাঘাট, এটি যদি সংস্কার করা হয় তাহলে এ অঞ্চলে কৃষিতে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। রাজশাহী মহানগরী ছাড়াও আরএমপি আওতাধীন সীমান্ত এলাকাগুলোতে মাদককের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এসময় তিনি চরমাঝাড়দিয়ার মানুষের পাশে থাকার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও জানান, চর মাঝাড়দিয়ারসহ রাজশাহী নগরী হতে আধুনিক সুবিধাবঞ্চিত চরবাসীর সকল ধরনের ভালো ও উন্নয়ন কাজের সাথে আমি আছি। বর্তমান সরকার গ্রামকে শহর বানানোর যে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন এবং গ্রামের মানুষকে সকল সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য যেভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীও সেসব ভালো ও উন্নয়ন কাজের সাথে থেকে জনগণের সেবা করে যাবো বলে জানান তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চর মাঝাড়দিয়ার রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের দামকুড়া থানার অন্তর্গত। এটি পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে ভারতীয় সীমান্তবর্তী চরাঞ্চল। এটি রাজশাহী নগরের দামকুড়া থানা হতে প্রায় ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে পদ্মানদীর ওপারে অবস্থিত। বর্ষার সময় নদী পার হয়ে সরাসরি যাওয়া গেলেও অন্য সময়ে নৌকাযোগে নদী পার হয়ে চর জাজিরা হয়ে আরো ৩ কিলোমিটার পায়ে হেটে চর মাঝারদিয়াড়ে যেতে হয়।
এর উত্তরে পদ্মানদী, দক্ষিণে ভারত, পূর্বে ভারত এবং পশ্চিমে ভারত। ১০ বর্গ কিলোমিটারের এই চরে মাত্র ১৩ হাজার লোকের বসবাস।
সেখানকার সকল রাস্তা কাঁচা। নেই কোনো বিদ্যুতের ব্যবস্থা। সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে তারা বিদ্যুতের চাহিদা মিটিয়ে থাকে।
সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মধ্যে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। নেই কোনো কলেজ। ফলে উচ্চ শিক্ষার জন্য রাজশাহী শহরের উপর নির্ভরশীল হতে হয় এলাকার মানুষকে।
এছাড়াও জানান যায়, ধমীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ রয়েছে ৬টি। জনগণের স্বাস্থ্য সেবার জন্য ১টি স্বাস্থ্য কেন্দ্র, চর মাজারদিয়াড় এলাকায় বসাবাসরত দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয়ের জন্য বাজার রয়েছে ১টি এবং সীমান্তবর্তী হওয়ায় একটি বিজিবি ক্যাম্প রয়েছে।
নগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক নিজে ধর্মীয় মূল্যবোধ হতে ওই অঞ্চলের জনগণের উদ্যোগে নিজের আর্থিক সহায়তা করে একটি পাঁকা মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তিনি এসব কাজের সাথে থেকেই দেশ ও সমাজ সেবায় অবদান রাখতে চান বলে জানাগেছে। এতে পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিকের মানবিক কাজে সহযোগিতা দেখে এলাকার লোকজন তার জন্য দোয়া ও শুভ কামনা জনিয়েছেন।