ডেস্ক রিপোর্ট : ভারত শাসিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ করার পর ঐ এলাকায় মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাজ্যের শীর্ষ নেতাদের গৃহবন্দী করা হয়েছে, জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং সেখান থেকে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সংযোগও বন্ধ করা হয়েছে।
অনুচ্ছেদ ৩৫এ হিসেবে পরিচিত সংবিধানের অনুচ্ছেদটি প্রথম থেকেই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ উপত্যকাটি এবং দক্ষিণপন্থী হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির বিবাদের অন্যতম কারণ।
বিজেপি বহু আগে থেকেই এই আইনটি বিলোপের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছিলো। অনেকেই মনে করেন, ভারতীয় সংবিধান কাশ্মীরকে যে বিশেষ মর্যাদা দেয় তার অন্যতম ভিত্তি এই আইন।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রচারিত ইস্তেহারে বিজেপি জানায়, আমরা সংবিধানের ৩৫এ ধারা রদ করতে দায়বদ্ধ। এই ধারায় বৈষম্য রয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরের মহিলা ও অস্থায়ী বাসিন্দাদের প্রতি। আমরা বিশ্বাস করি ৩৫এ ধারা রাজ্যের উন্নয়নের পথে একটি বাধা। আমরা রাজ্যের সমস্ত বাসিন্দাদের একটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ দিতে চাই।
এতে আরও বলা হয়েছিল, গত পাঁছ বছরে আমরা নিশ্চিত পদক্ষেপ ও সঠিক নীতির সাহায্যে প্রয়োজনীয় প্রচেষ্টা করেছি জম্মু ও কাশ্মীরে শান্তি আনতে। আমরা দায়বদ্ধ উন্নয়নের পথের বাধা সরাতে এবং রাজ্যের সমস্ত ধর্মাবলম্বী মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক সুবিধা দিতে। জনসঙ্ঘের আমল থেকেই আমরা ৩৭০ ধারা রদ করতে চেয়েছি।
তবে ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগের নির্বাচনী ইস্তেহারে এই বিষয়ে কোনও দাবি করেনি বিজেপি।
৩৫এ ধারা কী
৩৫এ ধারা ৩৭০ ধারার উপরে তৈরি। এর ফলে জম্মু ও কাশ্মীর ‘স্পেশাল স্ট্যাটাস’ পায়। এই ধারার ফলে জম্মু ও কাশ্মীর সিদ্ধান্ত নেওয়া অধিকার পায় যে কারা রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা এবং তাদের বিশেষ অধিকার দেওয়া হয়েছে সরকারি চাকরি, সম্পত্তি ক্রয়, বৃত্তি ও অন্যান্য প্রকল্পে।
জম্মু ও কাশ্মীরের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে পরিগণিত হন তারা, যারা ১৯১১ সালের আগে জন্মেছেন বা এখানে বাস করছেন অথবা ওই তারিখের পরে ১০ বছর বা তার বেশি সময় ধরে আইনত স্থাবর সম্পত্তির মালিক এবং এখানকার বাসিন্দা।
রাজ্যের যে মহিলারা রাজ্যের বাইরের কোনও বাসিন্দাকে বিয়ে করেন, তাদের সন্তানরা ওই অধিকার থেকে বঞ্চিত হন। ২০০২ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, যে মহিলারা অস্থায়ী বাসিন্দাদের বিয়ে করবেন তাঁরা তাদের অধিকার হারাবেন না।