সুমন হোসেন ঃ পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন, পিপিএম-সেবা এর নেতৃত্ত্বে এসআই (নিঃ) শরীফ এনামুল হক সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্স সহ যশোর জেলার আভিযানিক দল কর্তৃক পুলিশি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে গত মঙ্গলবার ৮ ফেব্রুয়ারি, বিকাল ২ টা ৩০ মিনিটের সময় অভিযুক্ত তুষার শেখ (৩২), পিতা-মজিবর শেখ, সাং-ঘুনশী, আসাদ মল্লিক(৩৫), পিতা-হাসমত মল্লিক, সাং-আকদিয়া, উভয় থানা-মুকসেদপুর, জেলা-গোপালগঞ্জ এবং টুটুল মোল্যা(৪৫), পিতা-আঃ কাদের মোল্যা, সাং-বৈকন্ঠপুর, থানা-শিবচর, জেলা-মাদারীপুর’দেরকে যশোর কোতয়ালী থানাধীন জনৈক সুমন হোসেন এর বাড়ী থেকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযুক্ত তুষার শেখ এর স্বীকারোক্তি মোতাবেক ছিনতাইকৃত টাকার মধ্যে ১,৯৮,৪০০ (এক লক্ষ আটানব্বই হাজার চারশত) টাকা উদ্ধার করা হয়।
বাদী মিলন কান্তি বেপারী (৪২) ধৃত অভিযুক্তদের দ্বারা প্রতারিত হলে পুলিশ সুপার, পিবিআই, যশোর বরাবরে অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগের বিষয়টি আমলে নিয়ে অনুসন্ধানকালে বাদীর আনিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।
তৎপ্রেক্ষিতে যশোর কোতয়ালী থানার মামলা নং-৩১, তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ধারা-৪১৭/৩৯২ পেনাল কোড রুজু হয় এবং পিবিআই, যশোর স্ব-উদ্যোগে মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে এসআই (নিঃ) শরীফ এনামুল হক এর উপর অর্পণ করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, অভিযুক্ত তুষার শেখ অত্র মামলার বাদী মিলন কান্তি বেপারী এর ঔষধের দোকানে ঔষধ কেনার বাহানায় পরিচিত হয়।
এরপর মিলন কান্তি বেপারী এর নিকট থেকে ঔষধ কিনে মূল্য বাবদ একটি ১০০ টাকা মুল্যমানের সৌদি রিয়াল নোট দেয়। মিলন কান্তি বেপারী উক্ত রিয়াল ভাঙ্গাতে পারবেনা জানালে অভিযুক্ত তুষার শেখ পরে ভাঙ্গিয়ে টাকা দেওয়ার কথা বলে।
মিলন কান্তি বেপারী সরল বিশ্বাসে অভিযুক্তদের দেয়া টাকা নিয়ে তার বন্ধু বিধান (৩০), পিতা-হারাধন, সাং-বর্মনপাড়া (চাঁচড়া), থানা-কোতয়ালী, জেলা-যশোরকে দিয়ে সোনালী ব্যাংক রেল রোড শাখা হতে ভাঙ্গিয়ে নেই।
গত ১০ নভেম্বর ২০২১ তারিখ সন্ধ্যায় অভিযুক্ত তুষার শেখ দোকানে আসলে মিলন কান্তি বেপারী ঔষধ বাবদ ১০০ টাকা রেখে বাকি ২০০০ (দুই হাজার)টাকা অভিযুক্ত তুষার শেখকে ফেরত দেয়।
অভিযুক্ত তুষার শেখ বাদীর নিকট থেকে টাকা নিয়ে মিলন কান্তি বেপারী জানায় তার কাছে আরও ৩৫০ টি ১০০ টাকা মুল্যমানের সৌদি রিয়াল নোট আছে সে ভেঙ্গে দিতে পারবে কি না।
বাদী সরল বিশ্বাসে অভিযুক্ত তুষার এর কথায় রাজি হলে অভিযুক্ত তুষার মামলার বাদী মিলন কান্তি বেপারী’র মোবাইল নাম্বার নেয় এবং জানায় ১১ নভেম্বর ২০২১ তারিখ সে সৌদি রিয়াল নিয়ে আসবে।
গত ১১ নভেম্বর ২০২১ তারিখ সকাল সাড়ে ১০ টার সময় এবং ১১ টার সময় উক্ত ব্যক্তি তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার ০১৯৩৪-০৯২৭৩৫ ও ০১৮৬০০১৪০২১ থেকে মিলন কান্তি বেপারী’র ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর ০১৯৬০০২৯০০৭ এ ফোন দিয়ে বাদীকে যশোর কোতয়ালী মডেল থানধীন কোর্ট মোড়ে টাকা নিয়ে আসতে বলে।
মিলন কান্তি বেপারী উক্ত ব্যক্তির কথামত একটি সাইড ব্যাগে ৭,৬০,০০০ (সাত লক্ষ ষাট হাজার) টাকা নিয়ে কোতয়ালী থানাধীন কোর্ট মোড়ে যায়। কোর্ট মোড়ে পৌছালে মিলন কান্তির সাথে অভিযুক্ত তুষার সহ আরো ২ জনসহ মোট ৩ জন ব্যক্তির সাথে দেখা হয়।
অভিযুক্তরা মিলন কান্তি বেপারী’কে কৌশলে কোর্ট মোড়স্থ মসজিদের দক্ষিন পাশের্^ একটি ফাঁকা গলিতে সৌদি রিয়াল ভাঙ্গানোর কথা বলে নিয়ে যায় এবং তাকে একটি ব্যাগ দেয়।
মিলন কান্তি বেপারী অভিযুক্তদের দেওয়া ব্যাগটি ভারী দেখে তাদের জিজ্ঞেস করে ব্যাগ ভারী কেন ? সে সময় অভিযুক্ত তুষার মিলন কান্তি বেপারী’র গলায় ধারালো ছুরি ধরে এবং টুটুল মোল্যা ও আসাদ মল্লিক দুই হাত চেপে ধরে।
একপর্যায়ে অভিযুক্তরা মিলন কান্তি বেপারী’র হাতে থাকা টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয় যায় মর্মে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করে। অভিযুক্ত তুষার শেখ এর বিরুদ্ধে সিলেট, রংপুর ও গোপালগঞ্জ জেলায় একাধিক মামলা রয়েছে।
ছিনতাইকৃত টাকা অভিযুক্ত তুষার শেখ এর বাড়িতে রয়েছে মর্মে স্বীকার করলে, ইউপি সদস্য মোঃ জাহিদ হোসেন (৪০), পিতা-মৃত আব্দুল মালেক শেখ, সাং-আগদিয়া, থানা-মুকসেদপুর, জেলা-গোপালগঞ্জ তুষার শেখ এর পিতার নিকট থেকে ১,৯৮,৪০০ (এক লক্ষ আটানব্বই হাজার চারশত) টাকা পিবিআই অফিসে এনে দিলে সাক্ষীদের সম্মুখে জব্দতালিকামূলে জব্দ করা হয়, বাকী টাকা অভিযুক্তরা খরচ করেছে মর্মে স্বীকার করে। অভিযুক্ত আসামি তুষার শেখ, আসাদ মল্লিক,
টুটুল মোল্যা’দেরকে গতকাল মঙ্গলবার ৯ ফেব্রুয়ারি, মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রে ৩য় আদালত, যশোর আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। মামলার তদন্ত অব্যহত রয়েছে।