নিজস্ব প্রতিবেদক : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে। এখন হত্যার হুকুমদাতাদেরও বিচার হবে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে শুক্রবার এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশন।
মোজাম্মেল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুকে যারা গুলি করে হত্যা করেছে আমরা তাদের বিচার করেছি। কিন্তু যারা হুকুম দিয়ে হত্যা করেছে তাদের বিচার হয় নাই।
উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিমানবন্দরে মাঝে মাঝে সোনা চোরাচালান ধরা পড়ে। কারা ধরা পড়ে? যারা পড়াশোনা না করে শুধু তারাই ধরা পড়ে। দুবাই থেকে ঢাকায় যাদের নামে পাঠায় তারা কি কোনোদিন ধরা পড়ছে, ধরা পড়ে নাই। যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যার হুকুম দিয়েছে তাদের বিচার হয়নি।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পাকিস্তানি দূতাবাস, আমেরিকান দূতাবাস সারারাত খোলা ছিল। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনি। খুনি না হলে, আত্মস্বীকৃত খুনি যারা ছিল তাদের বিদেশে পাঠিয়ে বড় বড় পদে পদায়ন করতেন না। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের যাতে বিচার না হয় এ জন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বিচারের রাস্তা বন্ধ করেছিলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, খুনি বলেই জিয়ার মন্ত্রিসভায় শাহ আজিজসহ বঙ্গবন্ধুর খুনিদের নিয়েই মন্ত্রিসভা গঠন করেছিল। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু যে সংবিধান দিয়ে গিয়েছিলেন, সে সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দ বাদ দিয়ে আবার সেই পাকিস্তানি কায়দায় ধর্মীয় রাজনীতি চালু করে। পাকিস্তানি পাসপোর্টধারী গোলাম আযমকে বাংলাদেশে এনে নাগরিকত্ব দেন। এতে পরিষ্কার বোঝা যায় সে বঙ্গবন্ধু হত্যায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আমাদের সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধারা ঈদ বোনাস ছাড়াও,বিজয় দিবসের বোনাস ও স্বাধীনতা দিবসের বোনাস পাবেন। এছাড়াও চিকিৎসার জন্য সব সরকারি হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধাদের শতভাগ ব্যয়ভার বহন করা হবে। সব মুক্তিযোদ্ধার কবর একই ডিজাইনে হবে। অন্য ধর্মাবলম্বী মুক্তিযোদ্ধার কবর কী ডিজাইন হবে তাও আমরা বলেছি।
মন্ত্রী বলেন, বিসিএস পরীক্ষায় মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ১০০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। যে সব স্থানে আমরা হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি সেসব স্থানে স্মৃতিফলক তৈরি করা হবে। যত জায়গায় বদ্ধভূমি আছে সেসব জায়গায় অন্য নকশায় স্মৃতিফলক হবে। ঢাকা শহর থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যেক সড়কের নামকরণ করা হবে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে। এ ছাড়াও আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি ঘর তৈরি করার জন্য ১৫ লাখ টাকা সরকার থেকে অনুমোদন দেয়া হবে। ইতোমধ্যে তা মন্ত্রণালয় থেকে পাস হয়ে গেছে। এ ছাড়াও ১৬ ডিসেম্বরের আগে মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে এবং আইডি কার্ড দেয়া হবে। তাদের আইডি কার্ডে লেখা থাকবে তারা কী কী সুবিধা পাবেন।
মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশনের সভাপতি গাজী মো. দেলোয়ার হোসেন সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশন সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।