নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ গত ৬ মে, শুক্রবার দুপুর আনুমানিক ১টা ৩০ মিনিটের সময় কতিপয় দুষ্কৃতিকারীরা পূর্ব শত্রুতাবশত দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে হবিগঞ্জ সদর থানাধীন সুখচর গ্রামস্থ শাহজাহান মিয়াকে আক্রমন করে এবং আরো কয়েকজনকে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে।
এ ঘটনায় এজাহার নামীয় ১৪ জন কে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ৫-৬ জন কে আসামী করে গত ৮ মে, নিহতের স্ত্রী হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি মিডিয়ার মাধ্যমে দেশব্যাপী ব্যপক আলোচনার ঝড় তুলে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আসামিদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব-৯ তার গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে।
এরই ধারাবাহিকতায় প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৯ এর একাধিক আভিযানিক দল উক্ত মামলার এজাহারনামীয় ১ নং আসামী জয়নাল মিয়া (৩২), পিতা- মৃত মরম আলী, গ্রাম- সুখচর, থানা- সদর, জেলা- হবিগঞ্জকে আনুমানিক সাড়ে ১২ টায় ঢাকা মগবাজার এলাকা হতে, ১১ মে সাড়ে ১২ টার সময় ২ নং আসামী বিলাল মিয়া (২৮), পিতা- মৃত আব্দুল কুদ্দুছ, গ্রাম- সুখচর, থানা-সদর, জেলা- হবিগঞ্জকে বুধবার ১১ মে আনুমানিক সাড়ে ১২ টার সময় ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থানা এলাকা হতে এবং ৩ নং আসামী আকছির মিয়া (৩২), পিতা- মৃত আব্দুল কুদ্দুছ, গ্রাম-সুখচর, থানা-সদর, জেলা-হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল থানা এলাকা হতে বুধবার ১১ মে, আনুমানিক ২ এা ৩০ মিনিটের সময় অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করে।
ঘটনার বিবরণ ও আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গত ৬ মে, শুক্রবার দুুপুর আনুমানিক ১টা ৩০ মিনিটের সময় পূর্ব শত্রুতাবশত এজাহারনামীয় গ্রেফতারকৃত ১, ২ ও ৩ নং আসামীগণ তাদের ১৫/১৬ জন সহযোগিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে হবিগঞ্জ সদর থানাধীন সুখচর গ্রামস্থ শাহজাহান মিয়ার বসত বাড়ীর উঠানে নিহত শাহজাহান মিয়াকে আক্রমন করে। ১ নং আসামী জয়নাল মিয়া, তার হাতে থাকা ফিকল দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করে শাহজাহান মিয়ার বুকের বাম পাশে এবং ডান কাঁধে মারাত্মক ছিদ্রযুক্ত জখম করে। ২নং আসামী বিলাল মিয়া তার হাতে থাকা ফিকল দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে শাহজাহান মিয়ার পেটে এবং বাম কাধে আঘাত করে মারাত্বক ছিদ্রযুক্ত জখম করে। ৩ নং আসামী আকছির মিয়া তার হাতে থাকা ফিকল দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করে শাহজাহান মিয়ার পেটের বাম পাশের নিম্মাংশে ছিদ্রযুক্ত জখম করে। আসামীদের আঘাতে শাহজাহান মিয়া ঘটনাস্থলেই মারা যান। এছাড়াও আরো ০৩ জন মারাত্মক রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হন। আহতদের আত্ম চিৎকারে পরিবারের সদস্য ও আশপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
ঘটনার বিবরণে গ্রেফতারকৃত প্রধান ০৩ জন আসামী আপন ভাই জয়নাল মিয়া এবং চাচাতো দুই ভাই বিলাল মিয়া ও আকছির মিয়ার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। ঘটনায় ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার ও অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-৯ এর চলমান গোয়েন্দা তৎপরতা ও অভিযান অব্যাহত থাকবে।
পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহন সহ মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
