নিজস্ব প্রতিবেদক: টাকা দিয়েই সবকিছু কেনা সম্ভব সেভাবেই বিগত বছরগুলোতে টাকা ছড়িয়ে গণপূর্ত অধিদফতরে আধিপত্য বিরাজ করছিলেন জিকে শামীম। টাকা ছিটিয়েই তিনি ‘টেন্ডার মাফিয়া’ তে পরিণত হন। বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় থাকাকালে জি কে শামীম ছিলেন ঢাকা মহানগর যুবদলের সহসম্পাদক। বিএনপি’র অনেক নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। সাবেক ছাত্রদল কর্মী সরদার মো. আলি মিন্টু (প্রকাশ্য দালাল মিন্টু) অন্যতম।
জানা যায়, গোপালগঞ্জ নিজের জন্মভূমি হওয়ার কারনে সহজেই আওয়ামী লীগের লোক বলে পরিচিতি পায় বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে।
২০১৫ সালে যুবলীগের অফিসের আশেপাশে ঘুরতে থাকেন । এক পর্যায়ে যুবলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে। রাতারাতি তিনি যুবলীগের নেতা বনে যান। নেতাকর্মীদের গোপালগঞ্জের পরিচয় দিতে থাকেন। শুরু করেন বিভিন্ন অপকর্ম।
তার অপকর্ম জানাজানি হলে যুবলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ নির্দেশে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে নিষেধ করা হয় ।
এখন আওয়ামীলীগের উপকমিটির সদস্য পরিচয় দিলেও দলীয় অফিসের দপ্তর সেল তার এই পরিচয় ভুয়া নিশ্চিত করেছেন।
চাকরি দেওয়ার কথা বলে নিরীহ মানুষকে প্রতারণার জালে ফেলে টাকা নেওয়ার কারনে আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের সামনে দুইবার লাঞ্ছিত হয়েছেন।
আরো জানা যায় ,ছাত্রজীবনে ছাত্রদলের আদর্শ গ্রহণ করলেও । তিনি বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে একেক নামে পরিচিত ,কারো কাছে যৌনকর্মীদের দালাল, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, জি কে শামীমের ঘনিষ্ঠ লোক গুলো পরিচিতি পায় ।
আবার কেউ ক্যাসিনো মিন্টু নামে জানেন। পল্টনে সাব্বির টাওয়ারে জাফরান রেস্টুরেন্ট জোরপূর্বক টাকার বিনিময়ে দখল কররেন। এছাড়াও উত্তর পিরেরবাগ
মিরপুর এলাকায় চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গনধোলাই শিকার হন। ইতালিতে থাকাকালীন কার্ড জালিয়াতি করার কারণে দেড় বছর জেল খাটেন।
সম্প্রতি সাতক্ষীরা একটি মেয়ের সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে বিবাহ করতে বাধ্য হয়।
গোপালগঞ্জ জেলা কাশিয়ানী সদর ভাটিয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় নৌকার বিপক্ষে ভোট চাইতে গিয়ে স্থানীয় পুলিশের হাতে ধরা পরে । এবং তার বাবা বর্তমানে কাশিয়ানী সদর ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি নজরুল ইসলাম সরকার ।
সূত্র জানায়, রোববার জি কে শামীমকে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। ডিবি কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে আসে। এরপর থেকে জিকে শামীম সিন্ডিকেটের অনেকে এখন গা ঢাকা দিয়েছে। আওয়ামী লীগ যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় আছে, এখানে হাইব্রিডদের অনুপ্রবেশ আশংকাজনক হারে বেড়ে গেছে।
এসব নেতার অনেকেই নানা রকম অপকর্মে লিপ্ত হয়ে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে বলে মনে করছে বলে মনে করছেন শীর্ষনেতারা। তাই বহিরাগতদের নিয়ে উদ্বেগও বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে অন্যদল থেকে এসে ঢুকে পড়া নেতাকর্মীদের তালিকা তৈরি করে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু ক্ষমতাসীন দলটি।